বাংলার হয়ে শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)। অনেকেরই প্রশ্ন তাঁর সম্বন্ধে সিএবি যুগ্ম সচিব দেবব্রত দাস বলেছিলেন বাংলার প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা নেই। সেই অভিযোগ কিন্তু তিনি পড়ে তুলে নেননি। বরং তার এই অভিযোগ কে প্রকারান্তে সমর্থন করেছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী। তার প্রমাণ ভারতীয় ক্রিকেটের দলের ম্যানেজার করে দেবব্রত দাসকে ইংল্যান্ডে পাঠিয়েছিল এই ঘটনার পর।
শুধু তাই নয়, তিনি যখন বারবার বলছেন এই অভিযোগ না তুলে নিলে বাংলার হয়ে খেলবেন না, তখনও সৌরভ গাঙ্গুলী, স্নেহাশীষ গাঙ্গুলী দেবব্রত দাসের পাশেই ছিলেন। বাংলার গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলেননি। বাংলার প্রশিক্ষক অরুণ লাল তাঁকে বারবার অনুরোধ করেছিল। তখন না খেলে পরে বাংলার হয়ে আবার খেললেন। প্রশ্ন ওঠে বাংলার হয়ে আবার খেলাটা কি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল?
দেবব্রত দাস এরপরেও সিএবি যুগ্ম সচিব পদে থাকলেন এবং তা জেনেও ঋদ্ধি আবার বাংলার হয়ে খেলেন। এটাই কি প্রমাণ করে আপনার সম্বন্ধে যে অভিযোগ ছিল সেই অভিযোগ সত্য? বাংলার প্রতি আপনার দায়বদ্ধতা নেই। দেবব্রত, সৌরভ, স্নেহাশিস এ নিয়ে কোন বিবৃতি দেননি। তাই প্রশ্ন ওঠে পাপালি কি মাথা উঁচু করে বাংলার হয়ে রঞ্জি ট্রফি খেলা শেষ করলেন?
ঋদ্ধিমান সাহা বলেছিলেন, দাদি আমাকে মেসেজ করে জানিয়েছিলেন আমি যতদিন ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের সভাপতি থাকব ততদিন তুমি ভারতীয় দলে খেলবে। আর সেই বক্তব্য রাখার পরেই তো বোরিয়া মজুমদারের সঙ্গে সেই গোলমাল। এসবই সবার জানা। তাই প্রশ্ন ওঠে সৌরভ গাঙ্গুলীর সম্বন্ধে ঋদ্ধি যে কথা বলেছিলেন সেটা কি ভুল? নাকি ঋদ্ধি ঠিক, ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মহারাজ।
এটা সবারই জানা, যে বোর্ডের নিয়ম হচ্ছে দল গঠনের পর সভাপতির অনুমোদন নিতে হয়। সৌরভ গাঙ্গুলী অনুমতি নিয়ে ভারতীয় দল ঘোষণা করা হয়েছিল যাতে সুপারম্যানের নাম রাখা হয়নি। তারপরে বাংলা যখন তাঁকে কার্যত অপমান করে সরিয়ে দিল তখন ত্রিপুরা তাঁকে আপন করে নিয়েছিল সেই সঙ্গে ত্রিপুরার তরুণ ক্রিকেটাররা এবং সেই সঙ্গে ক্রিকেট কর্মকর্তারা তাঁকে রাতারাতি মেন্টর করেছিল ।পুরো দায়িত্ব দিয়েছিল। তারপর এ বছর হঠাৎ বাংলার হয়ে খেলার কথা ভাবলেন কেন? সম্মান নিয়ে ভাবা উচিৎ ছিল না ঋদ্ধি? বাস্তব বলছে অন্য কথা। আসলে বাংলা থেকে কেরিয়ার শেষ করায় আর্থিক দিক দিয়ে ঋদ্ধিমান বাংলার লাভবান হয়েছেন, এই অভিযোগ যদি কেউ তোলে তাহলে ভুল হবে না।
একজন খেলোয়াড়ের সম্মান বা ভাবমূর্তি সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে খেলার পর বা খেলার শেষ প্রান্তে। ঋদ্ধি সাহার উপর যে অন্যায় আচরণ করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া বিরুদ্ধে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে, যখন আইপিএলে ভালো পারফরম্যান্স সত্ত্বেও তখন দিনের পর দিন নানা জন নানা মত প্রকাশ করেছে এবং সৌরভ গাঙ্গুলী ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা হয়েছে। সেই ঋদ্ধি যে সব ভুলে বাংলার হয়ে কেরিয়ার শেষ করলেন কীভাবে সেই নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে।