টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ ৫ পার্টনারশিপ

টেস্ট ক্রিকেটকে (Test Cricket ) বলা হয় তিনটি ফরম্যাটের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন। এই ফরম্যাটে বহু কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান তাদের স্কিল ও ধারাবাহিকতা দিয়ে নিজের মেধার প্রমাণ…

Top 5 Highest Partnerships in Test Cricket History

টেস্ট ক্রিকেটকে (Test Cricket ) বলা হয় তিনটি ফরম্যাটের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন। এই ফরম্যাটে বহু কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান তাদের স্কিল ও ধারাবাহিকতা দিয়ে নিজের মেধার প্রমাণ দিয়েছেন। মানসিক ও শারীরিক চাপ কাটিয়ে দীর্ঘ ইনিংস খেলার সক্ষমতাই টেস্ট ক্রিকেটের বিশেষত্ব।

টেস্ট ক্রিকেটে পার্টনারশিপ বা জুটি ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। দীর্ঘস্থায়ী পার্টনারশিপ শুধুমাত্র খেলোয়াড়দের দক্ষতাই নয়, তাদের মনোবল এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ারও পরিচয় দেয়।

   

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন অনেক পার্টনারশিপ হয়েছে যা শুধু ম্যাচের ফলাফল নয়, পুরো সিরিজের ওপর প্রভাব ফেলেছে। এই প্রেক্ষাপটে, আসুন আমরা টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে যে কোনও উইকেটে সর্বোচ্চ পাঁচটি পার্টনারশিপ নিয়ে আলোচনা করি।

৫. ডন ব্র্যাডম্যান এবং বিল পন্সফোর্ড (অস্ট্রেলিয়া) – ৪৫১ রান বনাম ইংল্যান্ড, ১৯৩৪
টেস্ট ক্রিকেটের পঞ্চম সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ হল অস্ট্রেলিয়ার ডন ব্র্যাডম্যান ও বিল পন্সফোর্ডের মধ্যে। ১৯৩৪ সালে অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম টেস্টে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওভালে দ্বিতীয় উইকেটে তারা ৪৫১ রানের জুটি গড়েন।

প্রথম ইনিংসে ব্র্যাডম্যান (২৪৪) এবং পন্সফোর্ড (২৬৬) বিশাল ইনিংস খেলেন এবং অস্ট্রেলিয়াকে ৭০১ রানে পৌঁছে দেন। জবাবে ইংল্যান্ড ৩২১ রানে গুটিয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়া তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩২৭ রান করে ইংল্যান্ডকে ৭০৮ রানের বিশাল টার্গেট দেয়। ইংল্যান্ড ১৪৫ রানে অলআউট হয়ে ম্যাচে ৫৬২ রানে পরাজিত হয়।

৪. হ্যারি ব্রুক এবং জো রুট (ইংল্যান্ড) – ৪৫৪ রান বনাম পাকিস্তান, ২০২৪
ইংল্যান্ডের হ্যারি ব্রুক ও জো রুট ২০২৪ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুলতানে প্রথম টেস্টে চতুর্থ উইকেটে ৪৫৪ রানের পার্টনারশিপ গড়ে চতুর্থ স্থান দখল করেন।

পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে ৫৫৬ রান করে। তবে ইংল্যান্ডের ব্রুক ও রুট চতুর্থ উইকেটে পাকিস্তানের শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে অসাধারণ ব্যাটিং করেন। রুট ডাবল সেঞ্চুরি করেন এবং ব্রুক ত্রিশতক পূর্ণ করেন।

৩. মার্টিন ক্রো এবং অ্যান্ড্রু জোন্স (নিউজিল্যান্ড) – ৪৬৭ রান বনাম শ্রীলঙ্কা, ১৯৯১
তৃতীয় সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ নিউজিল্যান্ডের মার্টিন ক্রো ও অ্যান্ড্রু জোন্সের মধ্যে। ১৯৯১ সালে ওয়েলিংটনে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে তৃতীয় উইকেটে তারা ৪৬৭ রানের পার্টনারশিপ গড়েন।

শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ৪৯৭ রান করেছিল, আরভিন্দ ডি সিলভা ২৬৭ রান করেন। নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৭৪ রানে গুটিয়ে যায় এবং ফলো-অন করতে বাধ্য হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে ক্রো (২৯৯) ও জোন্স (১৮৬) ম্যাচ বাঁচানোর ইনিংস খেলেন এবং ম্যাচটি ড্র হয়।

২. সনাথ জয়সুরিয়া এবং রোশান মহনামা (শ্রীলঙ্কা) – ৫৭৬ রান বনাম ভারত, ১৯৯৭
শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়সুরিয়া ও রোশান মহনামার ১৯৯৭ সালে ভারতের বিরুদ্ধে কলম্বো টেস্টে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৭৬ রানের পার্টনারশিপ ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

ভারত প্রথম ইনিংসে ৫৩৭/৮ ঘোষণা করেছিল, নভজ্যোত সিং সিধু, শচীন তেন্ডুলকর ও মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের সেঞ্চুরির সুবাদে। জবাবে শ্রীলঙ্কার জয়সুরিয়া (৩৪০) ও মহনামা (২২৫) অসাধারণ ইনিংস খেলে ৫৭৬ রানের জুটি গড়েন। শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ৯৫২/৬ করে যা টেস্ট ক্রিকেটের সর্বোচ্চ দলগত স্কোর।

১. মাহেলা জয়বর্ধনে এবং কুমার সাঙ্গাকারা (শ্রীলঙ্কা) – ৬২৪ রান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০০৬
শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান মাহেলা জয়বর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারা টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৬২৪ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ২০০৬ সালে কলম্বোতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এই বিশাল জুটি তারা তৃতীয় উইকেটে করেন।

শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ৭৫৬/৫ করে, জয়বর্ধনে ৩৭৪ ও সাঙ্গাকারা ২৮৭ রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৬৯ ও ৪৩৪ রান করে ইনিংস ব্যবধানে ১৫৩ রানে ম্যাচ হেরে যায়।

এই পার্টনারশিপগুলো টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সেরা এবং তারা বহু ম্যাচ ও সিরিজের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।