Tag Archives: Indian Ocean

জাহাজ নির্মাণে নতুন রেকর্ড স্থাপন ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর

নয়াদিল্লি, ৩১ অক্টোবর: বৃহস্পতিবার ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী (ICG) তার নৌবহর সম্প্রসারণের দিকে আরও একটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মাধ্যমে মুম্বই এবং গোয়ায় একই সাথে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে (ICG New Record)। দ্বিতীয় ফাস্ট পেট্রোল ভেসেল (FPV)-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে, পঞ্চম FPV-এর প্লেট কাটার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং দুটি এয়ার কুশন ভেহিকেল (ACV)-এর হাল স্থাপন করা হয়েছে।

ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর (ICG) এই অনুষ্ঠানগুলি মুম্বইয়ের মাজাগাঁও ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড (MDL) এবং গোয়ার চৌগুলে ইয়ার্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অনুষ্ঠানে উপকূলরক্ষী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, ইন্সপেক্টর জেনারেল হরমনপ্রীত সিং এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল সুধীর সাহনি উপস্থিত ছিলেন। সমুদ্রে নতুন জাহাজ নামানোর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

নতুন জাহাজের বৈশিষ্ট্য ICG-এর মতে, এই দ্রুত টহল জাহাজগুলি ভারতে তৈরি করা হচ্ছে। এই জাহাজগুলি সামুদ্রিক টহল, উদ্ধার অভিযান এবং আইন প্রয়োগের জন্য ব্যবহৃত হবে। প্রতিটি জাহাজ উন্নত প্রযুক্তিতে সজ্জিত থাকবে, যেমন একটি এআই-চালিত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা এবং ড্রোন সহায়তা ব্যবস্থা। এর ৬০% ভারতেই তৈরি হচ্ছে, যা দেশের আত্মনির্ভর ভারত উদ্যোগকে আরও উৎসাহিত করবে।

এয়ার কুশন যানবাহন
ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর (আইসিজি) জন্য ছয়টি নতুন এয়ার কুশন যানবাহন তৈরি করা হচ্ছে। এই উচ্চ-গতির হোভারক্রাফ্টগুলি জল, জলাভূমি বা উপকূল বরাবর যেকোনো জায়গায় কাজ করতে পারে। এই যানবাহনগুলি টহল, নজরদারি এবং উদ্ধার অভিযানকে দ্রুত এবং সহজ করে তুলবে। এই জাহাজগুলির অর্ধেকেরও বেশি ভারতে নির্মিত হচ্ছে, যার ফলে ভারতীয় উপকূলরক্ষীদের জন্য এই জাহাজগুলির পিছনের প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়াগুলি বোঝা সহজ হয়ে উঠেছে।

The Keel Laying Ceremony of 2nd and Plate Cutting Ceremony of 5th Fast Patrol Vessel #FPV under 14 FPV Project were held today at Mazagon Dock Shipbuilders Limited #MDL, #Mumbai, in presence of Deputy Director General (Technical), HQ, Coast Guard Commander (Western Seaboard). 340… pic.twitter.com/7BiNjwzsuF

— Indian Coast Guard (@IndiaCoastGuard) October 30, 2025

ify;”> 

এটা কেন বিশেষ?
এই প্রকল্পগুলি সম্পন্ন হলে, ভারত মহাসাগরে উপকূলরক্ষী বাহিনীর সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাবে। এই দেশীয়ভাবে নির্মিত জাহাজ এবং হোভারক্রাফ্ট ভারতের সামুদ্রিক নিরাপত্তা আরও জোরদার করবে। এই পদক্ষেপ কেবল নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এটি দেখায় যে ভারত এখন তার জাহাজ নির্মাণ ক্ষমতায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠছে।

ভারত মহাসাগরের তলদেশে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম গর্ত ‘সমুদ্রের ব্ল্যাক হোল’

নয়াদিল্লি, ২২ অক্টোবর: ভারত মহাসাগরের (Indian Ocean) তলদেশে অবস্থিত একটি অদ্ভুত স্থান যার নাম ইন্ডিয়ান ওশান জিওমরফিক লো (IOGL)। এটি ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিজ্ঞানীদের বিভ্রান্ত করে আসছে। এটি বিশ্বের বৃহত্তম মাধ্যাকর্ষণ গর্ত (Massive Hole), যা বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে প্রায় ৩৩০ ফুট নিচে। এখন, নতুন গবেষণা পরামর্শ দিচ্ছে যে পৃথিবীর অভ্যন্তরের গভীরে ঘটে যাওয়া কিছু এর জন্য দায়ী হতে পারে। বিজ্ঞানীরা কম্পিউটার সিমুলেশন এবং পৃথিবীর অভ্যন্তর সম্পর্কে তাদের বোধগম্যতা ব্যবহার করে সমুদ্রে কী ঘটছে এবং কেন তা তদন্ত করছেন। (Massive Hole in Indian Ocean)

জিওয়েড কী?
ভারতের দক্ষিণে ভারত মহাসাগরে, জিওয়েড নামে একটি অদ্ভুত জায়গা আছে। এটি এক ধরণের মানচিত্র যা যেকোনো স্থানে মহাকর্ষ বল দেখায়। সাধারণত, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এই মানচিত্রের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত, কিন্তু পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের তারতম্যের কারণে, কিছু এলাকা, যেমন IOGL, সমুদ্রপৃষ্ঠের নীচে রয়েছে।

এই জায়গাটা নিয়ে এত অবাক করার কী আছে?
এই জায়গাটা নিয়ে সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো সমুদ্রের তলদেশ সম্পূর্ণ স্বাভাবিক দেখায়। এখানে কোন বড় গর্ত বা আগ্নেয়গিরি নেই। এর ফলে প্রশ্ন জাগে: যদি উপরে কোনও গর্ত বা আগ্নেয়গিরি না থাকে, তাহলে মাধ্যাকর্ষণের এত অভাব কেন? উত্তর খুঁজে পেতে, বিজ্ঞানীদের উভয় দিকই সাবধানে পরীক্ষা করতে হয়েছিল।

এই রহস্যের সমাধান কি হয়েছিল?
২০২৩ সালে, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (IISc) এর বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে এই রহস্যের সমাধান করেছিলেন। তারা কম্পিউটার ব্যবহার করে ১৪ কোটি বছর ধরে পৃথিবীর আবরণের গতিবিধি অনুকরণ করেছিলেন। এর ফলে তারা মাধ্যাকর্ষণ হ্রাসের একটি নতুন কারণ আবিষ্কার করতে পেরেছিলেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক তাদের মডেল কী দেখিয়েছে।

মডেলটি কী দেখিয়েছে?
বিজ্ঞানীদের কম্পিউটার মডেলগুলি প্রকাশ করেছে যে প্রাচীন মহাসাগরীয় প্লেটের টুকরোগুলি ম্যান্টলের গভীরে ডুবে ছিল। তারপর, নিচ থেকে উত্তপ্ত, হালকা পদার্থের একটি বেলুন উপরের দিকে উঠে গেল। এই দুটি জিনিস একসাথে ভূপৃষ্ঠে আমরা যে মাধ্যাকর্ষণ সংকেত দেখতে পাই তা তৈরি করেছিল। এই গবেষণার মূল আবিষ্কার হল যে নিম্ন আবরণ থেকে উত্থিত গরম প্লাম মাধ্যাকর্ষণ শক্তির উপর একটি উচ্ছল বল প্রয়োগ করে, যার কারণে জিওয়েডটি এত উল্লেখযোগ্যভাবে বিকৃত হয়।

মাধ্যাকর্ষণ কেন হ্রাস পায়?
আফ্রিকান প্লেটের নীচে একটি বিশাল এলাকা রয়েছে যা ভারত মহাসাগরে বিস্তৃত। একে বলা হয় লার্জ লো-শিয়ার-ভেলোসিটি প্রভিন্স (LLSVP)। এই এলাকাটি কম ঘন এবং খুব উত্তপ্ত, যা ম্যান্টলে একটি বিশাল উষ্ণ অঞ্চল হিসেবে কাজ করে। টেথিস মহাসাগরের ঠান্ডা, ভারী সামুদ্রিক প্লেটটি ডুবতে শুরু করার সাথে সাথে এটি আফ্রিকার নীচে LLSVP-এর উত্তপ্ত, উত্থিত উপাদানের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

এই চাপের কারণে কী ঘটেছিল?
এই নিম্নগামী চাপের ফলে গরম পদার্থ এবং বেলুনটি উপরে উঠেছিল। এই প্লামটি ভারত মহাসাগরের দিকে উঠেছিল, যা ম্যান্টলের মধ্যে থাকা পদার্থের ওজন এবং বন্টনকে পরিবর্তন করে এবং মাধ্যাকর্ষণকে প্রভাবিত করে। এই প্লামটি ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে সরে যায়, অবশেষে জিওয়েড লো তৈরি করে। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি দেখায় যে পৃথিবীর অভ্যন্তরের গভীরে চলাচল কীভাবে গ্রহের মহাকর্ষ ক্ষেত্রের উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। গবেষণাটি জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারসে প্রকাশিত হয়েছে।

ভারত মহাসাগরে আধিপত্য বাড়িয়ে চীনের মোকাবিলায় প্রস্তুত নৌবাহিনী

ভারতীয় নৌবাহিনী (Indian Navy) ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নিজেদের কৌশলগত আধিপত্য আরও শক্তিশালী করতে আগামী এক বছরের মধ্যে দেশে নির্মিত ছয়টি অত্যাধুনিক স্টিলথ ফ্রিগেট নৌবহরে যুক্ত করতে চলেছে। এই উদ্যোগ চীনের ক্রমবর্ধমান নৌ-উপস্থিতি মোকাবিলা এবং এই গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র অঞ্চলে ভারতের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার লক্ষ্যে গৃহীত।

মুম্বইয়ের (Indian Navy) মাঝগাঁও ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড (এমডিএল) এবং কলকাতার গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স (জিআরএসই)-এর প্রকল্প ১৭এ-এর অধীনে এই ফ্রিগেটগুলো নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে মহেন্দ্রগিরি নামে একটি ফ্রিগেট ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রতীক হয়ে উঠেছে।প্রকল্প ১৭এ-এর ফ্রিগেটগুলোর মধ্যে রয়েছে ইএনএস নীলগিরি, উদয়গিরি, হিমগিরি, তরাগিরি, এবং আরও দুটি জাহাজ, যা শিবালিক-শ্রেণির ফ্রিগেটের উন্নত সংস্করণ।

এই জাহাজগুলোর (Indian Navy) ওজন ৬,৬৭০ টন, দৈর্ঘ্য ১৪৯ মিটার, সর্বোচ্চ গতি ২৮ নট, এবং এগুলো ২২৫ জন ক্রু বহন করতে সক্ষম। অত্যাধুনিক স্টিলথ প্রযুক্তি, ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল, বারাক-৮ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল, ৭৬ মিমি নৌবন্দুক, টর্পেডো, এবং অ্যান্টি-সাবমেরিন রকেট দিয়ে সজ্জিত এই ফ্রিগেটগুলো ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

ভারত মহাসাগর, (Indian Navy) যা বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের ক্রমবর্ধমান নৌ-কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভি (পিএলএএন) এই অঞ্চলে ঘাঁটি স্থাপন এবং অ্যান্টি-পাইরেসি অপারেশনের নামে নিয়মিত টহল বাড়িয়েছে।

ভারত, (Indian Navy)যিনি এই অঞ্চলের প্রধান নৌশক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, এই ফ্রিগেটগুলোর মাধ্যমে চীনের কৌশলগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। এছাড়া, পাকিস্তানের নৌবাহিনীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং সমুদ্রপথে বাণিজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও এই উদ্যোগের লক্ষ্য।ইএনএস উদয়গিরি, প্রকল্প ১৭এ-এর দ্বিতীয় ফ্রিগেট, ২০২৫-এর ১ জুলাই এমডিএল থেকে নৌবাহিনীতে হস্তান্তরিত হয়েছে।

মাত্র ৩৭ মাসে নির্মিত (Indian Navy) এই ফ্রিগেটটি ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এটি উন্নত রাডার-শোষণকারী উপকরণ এবং স্বল্প-শব্দ প্রপালশন সিস্টেম দিয়ে সজ্জিত, যা এটিকে শত্রুপক্ষের রাডারে ধরা পড়া কঠিন করে। এই ফ্রিগেটগুলো সাবমেরিন-বিরোধী যুদ্ধ, আকাশ প্রতিরক্ষা, এবং পৃষ্ঠযুদ্ধে বহুমুখী ক্ষমতা প্রদান করবে।

অন্যদিকে, (Indian Navy) রাশিয়ার সহযোগিতায় নির্মিত তুষিল-শ্রেণির ফ্রিগেট ইএনএস তামল ২০২৫-এর ১ জুলাই কালিনিনগ্রাদের ইয়ানতার শিপইয়ার্ডে কমিশন করা হয়েছে। ৩,৯০০ টন ওজনের এই ফ্রিগেটটি ভারতের পশ্চিম নৌ কমান্ডের অধীনে কারওয়ারে মোতায়েন করা হবে। এটি ভারত-রাশিয়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতার একটি উদাহরণ এবং ভারতের নৌশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

নৌবাহিনীর (Indian Navy) এই উদ্যোগ ভারতের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘আত্মনির্ভর ভারত’ নীতির প্রতিফলন। প্রকল্প ১৭এ-এর ফ্রিগেটগুলোর জন্য ৪০,০০০ কোটি টাকার চুক্তি দেশীয় শিপইয়ার্ডগুলোর মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে, যা স্থানীয় শিল্প ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়ক। নৌবাহিনী বর্তমানে ৪০টিরও বেশি জাহাজ ও সাবমেরিন নির্মাণাধীন রয়েছে, যার অধিকাংশই দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি।

ভারত মহাসাগরে (Indian Navy) নৌ-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কোয়াড জোটের মাধ্যমে কাজ করছে। এই ফ্রিগেটগুলো ভারতের নৌবাহিনীকে এই অঞ্চলে আরও কার্যকরভাবে ভূমিকা পালনের সুযোগ দেবে।

১০ মিনিটেই বাড়ি পৌঁছাবে Jio-র ফোন! মাত্র ৭৯৯ টাকায় Swiggy Instamart থেকে কিনুন

সামাজিক মাধ্যমে (Indian Navy) এই খবরে উৎসাহ প্রকাশ করে একজন নেটিজেন লিখেছেন, “ভারতীয় নৌবাহিনীর এই পদক্ষেপ ভারতকে সমুদ্রে অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে পরিণত করবে।”এই ফ্রিগেটগুলোর যুক্তি ভারতের নৌশক্তি এবং আঞ্চলিক প্রভাবকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। ভারত মহাসাগরে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার পাশাপাশি এটি ভারতের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

প্রথমবারের মতো ভারতে ইউরোপীয় নৌসেনার জাহাজ

Joint Exercise: স্প্যানিশ এবং ইতালীয় নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ, ESPS Reina Sofia এবং ITS Antonio Marceglia, ২৬ মে থেকে ১ জুন ২০২৫ পর্যন্ত মুম্বাই সফরে আসছে। এই জাহাজগুলি ইউরোপীয় ইউনিয়ন নৌবাহিনীর (EUNAVFOR) অধীনে কাজ করছে। এই প্রথমবারের মতো EUNAVFOR জাহাজ ভারতে এসেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েনের মধ্যে আলোচনার পর এই সফর করা হয়েছে। উভয় নেতা আন্তর্জাতিক শান্তি এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তার জন্য একসাথে কাজ করার বিষয়ে কথা বলেছেন।

মুম্বইতে, EUNAVFOR কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল ডেভিড দা পোজো ভারতীয় নৌবাহিনীর একজন সিনিয়র অফিসার রিয়ার অ্যাডমিরাল বিদ্যাধর হার্কের সাথে দেখা করেছেন। এ সময়, উভয় কর্মকর্তা সামুদ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং যৌথ সামরিক মহড়া নিয়ে আলোচনা করেন। মুম্বইতে জাহাজগুলির যাত্রাবিরতির সময়, দুই নৌবাহিনীর মধ্যে তথ্য বিনিময় এবং টেবিল টপ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। এতে, জলদস্যুতা, চোরাচালান এবং অন্যান্য অপ্রচলিত হুমকি মোকাবিলার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

সমুদ্রে যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হবে
১ জুন জাহাজগুলি রওনা হওয়ার পর, সমুদ্রে একটি যৌথ মহড়া পরিচালিত হবে। ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ এবং বিমানও এতে অংশগ্রহণ করছে। এই মহড়ার লক্ষ্য হলো দুই নৌবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করা। এই মহড়ায় ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন নৌবাহিনীর (EUNAVFOR) অপারেশন আটলান্টার দুটি ফ্রিগেট, ইতালীয় জাহাজ আন্তোনিও মার্সেগলিয়া এবং স্প্যানিশ জাহাজ রেইনা সোফিয়া অংশগ্রহণ করবে।

উপকূলীয় সুরক্ষার সমর্থক
ভারত এবং ইইউ সমুদ্রে আইনের শাসন, চলাচলের স্বাধীনতা এবং উপকূলীয় দেশগুলির নিরাপত্তার পক্ষে। এই সফরটি সামুদ্রিক নিরাপত্তা, বাণিজ্য সুরক্ষা এবং অবৈধ মাছ ধরার মতো বিষয়গুলি মোকাবেলায় যৌথ প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

