সম্প্রতি রাজ্যসভায় পাস হয়েছে অনলাইন গেমিং বিল (Team India)। যাতে নাম কাটা গেছে একাধিক জুয়া বা বেটিং অনলাইন গেম এবং অ্যাপের । যেগুলি যুক্ত ছিল অনলাইন টাকা লেনদেনের সঙ্গে। ঠিক এমন ই একটি অনলাইন অ্যাপ ড্রিম ইলেভেন।
যা ছিল ভারতীয় দলের স্পনসর। এশিয়া কাপের প্রাক্কালে ড্রিম ইলেভেনের নিষিদ্ধ হওয়াতে স্পনসর হারিয়েছে ভারতীয় দল। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেন্ ইন ব্লু শিবিরে চাঞ্চল্য। তবে কি এবার স্পনসর ছাড়াই মাঠে নামবে সূর্য বাহিনী।
শুধু এগুলি নয় রামি সার্কেল, উইঞ্জো এই অ্যাপগুলিও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই বিলটি গত ২০ আগস্ট লোকসভায় ধ্বনিভোটে পাশ হয় এবং পরবর্তীতে ২২ আগস্ট রাজ্যসভায়ও অনুমোদিত হয়। বিলে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যেসব অনলাইন গেমে টাকার লেনদেন জড়িত, সেগুলো পরিচালনা করলে এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং তিন বছর পর্যন্ত জেলের শাস্তি হতে পারে।
বিজ্ঞাপন বা প্রচারে জড়িতদের জন্য দুই বছরের জেল এবং ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। বারবার নিয়ম ভাঙলে শাস্তি আরও কঠোর হবে, যার মধ্যে পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল এবং উচ্চ পরিমাণ জরিমানা অন্তর্ভুক্ত। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এই ধরনের গেমের জন্য তহবিল স্থানান্তর বা সহায়তা প্রদানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
ড্রিম ইলেভেন, যিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান স্পনসর ছিলেন এবং আইপিএলের পাঞ্জাব কিংসের মতো দলের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন, এই বিলের ফলে তাদের ব্যবসায়িক মডেলে বড় ধাক্কা খেয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) ড্রিম ইলেভেনের সঙ্গে বছরে ৩৫৮ কোটি টাকার চুক্তি করেছিল, এবং মাই১১সার্কেলের সঙ্গে আইপিএলের জন্য ৬২৫ কোটি টাকার চুক্তি ছিল। এই বিল পাশ হওয়ায় এই আর্থিক সমর্থন এখন হুমকির মুখে।
সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। অনেকে মনে করছেন, এই বিল ক্রিকেটের আর্থিক কাঠামোতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বিসিসিআই সূত্রে জানা গেছে, এশিয়া কাপে ভারতীয় দলকে হয়তো স্পনসরবিহীন জার্সি পরে খেলতে হবে, যা দীর্ঘদিনের ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
এই পরিস্থিতি দলের মনোবল এবং ব্র্যান্ড মূল্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।সরকারের দাবি, এই বিলের উদ্দেশ্য যুব সমাজকে অনলাইন গেমিংয়ের আসক্তি, আর্থিক ক্ষতি এবং সম্ভাব্য অর্থ পাচার থেকে রক্ষা করা। অনলাইন বেটিং অ্যাপগুলোর প্রলোভনে পড়ে অনেকে সর্বস্ব হারিয়েছেন, এমনকি হতাশা থেকে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে।
সরকার আরও জানিয়েছে, কিছু প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে, কারণ এদের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে অর্থ সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। তবে, এই বিল ই-স্পোর্টস এবং শিক্ষামূলক গেমগুলোকে উৎসাহিত করবে, যা ভারতীয় স্টার্টআপদের জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে।
এই বিলের ফলে ভারতের গেমিং শিল্পে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় ২ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান এবং ২৫,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। এছাড়া, সরকারের জিএসটি আয়েও ২০,০০০ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে। তবে, সরকারের লক্ষ্য শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক গেমিংকে প্রাধান্য দেওয়া।
ইতিহাস গড়ার লড়াইয়ে এগিয়ে নর্থইস্ট, চোখ ধাঁধানো লড়াইয়ে কিবুর ছাত্ররা
এশিয়া কাপে ভারতীয় দলের স্পনসরবিহীন অবস্থা ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিসিসিআই এখন নতুন স্পনসর খুঁজছে, তবে এই স্বল্প সময়ে উপযুক্ত স্পনসর পাওয়া চ্যালেঞ্জিং হবে। এই পরিস্থিতি ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ আর্থিক কাঠামোর উপরও প্রশ্ন তুলেছে।