কল্যাণের গুজরাটি ঘৃণার প্রতিবাদে বিস্ফোরক শুভেন্দু

আবারও বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার শীর্ষে কল্যাণ (Suvendu)। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল গুজরাটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেন ভারতের স্বাধীনতা…

Suvendu slams kalayan

আবারও বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার শীর্ষে কল্যাণ (Suvendu)। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল গুজরাটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালিরা এগিয়ে ছিল এবং থাকবে। তিনি আরও দাবি করেছেন যে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে তাদের আটক করে নিগ্রহ করা হচ্ছে।

এছাড়াও, তিনি গুজরাটি সম্প্রদায়কে “গুজ্জু” বলে কটাক্ষ করেছেন। এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, এই ধরনের মন্তব্য শুধুমাত্র গুজরাটি সম্প্রদায়ের অপমানই নয়, বরং ইতিহাসের বিকৃতি। বাঙালি ও গুজরাটি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির নীচ প্রয়াস।

   

শুভেন্দু আরও বলেছেন গুজরাটি সম্প্রদায়কে নিয়ে এই ধরণের ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য করার অধিকার কে দিয়েছে। এই বক্তৃতার বিরোধিতা করে তিনি লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এবং গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের কাছে কল্যাণের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ করেছেন।

শুভেন্দুর প্রতিবাদ

শুভেন্দু অধিকারী তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্ট করেছেন জাতির পিতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী এবং ভারতের লৌহমানব সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের অবদান কি করে ভুলে গেলেন কল্যাণ। এই দুই মহান নেতা গুজরাটি সম্প্রদায়ের গর্ব এবং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁদের অবদান অপরিসীম। শুভেন্দু আরও বলেছেন কল্যান মূর্খের স্বর্গে বাস করছে। তিনি ইতিহাস পড়েননি বা পড়লেও ভুলে গেছেন।

তিনি বলেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি যে গুজরাটিরা স্বাধীনতা সংগ্রামে ভূমিকা রাখেনি, তা ইতিহাসের অপমান এবং গুজরাটি সম্প্রদায়ের প্রতি চরম অসম্মান।” তিনি আরও বলেন, এই ধরনের মন্তব্য বাঙালি ও গুজরাটি সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, যা ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতার বিরুদ্ধে।

শুভেন্দু লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে এই ঘটনার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের কাছে কল্যাণের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের বিষাক্ত বক্তব্য সভ্য সমাজে স্থান পেতে পারে না। এটি কেবল ঘৃণার বীজ বপন করে এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ায়।”

রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বিজেপির নেতারা এই বক্তব্যকে “ ঘৃণ্য অপরাধ” হিসেবে অভিহিত করেছেন। এক্স-এ একটি পোস্টে বলা হয়, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্য শুধু আপত্তিকর নয়, এটি একটি ঘৃণাত্মক অপরাধ। এই ধরনের বিভাজনমূলক বক্তব্য ভারতের সংস্কৃতি ও ঐক্যের পরিপন্থী।”

Advertisements

গুজরাটের স্থানীয় নেতারা এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন এবং বলেছেন যে এটি গুজরাটি সম্প্রদায়ের অবদানকে অস্বীকার করার একটি ইচ্ছাকৃত প্রয়াস। সামাজিক মাধ্যমে সাধারণ মানুষও এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকে বলছেন, এই ধরনের বক্তব্য রাজনৈতিক স্বার্থে সম্প্রদায়গত সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা।

রাজ্যসভায় অভিষেক, সংসদে দাঁড়িয়ে তামিলে শপথ নিলেন কমল হাসান

আইনি ও সংসদীয় পদক্ষেপের দাবি

শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির নেতারা কল্যাণের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এই ধরনের মন্তব্য সংসদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করে এবং সম্প্রদায়গত সম্প্রীতির জন্য হুমকি। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে এই বিষয়ে তদন্তের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের কাছে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

শুভেন্দু বলেন, “এই ধরনের বক্তব্যের জন্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা উচিত এবং তাঁর সাংসদ পদ খারিজের বিষয়ে বিবেচনা করা উচিত।” কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুজরাটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্য ভারতের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সংসদীয় মর্যাদার উপর আঘাত হেনেছে।

শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে এবং আইনি ও সংসদীয় পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। এই ঘটনা ভারতের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে দায়িত্বশীল বক্তব্যের গুরুত্ব এবং সম্প্রদায়গত ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত করেছে।