ভারতে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত হার্ভে ডেলফিন বলেন, এই মহড়া ভারত এবং ইইউর মধ্যে সহযোগিতাকে আরও ব্যাপক, কার্যকরী এবং কৌশলগত স্তরে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতির একটি উদাহরণ।

4.5 হাজার মিটার গভীর জলে সফলভাবে ডুব দিয়ে বড় আবিষ্কার ভারতের

India Deep Ocean Mission: গভীর সমুদ্রে ভারত দারুণ সাফল্য পেয়েছে। দেশের উচ্চাভিলাষী সামুদ্রিক মিশন – ডিপ ওশান মিশনের অধীনে, গবেষকরা একটি হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট অর্থাৎ জলের 4.5 হাজার মিটার গভীরে পৃষ্ঠে উপস্থিত একটি ‘গর্ত’ আবিষ্কার করেছেন। এটি ভারত মহাসাগরের পৃষ্ঠের নীচে উপস্থিত পাওয়া গেছে। এই নজিরবিহীন আবিষ্কারকে দেশের গভীর মহাসাগর মিশনে একটি মাইলফলক বলা হচ্ছে। এর অর্থ কী, চলুন জেনে নিন বিস্তারিত।

Deep Ocean মিশনের অধীনে, ভারতীয় গবেষকরা ভারত মহাসাগরে পৃষ্ঠের 4500 মিটার নীচে অবস্থিত একটি ছিদ্রযুক্ত বায়ুপথ আবিষ্কার করেছেন। এটি একটি হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট। গবেষকরা বলছেন, এই আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং ভবিষ্যতে গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা দেবে।

 

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজি (এনআইওটি) এবং ন্যাশনাল সেন্টার ফর পোলার অ্যান্ড ওশান রিসার্চ (এনসিপিওআর) এর বিজ্ঞানীরা একসাথে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো ভারত মহাসাগরে একটি সক্রিয় হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট আবিষ্কার করেছেন।

হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট কী?

হাইড্রোথার্মাল ভেন্টকে সহজভাবে বলা হয় জলের নিচে থাকা উষ্ণ প্রস্রবণ। তারা মধ্য-সমুদ্রের শৈলশিরা বরাবর গঠন করে যেখানে টেকটোনিক প্লেটগুলি আলাদা হয়ে যায়। যখন ম্যাগমা পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ স্তর, ম্যান্টেল থেকে বেরিয়ে আসে, তখন এটি একটি নতুন উপরের স্তর, ভূত্বক গঠন করে। এটি আগ্নেয়গিরির পর্বতগুলির একটি শৃঙ্খল গঠনের জন্যও দায়ী। যখন সমুদ্রের জল এই নতুন ভূত্বকের মধ্যে প্রবেশ করে, তখন তা উত্তপ্ত হয়ে ফিরে আসে। এতে দ্রবীভূত খনিজ পদার্থ রয়েছে যা বাইরের ঠান্ডা জলে এলে জমে যায়।

গভীর মহাসাগর মিশন কী? (What is Deep Ocean Mission)

ডিপ ওশান মিশন হল ভারতের উচ্চাভিলাষী সামুদ্রিক মিশন যার খরচ বলা হয় ৪ হাজার কোটি টাকা। এই মিশনের উদ্দেশ্য হল সমুদ্রে উপস্থিত নতুন খনিজগুলিকে উন্মোচন করা, সমুদ্রের অনন্য ইকোসিস্টেম অধ্যয়ন করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনে সমুদ্র কী ভূমিকা পালন করতে পারে তা বোঝার অগ্রগতি করা।
এনসিপিওআরের পরিচালক থামবান মেলোথ এই আবিষ্কারটিকে একটি মাইলফলক হিসাবে বর্ণনা করেছেন যা ভারতের 4 হাজার কোটি টাকার মিশনে একটি বড় অর্জন। 1977 সালে গ্যালাপাগোস রিফটে প্রথম হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট আবিষ্কৃত হয়েছিল। তবে ভারত মহাসাগরে এটিই ভারতের প্রথম আবিষ্কার।

মহাকাশের পর এবার সমুদ্রগর্ভে, ভারত মহাসাগরের গভীরে অভিযানে NIOT

মহাকাশের পর এবার সমুদ্রের অতলে অভিযানে ভারত (India)। ভারতীয জাতীয় সামুদ্রিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান (National Institute of Ocean Technology) বা NIOT এবং জাতীয় মেরু এবং সামুদ্রিক গবেষণা কেন্দ্র (NCPOR)-এর বিজ্ঞানীদের একটি দল সফলভাবে উচ্চ-রেজোলিউশন গভীর সাগর অনুসন্ধান এবং চিত্রগ্রহণ করেছে, যা একটি হাইড্রোথার্মাল সালফাইড ক্ষেত্রের উপর পরিচালিত হয়েছে।    

ভারতে ফিরে হুঙ্কার চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ

এই গভীর সাগর ক্ষেত্রটি ভারত মহাসাগরের (Indian Ocean) দক্ষিণাঞ্চলে, কেন্দ্রীয় এবং দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতীয় রিজে প্রায় ৪,৫০০ মিটার গভীরতায় অবস্থিত। এই গবেষণাটি সাগরের গভীরে এক অনন্য জীববৈচিত্র্য এবং ভূতাত্ত্বিক গঠন সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সংগ্রহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়। হাইড্রোথার্মাল সালফাইড ক্ষেত্রগুলি পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যময় এবং অত্যন্ত উষ্ণ পরিবেশগুলির মধ্যে একটি, যেখানে পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ তাপ থেকে সৃষ্ট গরম জল এবং রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়। এই ধরনের অঞ্চলে অদ্ভুত জীবজগতের উদ্ভব ঘটে, যা সাধারণভাবে আমাদের পরিচিত পরিবেশের বাইরে থাকে।

গবেষণার সময়, বিজ্ঞানীরা উচ্চ-রেজোলিউশন ভিডিও ক্যামেরা এবং সাইন্স ইনস্ট্রুমেন্ট ব্যবহার করে সাগরের তলদেশের গভীরতা এবং তার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য চিত্রিত করেন। এই ধরনের প্রযুক্তির মাধ্যমে গবেষকরা সাগরের গভীরে থাকা তাপীয় উদ্দীপক সালফাইড স্তম্ভ এবং তার আশপাশের জীববৈচিত্র্য দেখতে সক্ষম হন। এখানে জীবাণু, অগভীর হাইড্রোথার্মাল সিস্টেম এবং অন্যান্য বিশেষ ধরণের জীবজন্তু পাওয়া যায়, যেগুলি তাপীয় শর্তে টিকে থাকতে সক্ষম। এই সকল গবেষণার ফলাফলগুলি বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নতুন ধরনের প্রাণী এবং জীবজগতের মধ্যে সম্পর্ক এবং তাদের অস্তিত্বের টেকসই প্রকৃতি বুঝতে সাহায্য করবে।

আধুনিকীকরণ জন্য আদ্রা ডিভিশনে ট্রেন পরিষেবা নিয়ন্ত্রণ, বিজ্ঞপ্তি রেলের

গবেষণাটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে অবস্থিত অনন্য জীববৈচিত্র্য এবং ভূতাত্ত্বিক কাঠামোর দিকে আলোকপাত করেছে। এই এলাকায় আরো অনেক অজানা জীবাণু এবং প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেগুলি পৃথিবী এবং মহাসাগরের পরিবেশ সম্পর্কে আমাদের ধারণা বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন যে এই গবেষণা ভবিষ্যতে পরিবেশগত পরিবর্তন এবং পৃথিবীর জলবায়ু সম্পর্কে গভীরতর বোঝাপড়া প্রদান করবে।

এই প্রকল্পটির মাধ্যমে, ভারতীয় বিজ্ঞানীরা একধাপ এগিয়ে গেছেন আন্তর্জাতিক গভীর সাগর অনুসন্ধানে এবং এটি ভারতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি বড় অর্জন হিসেবে গণ্য হচ্ছে। NIOT এবং NCPOR-এর উদ্যোগের মাধ্যমে এ ধরনের গবেষণা ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে দাঁড় করাবে, যা ভবিষ্যতে বৈশ্বিক পর্যায়ে মহাসাগর গবেষণায় নেতৃত্ব দিতে সহায়ক হবে।

এছাড়াও, এই ধরনের গবেষণা আমাদের সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য এবং প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে, যা পরিবেশগত সংকট মোকাবিলা এবং মহাসাগরের স্বাস্থ্য রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ।