আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025) ফাইনাল ম্যাচটি ৩ জুন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আমেদাবাদের (Ahmedabad) নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে (Narendra Modi Stadium)। এই ম্যাচ ঘিরে বিসিসিআই (BCCI) এবং আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের তরফ থেকে একটি বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল—যেখানে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর (Indian Armed Force) প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন এবং জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক জঙ্গি হামলার শিকার হওয়া ২৬ জন নিরপরাধ নাগরিকের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এই হামলার জবাবে ভারতীয় সেনাবাহিনী “অপারেশন সিঁদুর” পরিচালনা করেছিল, তার সাফল্যকে কুর্নিশ জানাতে বোর্ড তিন বাহিনীর প্রধান—ভারতীয় সেনাবাহিনীর চিফ জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, নেভি চিফ অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠী এবং এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত সিংকে আইপিএল ফাইনালে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তবে সর্বশেষ সূত্র অনুযায়ী, তিন বাহিনীর কেউই এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না।
পরিবর্তিত অনুষ্ঠান পরিকল্পনা
তিন বাহিনীর প্রধানদের অনুপস্থিতির খবরে বিসিসিআইয়ের আগের পরিকল্পনায় কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ফাইনাল ম্যাচের আগে দেশাত্মবোধক গানে মঞ্চ মাতাবেন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী শঙ্কর মহাদেবন। পাশাপাশি, আর্মি, নেভি, এয়ার ফোর্স এবং বিএসএফ ব্যান্ডদের বিশেষ পারফরম্যান্স থাকবে স্টেডিয়ামে।
১০০০ সেনা সদস্যের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা
তিন বাহিনীর প্রধানদের অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও, বিসিসিআই প্রায় ১০০০ সেনা সদস্য ও তাঁদের পরিবারের জন্য স্টেডিয়ামে বিশেষ আসনের ব্যবস্থা করেছে, যাতে তাঁরা ফাইনাল ম্যাচটি সরাসরি উপভোগ করতে পারেন। জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানো হবে সেনাবাহিনীর বীরত্বের উপর ভিত্তি করে নির্মিত ছোট ছোট ভিডিও ও তথ্যচিত্র, যা ভারতীয় সেনার আত্মত্যাগ ও সাহসিকতার কাহিনি তুলে ধরবে।
অপারেশন সিঁদুর ও আইপিএলের বিরতি
উল্লেখযোগ্যভাবে, পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে ভারত-পাক সীমান্তে উত্তেজনা চরমে ওঠে। এরপর ভারতীয় সেনার তরফ থেকে সীমান্তপারে অপারেশন সিঁদুর চালানো হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আইপিএল ২০২৫ মরসুম এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখা হয়। পরে, উভয় দেশ একটি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করে এবং টুর্নামেন্ট ১৭ মে থেকে পুনরায় শুরু হয়।
এই বিরতির কারণে ফাইনাল ম্যাচটি পূর্ব নির্ধারিত ২৬ মে পরিবর্তে পিছিয়ে ৩ জুন নির্ধারণ করা হয়। বাকি ম্যাচগুলো ছয়টি নির্দিষ্ট ভেন্যুতে খেলা হচ্ছে।
সেনাপ্রধানদের অনুপস্থিতির কারণ অজানা
তিন বাহিনীর প্রধানরা কেন আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করলেন তা এখনো স্পষ্ট নয়। যদিও সরকারি সূত্র থেকে বিসিসিআইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তাঁরা উপস্থিত থাকতে পারবেন না, ঠিক কী কারণে তাঁরা আসতে পারছেন না, তা নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। এটি কিছুটা অস্বাভাবিক বলেই মনে করছেন অনেকেই, কারণ এমন ধরনের অনুষ্ঠানে সব বাহিনীর প্রধান একত্রে উপস্থিত থাকেন না বলেই জানা যায়।
আইপিএল ফাইনাল মানেই এক বিশাল উৎসব। এ বছরের ফাইনাল শুধুমাত্র ক্রিকেট নয়, বরং একটি দেশপ্রেমে ভরপুর মুহূর্ত হয়ে উঠতে চলেছে, যেখানে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং সাধারণ মানুষের সামনে তাঁদের বীরত্বের কাহিনি তুলে ধরতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে বিসিসিআই। যদিও বাহিনীর তিন প্রধানের অনুপস্থিতি কিছুটা দুঃখজনক, তবে তাঁদের অসাধারণ অবদানের কথা দেশের প্রতিটি নাগরিকের হৃদয়ে অম্লান থাকবে।