গুয়াহাটির সাই গ্রাউন্ডে সোমবার অনুষ্ঠিত এআইএফএফ অনূর্ধ্ব-১৭ এলিট লিগ (AIFF U-17 Elite League) ফাইনাল রাউন্ডের গ্রুপ ‘ডি’-র রোমাঞ্চকর ম্যাচে শেষ মুহূর্তে ঘটল নাটকীয় ঘটনা। পেনাল্টি থেকে করা গোলের সৌজন্যে ১০ জনের জামশেদপুর এফসি (Jamshedpur FC) অনূর্ধ্ব-১৭ দল ১-০ গোলে করবেট এফসিকে পরাজিত করল। এই জয়ের ফলে চার পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে ‘ইয়ং মেন অফ স্টিল’ নামে খ্যাত জামশেদপুরের তরুণ ফুটবলাররা।
সুপার কাপে হতাশাজনক সাড়া, পরিবর্তন আসছে ভারতীয় ফুটবলের ক্যালেন্ডারে!
পুরো ম্যাচে দুই দলই রক্ষণভাগকে গুরুত্ব দিয়ে খেললেও, দ্বিতীয়ার্ধের শেষ মুহূর্তে ঘটে নাটকীয় মোড়। ৯০তম মিনিটে জামশেদপুরের ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা টুডুকে করবেট এফসির গোলকিপার কুনাল ফাউল করলে রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। চাপে থাকা মুহূর্তেও শান্ত মাথায় স্পটকিক নিতে এগিয়ে আসেন লামমসাংজুয়ালা। বল জালে ঠেলে দিয়ে দলকে মহামূল্যবান তিন পয়েন্ট এনে দেন তিনি।
তবে ম্যাচটি জামশেদপুরের জন্য সহজ ছিল না। ম্যাচের ৬৭তম মিনিটে ডিফেন্ডার সৌমিক দাস দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখায় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া জামশেদপুর এরপরও রক্ষণে জমাট রইল এবং প্রতিপক্ষকে গোল করার সুযোগ দিল না।
এই জয়ে জামশেদপুর এফসি দুটি ম্যাচে চার পয়েন্ট অর্জন করল। প্রথম ম্যাচে তারা ক্লাসিক ফুটবল একাডেমির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল। একই পয়েন্ট মুথুট ফুটবল একাডেমিরও রয়েছে, তবে গোল ব্যবধানে তারা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
হায়দরাবাদের বাঁচা-মরার ম্যাচে টস জয় কামিন্সের
৭ মে হবে গ্রুপ ডি-র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ, যেখানে জামশেদপুর এফসি মুখোমুখি হবে মুথুট ফুটবল একাডেমির। এই ম্যাচে ড্র হলেই উভয় দলই কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেবে। ফলে ম্যাচটি হতে চলেছে হাইভোল্টেজ এবং স্নায়ুক্ষয়ী।
এদিকে, গ্রুপের অপর দুটি দল ক্লাসিক ফুটবল একাডেমি ও করবেট এফসি এখনও পর্যন্ত একটি করে ম্যাচ ড্র করে একটি করে পয়েন্ট অর্জন করেছে। তাদের জন্য গ্রুপ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার রাস্তা অনেকটাই কঠিন হয়ে গেল।
জামশেদপুর এফসির এই জয় তাদের চরিত্র, ধৈর্য এবং সংকটে দলগত ঐক্য প্রদর্শনের একটি নিখুঁত উদাহরণ হয়ে রইল। একজন খেলোয়াড় কম থাকা সত্ত্বেও তারা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। বিশেষ করে লামসাংজুয়ালার মতো তরুণ খেলোয়াড়ের চাপের মুহূর্তে গোল করার দক্ষতা ভবিষ্যতের জন্য আশাব্যঞ্জক।
গৌতম গম্ভীরের পর খুনের ‘হুমকির’ মুখে তারকা ভারতীয় ক্রিকেটার
টিম ম্যানেজমেন্ট এবং কোচিং স্টাফের কৌশলগত বুদ্ধিমত্তাও এই জয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে। কম জনে খেলেও দলের ডিফেন্সিভ কাঠামো ভেঙে পড়েনি এবং মধ্যমাঠে সংযোগ বজায় ছিল।
জামশেদপুর এফসি এখন তাদের পরবর্তী ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে এক পয়েন্টই তাদের কোয়ার্টার ফাইনালে নিয়ে যাবে। কিন্তু কোচ ও খেলোয়াড়রা নিশ্চিতভাবেই জয়ের লক্ষ্যে নামবে, কারণ গ্রুপ শীর্ষে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার মানসিক সুবিধা অনেক বেশি।
এই অনূর্ধ্ব-১৭ লিগ তরুণ প্রতিভাদের জন্য নিজেকে মেলে ধরার অসাধারণ মঞ্চ, এবং জামশেদপুর এফসি ইতিমধ্যেই প্রমাণ করে দিয়েছে যে তারা টেকনিক, স্কিল ও মানসিক দৃঢ়তায় অন্যদের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে।