ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন হিসেবে ২০২৪ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল (T20 World Cup Final) হয়ে থাকবে। বার্বাডোজে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এক অবিস্মরণীয় ম্যাচে ভারতের পক্ষে ম্যাচ-জয়ী পারফরম্যান্স দেখান অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। এই জয় ভারতের জন্য ছিল ১৭ বছরের দীর্ঘ বিরতির পর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বকাপ ট্রফি জয়, যা ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
ফাইনালে ভারত ১৭৬/৭ স্কোর করে প্রথম ইনিংস শেষে। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রতিপক্ষ হিসেবে তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচে ফিরে আসে। বিশেষত হেইনরিখ ক্লাসেনের বিধ্বংসী ব্যাটিং ভারতীয় বোলারদের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। ২৪ বলে ২৬ রানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে যখন তিনি ভারতীয় স্পিনারদের বিরুদ্ধে মারাত্মকভাবে শট খেলে যাচ্ছিলেন। তখন ভারতীয় দল আশা হারাচ্ছিল।
তবে হার্দিক পান্ডিয়া ঠিক সেই সময়ে যে কৌশল নেন তা ভারতের ভাগ্য বদলে দেয়। পান্ডিয়া জানতেন যে ক্লাসেন তার স্টাম্পের বাইরে একটি বল প্রত্যাশা করবেন। তাই তিনি নিজেই পরিকল্পনা করেন একটি স্লো উইড ডেলিভারি বোল করার যাতে ক্লাসেন তার শট খেলার চেষ্টা করলেই পিচে ফাঁকাতে পড়েন।
পান্ডিয়া বলেন, “রোহিত ভাইয়ের সাথে আমরা বহুদিন ধরে খেলছি। তিনি জানেন আমার ক্রিকেট সচেতনতা কেমন এবং আমার ব্যক্তিত্ব কেমন। তাই আমি তাকে বলেছিলাম যে আমি ক্লাসেনকে একটা স্লো ওয়াইড বল দেব।” তাঁর এই কৌশল কাজ করে এবং ক্লাসেন ফাঁদে পড়েন, ফলস্বরূপ তিনি আউট হন এবং ম্যাচের দখল পরিবর্তিত হয়ে যায়।
শুধু ভারতের জন্য না, পান্ডিয়া আরও জানালেন যে, শেষ ওভারে ১৬ রান প্রয়োজন ছিল, যেখানে রক্ষণশীলতার সুযোগে ডেভিড মিলারের মতো এক শক্তিশালী ফিনিশারের বিরুদ্ধে তাকে বল করতে হয়েছিল। তিনি গাছপালার দিকে বায়ু প্রবাহ লক্ষ্য করেন এবং ঠিক করেন, মিলারকে বায়ুর বিপরীতে খেলতে বাধ্য করবেন। সেখানেই মুম্বাইয়ের সুর্যকুমার যাদব অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়ে ম্যাচ শেষ করেন এবং ভারতকে বিশ্বকাপের শিরোপা এনে দেন।
পান্ডিয়া বলেন, “এটা ছিল একটা স্বপ্নের মতো, আমার কাঁধ থেকে অনেকটা চাপ নামলো। আমি দেশের জন্য কিছু করতে পেরেছি, সেটা ছিল সত্যিই এক গর্বের বিষয়।”
রোহিত শর্মা ও তার দলের জন্যও এটি ছিল এক বড় অর্জন যেখানে দীর্ঘদিন পর ভারত আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করতে পেরেছে। ভারতে ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা এবং প্রত্যাশা কখনও কমে না আর এই জয় সেই প্রত্যাশার প্রতিদানও দিল।