Tag Archives: Chief Justice

“দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ!” গাভাইকে জুতো ছোঁড়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া মোদীর

নয়াদিল্লি: সপ্তাহের প্রথম দিন নাটকীয় ঘটনার সাক্ষী থেকেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত (Supreme Court)। ভরা এজলাসে প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইকে (B R Gavai) লক্ষ্য করে জুতো ছুঁড়ে মারার চেষ্টা করেন রাকেশ কিশোর নামক এক আইনজীবী। “সুপ্রিম কোর্টের ওই ঘটনায় দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ” বলে তীব্র নিন্দা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)।

সমাজমাধ্যমের পোস্টে মোদী জানান, প্রধানবিচারপতি গাভাইয়ের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। এই ধরণের পরিস্থিতিতেও মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য গাভাইয়ের প্রশংসা করেছেন তিনি। এক্সে (X) তিনি লেখেন, “আমাদের সমাজে এই ধরণের নিন্দনীয় কাজের কোনও স্থান নেই। এই ধরণের পরিস্থিতির মুখে বিচারপতি গাভাই যে শান্ত মনোভাব দেখিয়েছেন তার আমি প্রশংসা করি। এটি ন্যায়বিচারের মূল্যবোধের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার এবং আমাদের সংবিধানের চেতনাকে শক্তিশালী করার বিষয়টি তুলে ধরে”।

“সনাতনের অপমান সহ্য করব না”!

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের (B R Gavai)বেঞ্চে শুনানি চলাকালীন ‘জুতো ছোঁড়ার’ চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে। ৭১ বছর বয়সী রাকেশ কিশোর নামক এক আইনজীবী মঞ্চের কাছে এসে জুতা খুলে বিচারকের দিকে ছুড়ে মারার চেষ্টা করেন।

তবে, নিরাপত্তা কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করে তাকে এজলাস থেকে থেকে বের করে আনেন, ফলে আক্রমণ এড়ানো যায়। যখন তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন আইনজীবীকে “সনাতন কা আপমান নহি সহেঙ্গে (আমরা সনাতনের প্রতি কোনও অপমান সহ্য করব না)” বলে চিৎকার করতে শোনা যায়।

ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে কংগ্রেস

কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এই ঘটনার নিন্দা করেন। সেইসঙ্গে দেশবাসীকে “গভীর বেদনা ও ক্ষোভের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে” প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের প্রতি সংহতি প্রকাশ করার আহ্বান জানান।

একটি বিবৃতিতে সোনিয়া বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে ভারতের মাননীয় প্রধান বিচারপতির উপর আক্রমণের নিন্দা করার জন্য কোনও শব্দই যথেষ্ট নয়। এটি কেবল তাঁর উপরই নয়, আমাদের সংবিধানের উপরও আক্রমণ। প্রধান বিচারপতি গাভাই অত্যন্ত দয়ালু, তবে জাতিকে গভীর বেদনা ও ক্ষোভের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁর পাশে দাঁড়াতে হবে”।B R Gavai, Supreme court, chief justice, narendra modi

সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে কি বললেন প্রধান বিচারপতি?

নয়াদিল্লি, ২০ সেপ্টেম্বর: শনিবার, দশম অল ইন্ডিয়া কনফারেন্স অফ সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (Chief Justice) অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে ভারতের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং তাদের অনন্য অবস্থান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালগুলি আদালতের মতো নয়।

এরা নির্বাহী এবং বিচার বিভাগের মধ্যে একটি অনন্য স্থান দখল করে। এই ট্রাইব্যুনালের অনেক সদস্য প্রশাসনিক পরিষেবা থেকে আসেন, আবার কেউ কেউ বিচার বিভাগ থেকে আসেন।” তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন যে, নিয়মিত কর্মশালা, সম্মেলন এবং বিচার বিভাগীয় একাডেমি কর্তৃক আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচিগুলি এই ক্ষেত্রে অমূল্য ভূমিকা পালন করতে পারে।

প্রধান বিচারপতি গাভাই তার বক্তব্যে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালগুলির কার্যকারিতা এবং তাদের স্বচ্ছতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, এই ট্রাইব্যুনালগুলি সরকারি কর্মচারীদের এবং নাগরিকদের মধ্যে বিবাদ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে একটি সেতুবন্ধনের কাজ করে। এই ট্রাইব্যুনালগুলি সাধারণ আদালতের তুলনায় দ্রুত এবং কার্যকরভাবে মামলা নিষ্পত্তি করতে সক্ষম, যা বিচারপ্রার্থীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

তবে, তিনি এও উল্লেখ করেন যে, এই ট্রাইব্যুনালের সদস্যদের প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগীয় একাডেমির ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এই একাডেমি নিয়মিত কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এই ধরনের উদ্যোগগুলি সদস্যদের আইনি জ্ঞান এবং প্রশাসনিক দক্ষতার মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে সহায়ক।

তিনি আরও বলেন, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের সদস্যদের বিচার বিভাগীয় এবং প্রশাসনিক দুই দৃষ্টিকোণ থেকে কাজ করার ক্ষমতা থাকা উচিত, যাতে তারা ন্যায়বিচার প্রদানে আরও কার্যকর হতে পারে।এই সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, যার মধ্যে ছিল প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের কার্যপ্রণালীতে সংস্কার, প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি, এবং মামলা নিষ্পত্তির গতি বাড়ানো।

প্রধান বিচারপতি জোর দিয়ে বলেন, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রমকে আরও স্বচ্ছ এবং দ্রুততর করতে পারে। তিনি ই-ফাইলিং, ভিডিও কনফারেন্সিং এবং অনলাইন শুনানির মতো প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।এছাড়াও, প্রধান বিচারপতি ট্রাইব্যুনালের সদস্যদের নৈতিকতা এবং সততার উপর জোর দেন।

তিনি বলেন, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালগুলি জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য তাদের সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, ট্রাইব্যুনালের সদস্যদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা এবং জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করা উচিত।এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের সদস্য, বিচারপতি, এবং আইনজীবীরা।

সম্মেলনটি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের ভবিষ্যৎ কার্যপ্রণালী এবং সংস্কারের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। প্রধান বিচারপতি গাভাইয়ের বক্তব্য এই সম্মেলনের মূল আকর্ষণ ছিল, যা ট্রাইব্যুনালের কার্যকারিতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নতুন দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে।

Hyundai আনছে নতুন এন্ট্রি-লেভেল ইলেকট্রিক এসইউভি, ২০২৭ সালে অভিষেক

এই সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালগুলির ভূমিকা এবং তাদের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া গেছে। প্রধান বিচারপতির বক্তব্য সকলের মধ্যে নতুন উদ্যম এবং দায়িত্ববোধ জাগিয়েছে, যা ভবিষ্যতে এই ট্রাইব্যুনালগুলির কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করবে।

‘নেপালের শান্তি ও অগ্রগতি ভারতের অঙ্গীকার’: সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন মোদীর

নয়াদিল্লি: নেপালের রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। টানা অস্থিরতা আর জনবিক্ষোভের পর অবশেষে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি শপথ নিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে। রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পাউডেল শনিবার কাঠমান্ডুর রাষ্ট্রপতি ভবনে তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করান। এভাবেই নেপালের রাজনৈতিক ইতিহাসে প্রথমবার কোনো নারী দেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন, যা একাধারে প্রতীকী ও তাৎপর্যময়।

কার্কিকে শুভেচ্ছা জানান মোদী

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খবরটি পাওয়ার পরপরই সামাজিক মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি। এক্স-এ তিনি লিখেছেন, “নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য সুশীলা কার্কিকে শুভেচ্ছা জানাই। নেপালের শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি অটল।” দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের গুরুত্ব বুঝিয়ে এই বার্তা যেন নতুন দিকনির্দেশনা তৈরি করল।

কার্কির ক্ষমতায় আসা নিছক আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং রাস্তায় নেমে আসা তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের ফসল। ‘জেন জেড’ নামে পরিচিত যুবসমাজ দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার দাবিতে যে অগ্নিগর্ভ প্রতিবাদ গড়ে তুলেছিল, তার পরিণতিতেই পদত্যাগ করেন কেপি শর্মা অলি। এরপর তরুণ নেতৃত্ব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ডিসকর্ড-এ সরাসরি ভোট আয়োজন করে কার্কির নাম প্রস্তাব করে। নেপালের রাজনীতিতে এ এক অভিনব অধ্যায়—যেখানে ডিজিটাল প্রজন্ম সরাসরি নেতা বেছে নিচ্ছে।

কার্কি দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নেপালের সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ২০২৬ সালের ৫ মার্চ নতুন নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা হয়েছে। তবে তার আগেই অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে থাকবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার বড় দায়িত্ব।

ভারত-নেপাল: অটুট সম্পর্কের নতুন বাঁক PM Modi congratulates Sushila Karki

ভারত ও নেপালের সম্পর্ক শুধু ভৌগোলিক সীমান্তে আটকে নেই; ধর্ম, সংস্কৃতি, ভাষা-সব কিছুর সেতুবন্ধন এই দুই দেশকে বহু যুগ ধরে কাছাকাছি রেখেছে। ১,৭৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের যাতায়াত প্রমাণ করে সম্পর্কের সেই গভীরতা। ২০১৪ সালের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী পাঁচবার নেপাল সফর করেছেন, অন্যদিকে নেপালের প্রধানমন্ত্রীরা দশবার ভারত সফরে গেছেন, যা প্রতিবেশী সম্পর্কের এক বিশেষ মাত্রা তৈরি করেছে।

আজ যখন সুশীলা কার্কি দায়িত্ব নিলেন, তখন নেপালবাসীর চোখে ভরসা আর প্রত্যাশার ছাপ স্পষ্ট। তিনি শুধু প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী নন, বরং এক রূপান্তরের প্রতীক, যেখানে জনতার দাবি, বিশেষত তরুণ প্রজন্মের কণ্ঠস্বর, সরাসরি রাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রস্থলে জায়গা করে নিয়েছে।

Bharat: Nepal makes history as Sushila Karki, former Chief Justice, becomes the country’s first-ever female interim Prime Minister. Sworn in after a youth-led protest movement, she is tasked with ensuring stability before the 2026 elections.

বাজি বন্ধ কেবলমাত্র ‘অভিজাত’ দিল্লির মধ্যেই সীমিত থাকতে পারে না: সুপ্রিম কোর্ট

নয়াদিল্লি: দোরগোড়ায় উৎসবের মরশুম। আলর রোশনাই-এ সেজে উঠবে শহর। দুর্গাপুজো, কালিপুজো-দীপাবলি, ছট উৎসবের আলোয় গা ভাসাবে দেশবাসী। তবে উৎসবের আনন্দে মেতে পরিবেশের কথা ভুলে গেলে চলবে না মোটেই! দীপাবলিতে শব্দবাজির বিকট আওয়াজ, আতসবাজির ধোঁয়ায় পরিবেশের পাশাপাশি অসুবিধা হয় পথ কুকুর, বিড়ালদের।

তাই উৎসবের কদিনের আনন্দ যেন ভবিষ্যতের নিরানন্দে পরিণত না হয়, সেই জন্য বারংবার বাজি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ প্রেমীরা। এদিকে সবুজ বাজির নাম করেও বাজারে দেদার বিকোয় পরিবেশ দূষণকারী আতস বাজি (firecracker)। এবার পরিবেশ দূষণের কথা মাথায় রেখে বাজি বন্ধে (firecracker) বড় ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।

দীপাবলির পর রাজধানীর আকাশ ধোঁয়াশায় ঢেকে যাওয়ায় সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন সেখানকার মানুষ। তবে এই সমস্যা শুধুমাত্র দিল্লির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় এবং বাজি বন্ধ করতে হলে সমগ্র দেশেই তা করা উচিৎ বললেন প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই। দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে বাজি বিক্রি, সংরক্ষণ, পরিবহন এবং উৎপাদন নিষিদ্ধ করা নিয়ে আবেদনের শুনানিতে এই কথা বলে সর্বোচ্চ আদালত।

এই নিরিখে কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট বা সিএকিউএমকে নোটিশ জারি করে দুই সপ্তাহের মধ্যে জবাব চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শুক্রবার আদালতের তরফে বলা হয়, কেবলমাত্র দিল্লির মানুষ কেন, দেশের সব শহরের মানুষের বিশুদ্ধ বাতাসের অধিকার রয়েছে। তাই বাজি বন্ধ (firecracker)হলে তা দেশজুড়েই কার্যকর হবে। “দিল্লির মানুষজন দেশের অভিজাতদের মধ্যে পড়ে বলেই আমরা বাজি বন্ধের পলিসি কেবলমাত্র রাজধানীর মধ্যেই সীমিত রাখতে পাড়ি না” বলে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি গাভাই।

দেশের ৫২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন বিআর গাভাই

নয়াদিল্লি: বিচারপতি ভূষণ রামকৃষ্ণ গাভাই আজ ভারতের ৫২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁকে প্রধান বিচারপতি পদে শপথবাক্য পাঠ করান। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যরা এবং শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা। সদ্য বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিচারপতি গাভাইকে শুভেচ্ছা জানান।

বিচারপতি গাভাইয়ের পেশাগত জীবন

১৯৮৫ সালে আইন পেশায় যাত্রা শুরু করেন ভূষণ গাভাই। বম্বে হাইকোর্টে দীর্ঘদিন আইনজীবী হিসেবে কাজ করার পর ২০০৩ সালে তিনি মহারাষ্ট্রে অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (Assistant Government Pleader) হিসেবে নিযুক্ত হন। ২০০৩ সালেই তিনি বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে পদোন্নতি পান।

একজন অনুপ্রেরণাদায়ক পথচলা BR Gavai Takes Oath As Chief Justice

বিচারপতি গাভাই দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি৷ দেশের ইতিহাসে তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি প্রধান বিচারপতির পদে আসীন হলেন। এর আগে ২০০৪ সালে কনিষ্ঠ বিচারপতি কেজি বালকৃষ্ণণ এই পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। বিচারপতি গাভাইয়ের এই নিয়োগ ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তির দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রশংসিত হচ্ছে।

কার্যকাল ও দায়িত্ব

প্রধান বিচারপতি গাভাইয়ের কার্যকাল হবে প্রায় ছয় মাস। তিনি ২০২৫ সালের ১৭ নভেম্বর অবসর গ্রহণ করবেন। এই স্বল্প সময়ের মধ্যেও তাঁর সামনে রয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও সামাজিক বিষয়ে রায় দেওয়ার দায়িত্ব। তাঁর নেতৃত্বে বিচারব্যবস্থায় গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ব্যক্তিগত জীবন

বিচারপতি গাভাইয়ের পিতা রামকৃষ্ণ গাভাই একজন বিশিষ্ট রাজনীতিক ছিলেন এবং অম্বেডকরাইট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিচারপতি গাভাই নিজেও পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সামাজিক ন্যায় ও সংবিধানিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী একজন বিচারপতি হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছেন।

Bharat: Justice Bhushan Ramkrishna Gavai sworn in as the 52nd Chief Justice of India. Learn about his inspiring journey, from his early legal career to becoming the second Dalit CJI, marking a milestone in Indian judicial inclusivity.

সংরক্ষণ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি (chief-justice) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা বিচারপতি সূর্যকান্ত, আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্যে বলেছেন যে, দেশে জাতিগত সংরক্ষণ ব্যবস্থা এখন ট্রেনের কামরার মতো হয়ে গেছে। যারা এই কামরায় প্রবেশ করেছে, তারা অন্যদের ঢুকতে দিতে চায় না। মহারাষ্ট্রে স্থানীয় সংস্থার নির্বাচনে অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণি (ওবিসি)-র জন্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানির সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।

মহারাষ্ট্রে স্থানীয় সংস্থার নির্বাচন সর্বশেষ ২০১৬-২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওবিসি প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষণ নিয়ে আইনি লড়াইয়ের কারণে এই নির্বাচন বিলম্বিত হয়েছে। ২০২১ সালে, সুপ্রিম কোর্ট মহারাষ্ট্র সরকারের ২৭ শতাংশ ওবিসি সংরক্ষণের একটি অধ্যাদেশ বাতিল করে।

‘রাষ্ট্রসংঘের কাছে বেশি কিছু আশা করা অবাস্তব’, বিশ্লেষণে শশী

আদালতের তিনটি শর্ত (chief-justice)

আদালত তিনটি শর্ত আরোপ করেছিল (১) রাজ্যের স্থানীয় সংস্থাগুলিতে পিছিয়ে থাকার প্রকৃতি এবং প্রভাব নিয়ে সমসাময়িক তথ্যভিত্তিক গবেষণার জন্য একটি নিবেদিত কমিশন গঠন করা, (২) কমিশনের সুপারিশের আলোকে স্থানীয় সংস্থাভিত্তিক সংরক্ষণের অনুপাত নির্দিষ্ট করা, এবং (৩) তফসিলি জাতি (এসসি), তফসিলি উপজাতি (এসটি) এবং ওবিসি-র জন্য মোট সংরক্ষণ ৫০ শতাংশের বেশি হবে না। তথ্য সংগ্রহে বিলম্ব এবং মামলার জটিলতার কারণে রাজ্যে স্থানীয় নির্বাচন এখনও অনুষ্ঠিত হয়নি।

আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং জানান

আইনজীবী (chief-justice) ইন্দিরা জয়সিং, যিনি মামলার পিটিশনারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, আদালতকে জানান যে, সীমানা নির্ধারণের সময় ওবিসি-দের চিহ্নিত করা সত্ত্বেও, মহারাষ্ট্র সরকার স্থানীয় নির্বাচনে এই তথ্য ব্যবহার করছে না। তিনি শীঘ্রই স্থানীয় সংস্থার নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে অভিযোগ করেন যে, রাজ্য সরকার হাতে-বাছা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে একতরফাভাবে স্থানীয় সংস্থাগুলি পরিচালনা করছে।

আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণন বলেন

অন্যদিকে, একই মামলায় পিটিশনারের পক্ষে উপস্থিত আইনজীবী গোপাল শঙ্করনারায়ণন আদালতকে বলেন, ওবিসি-দের মধ্যে রাজনৈতিকভাবে এবং সামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা শ্রেণিগুলিকে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে চিহ্নিত করা উচিত। এই সময় বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, “দেশে সংরক্ষণ ব্যবস্থা এখন ট্রেনের কামরার মতো হয়ে গেছে। যারা কামরায় ঢুকে পড়েছে, তারা অন্যদের ঢুকতে দিতে চায় না।

এটাই সামাজিক অন্তর্ভুক্তির নীতি। সরকারের কর্তব্য আরও বেশি শ্রেণিকে চিহ্নিত করা। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে বঞ্চিত মানুষ রয়েছে। তাদের কেন সংরক্ষণের সুবিধা পাওয়া উচিত নয়? শুধুমাত্র কয়েকটি পরিবার এবং গোষ্ঠী এই সুবিধা পাচ্ছে।” আদালত এই মামলার পরবর্তী শুনানি আজই করবে।

ট্রেনের কামরার  রূপক

উল্লেখযোগ্যভাবে, ট্রেনের কামরার এই রূপকটি এর আগে বিচারপতি বিআর গাওয়াই ব্যবহার করেছিলেন। তিনি এই মাসের শেষে প্রধান বিচারপতি (chief-justice) হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তাঁর রায়ে তিনি বলেছিলেন যে, তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতির মধ্যে উপ-শ্রেণিবিন্যাস করা সম্ভব এবং রাজ্যগুলি এই উপ-শ্রেণিবিন্যাস তৈরি করতে পারে।

তিনি বলেন, “আমি দেখতে পাচ্ছি যে, রাষ্ট্রপতির তালিকায় থাকা শ্রেণিগুলির মধ্যে যারা এই উপ-শ্রেণিবিন্যাসের বিরোধিতা করছে, তাদের মনোভাব ট্রেনের সাধারণ কামরায় থাকা একজন ব্যক্তির মতো। প্রথমে, কামরার বাইরে থাকা ব্যক্তিরা সাধারণ কামরায় ঢোকার জন্য সংগ্রাম করে। কিন্তু একবার তারা ভিতরে ঢুকে পড়লে, তারা বাইরের লোকদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য সবরকম চেষ্টা করে।”

বিচারপতির মন্তব্যের গুরুত্ব

বিচারপতি সূর্য কান্তের (chief-justice) এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন কেন্দ্র সরকার পরবর্তী জনগণনায় জাতিগত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজেপি এবং তার মিত্ররা বলেছে, এই পদক্ষেপ পিছিয়ে থাকা শ্রেণিগুলিকে চিহ্নিত করতে এবং সংরক্ষণ নীতির মাধ্যমে তাদের উন্নয়নে সহায়তা করবে। বিরোধী দলগুলি দীর্ঘদিন ধরে জাতিগত জনগণনার দাবি জানিয়ে আসছে।

বিচারপতি (chief-justice) সূর্য কান্তের মন্তব্য সংরক্ষণ ব্যবস্থার বর্তমান চ্যালেঞ্জ এবং এর অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রকৃতির উপর আলোকপাত করে। তিনি সরকারের উপর জোর দিয়েছেন যে, আরও বেশি পিছিয়ে থাকা শ্রেণিকে চিহ্নিত করে তাদের সংরক্ষণের সুবিধা দেওয়া উচিত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি মহারাষ্ট্রে স্থানীয় নির্বাচন এবং ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করতে পারে।

প্রকাশ্যে বিচারপতিদের সম্পত্তি! প্রধান বিচারপতির অ্যাকাউন্টে কত?

Supreme Court Judges Assets

নয়াদিল্লি:  ভারতের বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জনআস্থার পথে বড় পদক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের সম্পত্তির বিস্তারিত বিবরণ এবার প্রকাশ্যে আনতে শুরু করল  আদালত কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হতে চলা বিচারপতি বিভি গবাই সহ ২১ জন বিচারপতির সম্পত্তির তথ্য সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে মোট ৩৩ জন বিচারপতি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁদের সম্পত্তির হিসাব প্রকাশ পেয়েছে, তাঁদের স্থাবর ও অস্থাবর সমস্ত সম্পদের তথ্য এখন সর্বসাধারণের নাগালে। প্রকাশিত বিবরণে বিচারপতিদের বাড়ি, জমি, ব্যাঙ্কে গচ্ছিত অর্থ, ফিক্সড ডিপোজিট, বিমা, শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ, সোনা-রুপোর গয়না, গাড়ি এমনকি পারিবারিক সম্পত্তির তথ্যও রয়েছে।

প্রধান বিচারপতি খান্নার সম্পত্তি

প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নামে একটি মারুতি সুইফ্‌ট গাড়ি রয়েছে। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও স্থায়ী আমানত মিলিয়ে রয়েছে ৫৫ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। পিপিএফ অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৬ লক্ষ ৮৬ হাজার এবং জিপিএফ অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৭৭ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা রয়েছে। দিল্লিতে তাঁর নামে একটি তিন বেডরুম ও একটি চার বেডরুমের ফ্ল্যাটও রয়েছে৷

হবু প্রধান বিচারপতির সম্পত্তি Supreme Court Judges Assets

পরবর্তী প্রধান বিচারপতি বিচারপতি গবাইয়ের পৈতৃক ভিটে রয়েছে মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সেই সম্পত্তি ছাড়াও তাঁর নামে মুম্বইয়ের বান্দ্রা এবং নয়াদিল্লিতে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। অমরাবতী ও নাগপুর মিলিয়ে তিনটি কৃষিজ জমিও রয়েছে তাঁর নামে।

ব্যাঙ্কে তাঁর মোট টাকা রয়েছে ১৯ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫৮৪ টাকা। পিপিএফ অ্যাকাউন্টে ৬ লক্ষ ৫৯ হাজার ৬৯২ টাকা ও জিপিএফ অ্যাকাউন্টে ৩৫ লক্ষ ৮৬ হাজার ৭৩৬ টাকা জমা রয়েছে। এছাড়াও কিছু নগদ অর্থ তাঁর হেফাজতে রয়েছে।

স্বচ্ছতার পথে ফের একধাপ

দিল্লি হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বাসভবনে ‘নগদ কাণ্ড’ সামনে আসার পর থেকেই স্বচ্ছতা বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে উদ্যোগী হয় সুপ্রিম কোর্ট। চলতি বছরের ১ এপ্রিল ‘ফুল-কোর্ট’ (সকল বিচারপতির উপস্থিতিতে) বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বিচারপতিদের সম্পত্তির বিবরণ জনসমক্ষে আনা হবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একের পর এক বিচারপতির সম্পত্তির তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে।

এই সিদ্ধান্ত অবশ্য নতুন নয়। ১৯৯৭ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জেএস বর্মার নেতৃত্বে এক ফুল-কোর্ট বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্রত্যেক বিচারপতি তাঁদের সম্পত্তির বিবরণ প্রধান বিচারপতির কাছে জমা দেবেন। তবে তা প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক ছিল না।

২০০৯ সালে আরও একটি ফুল-কোর্ট বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বিচারপতিরা চাইলে স্বেচ্ছায় তাঁদের সম্পত্তির হিসাব সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে পারবেন। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তা’র কারণ দেখিয়ে আর কেউ তা প্রকাশ্যে আনছিলেন না।

২০১৯ সালে এক ঐতিহাসিক রায়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, বিচারপতিদের সম্পত্তির তথ্য তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য নয় এবং জনস্বার্থে তা জানার অধিকার রয়েছে নাগরিকদের।

বাকি তথ্যের অপেক্ষা

এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত ২১ জন বিচারপতির সম্পত্তির হিসাব প্রকাশিত হয়েছে। শীর্ষ আদালতে বর্তমানে দু’জন বাঙালি বিচারপতি রয়েছেন, তবে তাঁদের সম্পত্তির বিবরণ এখনও প্রকাশ্যে আসেনি।

বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, এই পদক্ষেপ বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি, ন্যায়বিচারের শীর্ষ স্তরেও স্বচ্ছতা বজায় রাখার একটি শক্তিশালী বার্তা দেশের বিচারব্যবস্থায় পাঠানো হল।

Bharat: Indian Supreme Court takes major step towards transparency, publishing asset details of 21 judges including Chief Justice Sanjiv Khanna and future CJI BV Gavai on its website. Details of property, bank accounts, investments, and more are now public.

যাদবপুরে অচলাবস্থা! হাই কোর্টে মামলা, প্রধান বিচারপতি বললেন, রাজ্যকেই ব্যবস্থা নিতে হবে

কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ছাত্র আন্দোলনের জেরে ব্যহত পঠনপাঠন৷ গত কয়েকদিন ধরে ক্যাম্পাসে অশান্তি চলছিল, যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শিঁকেয় উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দাখিল করা হয়। বুধবার সেই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম রাজ্যকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন এবং দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ করে দেন।

প্রধান বিচারপতির মন্তব্য: রাজ্যকেই পদক্ষেপ নিতে হবে
প্রধান বিচারপতি আদালতে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইন রয়েছে, আর রাজ্যেরও ক্ষমতা আছে। পুলিশ ব্যবস্থা নিক।” তিনি আরও বলেন, “এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়। রাজ্যকেই এই পরিস্থিতি সমাধান করতে হবে।”

আইনজীবী অর্ক নাগ আদালতে জানান, ছাত্র আন্দোলনের কারণে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে এবং উপাচার্য ক্যাম্পাসে যেতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে আদালত রাজ্যকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। তবে, আদালত দ্রুত শুনানির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।

ঘটনার পটভূমি: ওয়েবকুপার সভা এবং তার পরবর্তী অশান্তি
গত শনিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার বার্ষিক সভা চলাকালে ব্যাপক অশান্তি তৈরি হয়। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি ভাঙচুর হয় এবং তিনি আহত হন। এ সময় দুই বাম ছাত্র নেতা আহত হন। এর পর থেকেই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে, যার ফলে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

হাই কোর্টের পরবর্তী পদক্ষেপ
প্রধান বিচারপতি বলেন, রাজ্যকে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। যদিও দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ করা হয়েছে, তবে আগামীকাল মামলার পরবর্তী শুনানি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

এখন রাজ্য প্রশাসনকে পরিস্থিতি সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে, তা স্পষ্ট। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি আরও জটিল হলে, এর প্রভাব পুরো রাজ্যে পড়তে পারে।

২৬ হাজার চাকরি বাতিল! যোগ্য-অযোগ্য পৃথক করা সম্ভব? সুপ্রিম কোর্টকে যা বলল রাজ্য

কলকাতা: ব্যাপক বেনিয়মের অভিযোগে ২০১৬ সালের গোটা নিয়োগপ্রক্রিয়াই বাতিল করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ আদালতের সেই রায়ে অযোগ্যদের সঙ্গে অনিশ্চত হয়ে পড়ে যোগ্যদের ভবিষ্যৎও৷ মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে৷ বৃহস্পতিবার সকালে এই মামলাটি ওঠে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চে৷ সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে শুরু হয় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিলের মামলার শুনানি৷ আদালত যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করে শাস্তির বিধান করে কিনা, সেই অপেক্ষাতই প্রার্থীরা৷ (job cancellation in ssc case)

৫ হাজার বেনিয়ম job cancellation in ssc case

এদিন শুনানির শুরুতেই স্কুলে নিয়োগের ক্ষেত্রে বেনিয়মের অভিযোগ স্বীকার করে  নেয় রাজ্য। তবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যোগ্য ও অযোগ্য পৃথকীকরণ করা সম্ভব কিনা? শুনানিতে এই বিষয়টির উপর জোর দেন প্রধান বিচারপতি৷ রাজ্যের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী জানান, প্রায় ৫ হাজার বেনিয়ম হয়েছে এবং  রাজ্য ক্যাবিনেট সেগুলিতে প্রোকেক্ট করার চেষ্টাও করেছে। 

যোগ্য অযোগ্য পৃথকীকরণ প্রশ্ন job cancellation in ssc case

এর পরেই বিচারপতি জানতে চান, যোগ্য অযোগ্যদের কি আলাদা করা সম্ভব? জবাবে রাজ্যের আইনজীবী জানান, রাজ্য সরকার সেটাই করতে চেয়েছে৷ এই মামলায় সিবিআই একাধিক তথ্য জমা করেছে। এসএসসি-র আইনজীবী জয়দীপ ঘোষও জানান, পৃথকীকরণ সম্ভব। তাহলে কেন যোগ্য-অযোগ্যদের মিলিয়ে দেওয়া হল? তাহলে হাই কোর্টই বা কেন বলল যোগ্য-অযোগ্য পৃথক করা সম্ভব নয়? এসএসসি-র কাছে জানতে চান প্রধান বিচারপতি৷ 

ওএমআর শিট job cancellation in ssc case

নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে নেমে সিবিআই আধিকারিকেরা বেশ কিছু ওএমআর শিট উদ্ধার করেছিলেন। সেই সব উত্তরপত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন চাকরিচ্যুতদের আইনজীবী। তিনি আদালতকে জানান, ওএমআর শিটের বৈদ্যুতিন তথ্যের ৬৫বি এভিডেন্স আইন অনুযায়ী যাচাই করার কোনও শংসাপত্রও নেই। বৃহস্পতিবার এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, “৬৫বি নিয়ে ভুল ধারণা রয়েছে। আসল ওএমআর শিট নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। ৬৫বি করলে বোঝা সম্ভব হার্ড ডিস্ক থেকে কী কী ডাউনলোড করা হয়েছে। কীই বা আপলোড করা হয়েছিল। এর সঙ্গে প্রমাণের কী সম্পর্ক?” 

 

 West Bengal: Supreme Court hears 26,000 teacher job cancellation case amid allegations of irregularities. Chief Justice questions eligibility separation. State confirms 5,000 irregularities. Awaiting verdict.

চোপড়ায় রক্তাক্ত পরিস্থিতি, কমিশনকে ভৎর্সনা প্রধান বিচারপতির

বিরোধীদের মনোনয়ন নিয়ে কড়া বার্তা বিচারপতি মান্থার যারা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি, তাঁদের নিয়ে কড়া নির্দেশ হাইকোর্টের।

কলকাতা পুলিশকে নিরাপত্তা দিয়ে হাইকোর্টে হাজির থাকা বিরোধী প্রার্থীদের এখনই মনোনয়ন জমার জন্য গন্তব্যে পাঠানোর নির্দেশ দিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।

হাইকোর্টে আসা বসিরহাট, ক্যানিং, ভাঙড়, কাশিপুরের বিরোধী দলের প্রার্থীদের নিজ এলাকায় মনোনয়ন কেন্দ্রে পৌঁছতে কলকাতা পুলিশকে নিরাপত্তা দেওয়ার নির্দেশ।

এখনই হাইকোর্টে উপস্থিত সব প্রার্থীকে হেয়ার স্ট্রিট থানায় পৌঁছতে হবে। বাকি প্রার্থীরা এলাকার থানা আবার কোথাও এসপি অফিসে এখনই হাজির হবেন। তাদের পুলিশ নিরাপত্তা দিয়ে মনোনয়ন জমা দিতে নিয়ে যাবে।

বুধবার সকাল ৯টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত যেখানে ভোটের মনোনয়ন জমা নিয়ে গোলমাল হয়েছে, সেই সব থানার ওই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ রাখার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের।

কমিশনের আবেদনে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। কমিশনকে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, “তাহলে কি গোটা রাজ্যকে স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেব? সেটা ভাল হবে?”

নির্দেশ অমান্যের অভিযোগে বিচারপতি বলেন, রায় পছন্দ না হলে উচ্চতর আদালতে যান। নির্দেশ অমান্য করার জন্য দেওয়া হয়নি।

নজিরবিহীন, প্রধান বিচারপতির নামে নালিশ ঠুকল বার কাউন্সিল

কার্যত ফের এক নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসের সাম্প্রতিক রায় নিয়ে এবার আপত্তি জানিয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করলো রাজ্য বার কাউন্সিল।

জানা গিয়েছে, রবিবার বার কাউন্সিল প্রধান বিচারপতির কাছে সময় চিঠি দিয়েছে বৈঠকের জন্য। বার কাউন্সিল এর বক্তব্য, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সম্প্রতি ডিভিশন বেঞ্চের সম্পর্কে মন্তব্য করে যে রায় দিয়েছেন এবং প্রশাসনিক নির্দেশ জারি করেছেন তা নজিরবিহীন। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় -এর রায় বিচার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অসম্মানজনক বলেও মনে করছেন আইনজীবিদের রাজ্য সংগঠন। তাই এমন ঘটনা নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবারই তারা বৈঠকে বসার সময় চেয়ে আবেদন করেছেন প্রধান বিচারপতির কাছে।

প্রসঙ্গত, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশে ডিভিশন বেঞ্চ স্থদিতাদেশ দেওয়ায় তিনি নিজের ক্ষোভ গোপন রাখেননি।

Ex Chief Justice Ranjan Gogoi: প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস তৃণমূলের

নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: গত সপ্তাহে প্রকাশ হয়েছে দেশের শীর্ষ আদালতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের (Ex Chief Justice Ranjan Gogoi) আত্মজীবনী ‘জাস্টিস ফর জাজ, অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’। ইতিমধ্যেই সেই বইয়ের প্রমোশনে বিভিন্ন সময়ে সংবাদমাধ্যমের (news media) সঙ্গে কথা বলছেন গগৈ।

এমনই এক আলোচনা চক্রে গগৈ তৃণমূল (trinamul congress) কংগ্রেস-সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির বিরুদ্ধে অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন, এমনই অভিযোগ করল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে শুধু অভিযোগ করাই নয়, বিতর্কিত ওই মন্তব্যের জেরে সোমবার (monday) গগৈয়ের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিল তৃণমূল। একই সঙ্গে দুই তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার ও মৌসম বেনজির নূর সংসদের এপিক কমিটির কাছে গগৈয়ের বিরুদ্ধে একটি চিঠিও দিয়েছেন।

সোমবার সংসদের অধিবেশন শুরু হলে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে এই স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগটি আনা হয়। জানা গিয়েছে, গগৈয়ের এই আপত্তিকর মন্তব্যের বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে সহমত হয়েছে কংগ্রেস এবং আরও বেশ কয়েকটি বিরোধীদল। আপাতত তৃণমূল কংগ্রেস গগৈয়ের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনলেও আগামী দিনে সব বিরোধী দল একযোগে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনতে পারে এমনটাই খবর।

তবে গগৈয়ের আত্মজীবনী নিয়ে এর আগেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল বইয়ের একটি ছবি ও ক্যাপশন নিয়ে। অযোধ্যা মামলায় পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ রায় ঘোষণা করেছিল। সেই বেঞ্চের সদস্যদের একটি ছবি আছে গগৈয়ের বইয়ে। ওই ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, অযোধ্যা রায়ের পরে একটু আনন্দ। একই সঙ্গে ওই ঘটনা নিয়ে লিখতে গিয়ে গগৈ জানিয়েছেন, অযোধ্যা মামলার রায় যেদিন দিয়েছিলেন সেদিন সন্ধ্যায় তাঁরা দিল্লির এক হোটেলে গিয়ে চিনা খাবার খেয়েছিলেন এবং মদ পান করেছিলেন।

বিতর্কিত ও ঐতিহাসিক ওই রায় ঘোষণার পর প্রধান বিচারপতির এই উৎসব পালন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই বলেছেন, এত বড় একটা ঘটনার পর বিচারপতি মদ খাচ্ছেন সেটা ফলাও করে লেখা কি খুব গর্বের? এই অভিযোগের উত্তরে গগৈ পাল্টা বলেছেন, কোন উৎসব পালনের জন্য তাঁরা সেদিন হোটেলে গিয়ে নৈশভোজ করেননি। বেঞ্চের প্রত্যেক সদস্য কয়েক মাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। তাই চূড়ান্ত রায় ঘোষণার পর তাঁদের মনে হয়েছিল বুক থেকে একটা ভারি বোঝা নেমে গিয়েছে। এবার একটু বিশ্রাম নেওয়া দরকার। সে কারণেই তাঁরা হোটেলে গিয়ে খাবার খেয়েছিলেন। যারা সমালোচনা করছেন তাঁরা কি কেউ কখনও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে গিয়ে হোটেলে খাবার খান না, বলে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন গগৈ। গগৈয়ের এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে অনেকেই বলেছেন, যে পক্ষ হেরে গিয়েছে তাদের কাছে এই ঘটনাটি কেমন লাগবে সেটা কি গগৈ কখনও ভেবে দেখেছেন?

Ranjan Gogai: রামমন্দির মামলার রায় দেওয়ার পর মদ পান করেছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি

নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর (November) দেশের বহু চর্চিত রাম মন্দির বাবরি মসজিদ (Ram temple- Babri mosque) মামলার রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের (Ranjan Gogai) নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ।

অবসর নেওয়ার দিন কয়েক আগে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের সেটাই ছিল কোনও মামলার চূড়ান্ত রায় দান। সম্প্রতি নিজের কর্ম জীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে একটি বই লিখেছেন গগৈ। ‘জাস্টিস ফর দ্য জাজ’ নামে গগৈয়ের ওই আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে তাঁর কর্মজীবনের বহু না জানা তথ্য। যার মধ্যে অন্যতম রাম মন্দির বাবরি মসজিদ মামলার রায়।

২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর দেশের সবচেয়ে আলোচিত এই মামলার রায় দেওয়ার পর প্রধান বিচারপতি কী করেছিলেন তা জানলে অবাক হতে হয়। গগৈ তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন বহু আলোচিত রাম মন্দির মামলার রায় দানের পর তিনি দিল্লির একটি হোটেলে গিয়ে মদ্যপান করেছিলেন। তবে শুধু তিনি একা নন, তাঁর সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চে থাকা আরও চার বিচারপতিও সেদিন ওই হোটেলে মদ্যপান করেছিলেন।

গগৈ আত্মজীবনীতে জানিয়েছেন, ৯ সেপ্টেম্বর গুরুত্বপূর্ণ ওই মামলার রায় ঘোষণার পর সুপ্রিম কোর্টের সচিব তাঁদের এক নম্বর কোর্টের বাইরে অশোক চক্রের নিচে ফটোসেশনের আয়োজন করেছিলেন। সন্ধ্যায় তিনি ডিভিশন বেঞ্চে থাকা অপর চার বিচারপতি কে নিয়ে গিয়েছিলেন তাজ মানসিং হোটেলে। সেখানেই তাঁরা প্রথমে চাইনিজ খাবার খেয়েছিলেন। এরপর সেখানে থাকা সবথেকে দামি মদ বেছে নিয়েছিলেন পান করার জন্য। গগৈ নিজে সবচেয়ে পুরনো বোতলটি বেছেছিলেন। নিজে পান করার সঙ্গে সঙ্গে বেঞ্চের অপর বিচারপতিদেরও মদ্যপান করিয়েছিলেন তিনি। গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ওই সাংবিধানিক বেঞ্চের অপর বিচারপতিরা ছিলেন বিচারপতি এস এ বোবদে, বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি আবদুল নাজির।

উল্লেখ্য, রাম মন্দির মামলার রায় ঘোষণার পরই প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন গগৈ। তারপর শুরু হয় তাঁর নতুন পথ চলা। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তাঁকে রাজ্যসভায় মনোনীত সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করেন। যদিও গগৈয়ের এই মনোনয়ন নিয়ে দেশজুড়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি প্রবল সমালোচনা শুরু করে। বিরোধীরা দাবি করে, রাম মন্দির মামলার রায় ঘোষণার পুরস্কার হিসেবে গগৈকে রাজ্যসভায় এনেছে মোদি সরকার।

ইংরেজি ভাষা শেখা নিয়ে কী বললেন দেশের প্রধান বিচারপতি

News Desk: শনিবার দিল্লির দূষণ নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্টে (supreme court)। এদিন শুনানি চলাকালীন দেশের প্রধান বিচারপতি (chief justice) এনভি রামান্না (nv ramanna) এবং সলিসিটর (solicitor general) জেনারেল তুষার মেহতার মধ্যে হালকা মেজাজে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা হয়।

সে সময়ে ইংরেজি (english) ভাষা শেখা নিয়ে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। বর্তমান প্রধান বিচারপতি রামান্না অন্ধপ্রদেশের (andhrapradesh) বাসিন্দা। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা। স্কুলের প্রথম পাঠ। সুপ্রিম কোর্টে অর্থাৎ পেশার তাগিদে রামান্নাকে সবসময় ইংরেজিতে কথা বলতে হয়। অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলতেই তিনি অভ্যস্ত।

কিন্তু দেশের প্রধান বিচারপতির ইংরেজির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল অষ্টম শ্রেণীতে ওঠার পর। অর্থাৎ সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত তিনি ইংরেজি অক্ষর টুকুও চিনতেন না। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া শিখেছেন সম্পূর্ণ তেলুগু (telegu) মাধ্যমে।

রামান্নার বক্তব্য শেষ হতে পাল্টা বক্তব্য রাখেন সলিসিটর জেনারেল। মেহতাও প্রায় একই কথা বলেন। সলিসিটর জেনারেল বলেন, সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত তিনি কখনও ইংরেজি পড়েননি। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা পুরোটাই করেছিলেন গুজরাতি (gujrati) ভাষায়। অষ্টম শ্রেণীতে ওঠার পরই তিনি প্রথম ইংরেজি চর্চা শুরু করেন।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, তিনি আদৌ সুবক্তা নন। কারণ তিনি ভাল করে ইংরেজি বলতে পারেন না। এটা তাঁর একটা খারাপ দিক। যদিও রামান্নার ইংরেজি ভাষণ যথেষ্টই সাবলীল এবং আকর্ষণীয়। প্রধান বিচারপতি এবং দেশের সলিসিটর জেনারেল দুজনেই জানিয়েছেন, তাঁরা আইন নিয়ে পড়াশোনাটা অবশ্য সম্পূর্ণ ইংরেজীতেই করেছেন।

রামান্নার বক্তব্য শেষ হতেই হেসে ওঠেন সলিসিটর জেনারেল। তিনি বলেন, এতদিন আমি জানতাম না যে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে লেখাপড়া শেখার ব্যাপারে আমার এত মিল আছে। দিল্লি দূষণ নিয়ে অত্যন্ত গুরুগম্ভীর আলোচনার মাঝে প্রধান বিচারপতি ও সলিসিটর জেনারেলের এই হালকা চালে কথাবার্তা পরিবেশকে কিছুটা হলেও হালকা করে।

লখিমপুরের ঘটনার তদন্তকে কি আপনারা ছেলেখেলা মনে করছেন, যোগী সরকারকে প্রশ্ন প্রধান বিচারপতির

নিউজ ডেস্ক: লখিমপুর খেরির ঘটনায় উত্তর প্রদেশ সরকারকে ফের তীব্র ভৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। ৩ অক্টোবর লখিমপুরে ৪ কৃষক সহ ৮ জনের মৃত্যু নিয়ে উত্তর প্রদেশ সরকারের তদন্তে শীর্ষ আদালত যে খুশি নয় সে কথা আগেই জানিয়েছে। এবার লখিমপুরের ঘটনায় রিপোর্ট জমা দিতে দেরি করায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করল সর্বোচ্চ আদালত। বুধবারের শুনানিতে শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ উত্তরপ্রদেশ সরকারকে লক্ষ্য করে বলে, “দয়া করে এবার আপনারা পা ঘষে চলার অনুভূতিটা বাদ দিন।”

৩ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরে আন্দোলনরত কৃষকদের উপর বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিস মিশ্র গাড়ি চালিয়ে দেওয়ায় ৪ কৃষক সহ ৮ জনের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় জনস্বার্থ মামলার দ্বিতীয় দিনের শুনানি ছিল বুধবার।

এদিন শুনানি শুরু হলে লখিমপুরের ঘটনার রিপোর্ট দেরিতে জমা দেওয়ার জন্য শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ উত্তরপ্রদেশ সরকারকে তীব্র ভৎসনা করে। প্রধান বিচারপতি এনভি রামান্না বলেন, “আমরা রিপোর্টের জন্য মঙ্গলবার রাত ১টা অবধি অপেক্ষা করেছি। কিন্তু কোনও রিপোর্টই জমা পড়েনি। আপনারা কি বিষয়টাকে ছেলেখেলা মনে করছেন। ” বিচারপতি হিমা কোহলি বলেন, “আমাদের মনে হচ্ছে আপনারা পা ঘষে চলছেন। দয়া করে এই মনোভাব ছাড়ুন।”

প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের আইনজীবী হরিশ সালভে বলেন, বুধবার এই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। সালভের ওই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই প্রধান বিচারপতি ফের প্রশ্ন করেন, “যদি শুনানি শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট আগে আপনারা রিপোর্ট জমা দেন, তবে আমরা ওই রিপোর্ট কীভাবে পড়ব? শুনানির অন্তত একদিন আগে রিপোর্ট জমা দেবেন, এটা তো আশা করা যায়। আমরা তো মুখ বন্ধ খামে রিপোর্ট চাইনি।” রিপোর্ট জমা দিয়ে আইনজীবী সালভে শুক্রবার শুনানির জন্য আবেদন জানান। প্রধান বিচারপতি অবশ্য সাফ জানিয়ে দেন, তাঁরা আজই রিপোর্ট পড়বেন। ২৬ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।

ওই দিন রাজ্য সরকারকে ফের একটি রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি রামান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। শীর্ষ আদালত তার নির্দেশে জানিয়েছে, লখিমপুরের ঘটনায় কাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, এবং কী কারণে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ওই রিপোর্টে জানাতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সমস্ত সাক্ষীদের বয়ান রেকর্ড করার নির্দেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত। একই সঙ্গে বেঞ্চ বলেছে, “এটা যেন কোনও অসমাপ্ত গল্পে পরিণত না হয় সে দিকে খেয়াল রাখবেন।”

এদিন শুনানি চলাকালীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ উত্তরপ্রদেশ সরকারের কাছে জানতে চায়, “লখিমপুরের ঘটনায় আপনারা বলেছিলেন ১৬৪ জন সাক্ষী রয়েছে। তাদের মধ্যে মাত্র ৪৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তা হলে বাকিদের সাক্ষ্য কোথায় গেল?” জবাবে আইনজীবী সালভে বলেন, “জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া এখনও চলছে। দুটি অপরাধের কারণে সমস্ত প্রধান অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রথম অপরাধ হল গাড়ির ধাক্কা দিয়ে সাধারণ মানুষকে মারা। দ্বিতীয় অপরাধ হল, গাড়িতে থাকা দুইজনকে মারধর করে হত্যা করা। ঘটনাস্থলে বিপুল ভিড় থাকায় তদন্তে কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল।” সালভের জবাবে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ পাল্টা বলে, “পুলিশ সাক্ষীদের সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ না করলে আমরা সমস্ত তথ্য জানতে পারব না। তাই এটা যেন কোনওভাবেই অসমাপ্ত গল্পে পরিণত না হয় সে দিকে সতর্ক থাকবেন।” ২৬ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন সরকারের তরফে পরবর্তী রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।