Top 5 IPL Stars: ২০২৫ সালের আইপিএল মরসুম এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছে যখন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB) ১৮ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে তাদের প্রথম আইপিএল শিরোপা জিতেছে। ফাইনালে পাঞ্জাব কিংস (PBKS)-এর বিরুদ্ধে মাত্র ৬ রানের রোমাঞ্চকর জয়ের মাধ্যমে রজত পতিদারের নেতৃত্বে আরসিবি এই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অর্জন করে। এই জয় শুধু দলের জন্যই নয়, ভক্তদের জন্যও ছিল এক আবেগঘন মুহূর্ত। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা এবং রবীন্দ্র জাদেজার মতো কিংবদন্তিরা গত বছর টি-২০ ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ায়, এখন নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটারদের উপর ভারতীয় দলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। এই আইপিএল মরসুমে বেশ কিছু তরুণ ভারতীয় ক্রিকেটার তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে ২০২৬ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিতব্য টি-২০ বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের দাবি জোরালো করেছে। এমন পাঁচজন তরুণ ভারতীয় ক্রিকেটার, যারা বিশ্বকাপের জন্য শক্তিশালী দাবিদার হিসেবে উঠে এসেছেন।
প্রভসিমরন সিং
পাঞ্জাব কিংসের তরুণ ওপেনার প্রভসিমরন সিং এই মরসুমে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। ১৭টি ম্যাচে ৫৪৯ রান সংগ্রহ করে তিনি ১৬০.৫৩ এর উচ্চ স্ট্রাইক রেট এবং ৩২.৩২ গড়ে রান করেছেন। তার বিস্ফোরক ব্যাটিং পাঞ্জাব কিংসকে ফাইনালে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে। ভারতের টি-২০ দলের শীর্ষ ক্রমে তিনি একজন আদর্শ প্রার্থী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তার দ্রুত রান তোলার ক্ষমতা এবং চাপের মুখে ধৈর্য ধরে খেলার দক্ষতা তাকে বিশ্বকাপের জন্য একজন শক্তিশালী দাবিদার করে তুলেছে।
প্রসিধ কৃষ্ণ
গুজরাট টাইটান্সের দ্রুতগতির বোলার প্রসিধ কৃষ্ণ এই মরসুমে পার্পল ক্যাপ জিতেছেন, অর্থাৎ তিনি টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। ১৫ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন যে তিনি ভারতীয় দলের পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। তার ইকোনমি রেট ছিল ৮.২৭, এবং দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে তার চার উইকেটের পারফরম্যান্স তাকে বিশেষভাবে আলোচনায় এনেছে। যদিও গুজরাট টাইটান্স ফাইনালে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, প্রসিধের ধারাবাহিকতা এবং বড় ম্যাচে পারফরম্যান্স তাকে বিশ্বকাপ দলে একটি নিশ্চিত স্থানের দাবিদার করেছে।
নেহাল ওয়াধেরা
মাত্র ২৪ বছর বয়সে নেহাল ওয়াধেরা মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। ১৫ ম্যাচে ৩৬৯ রান সংগ্রহ করে তিনি ১৪৫.৮৫ স্ট্রাইক রেট এবং ৩০.৭৪ গড়ে রান করেছেন। চাপের মুখে ধৈর্য ধরে খেলার ক্ষমতা এবং ধারাবাহিক পারফরম্যান্স তাকে ভারতীয় মিডল অর্ডারের জন্য একজন নির্ভরযোগ্য ব্যাটার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তার ব্যাটিং শৈলী এবং চাপ সামলানোর দক্ষতা তাকে বিশ্বকাপের জন্য একজন সম্ভাবনাময় প্রার্থী করে তুলেছে।
নমন ধীর
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের নতুন তারকা নমন ধীর প্রমাণ করেছেন যে তিনি ভারতের জন্য একজন আদর্শ ফিনিশার হতে পারেন। ১২ ইনিংসে ২৫২ রান সংগ্রহ করে তিনি ১৮২.৬০ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন, এবং ডেথ ওভারে তার স্ট্রাইক রেট ছিল টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ১৯১.৪০। তার শক্তিশালী ক্যামিও ইনিংসগুলো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে বেশ কয়েকটি ম্যাচে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেছে। চাপের মুখে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা তাকে বিশ্বকাপ দলে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের দাবিদার করেছে।
জিতেশ শর্মা
আরসিবির শিরোপা জয়ে জিতেশ শর্মা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। পূর্বে পাঞ্জাব কিংসের হয়ে খেলা জিতেশ এবার আরসিবিতে যোগ দিয়ে ম্যাচ জয়ী পারফরম্যান্স দিয়েছেন। উইকেটকিপার-ব্যাটার হিসেবে তিনি সঞ্জু স্যামসনের জন্য একজন শক্তিশালী ব্যাকআপ বিকল্প। ১১ ম্যাচে ২৬১ রান সংগ্রহ করে তিনি ১৭৬.৩৫ স্ট্রাইক রেট এবং ৩৭.২৯ গড়ে রান করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ম্যাচ শেষ করার ক্ষমতা তাকে মিডল অর্ডারে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।