হুগলির মানকুণ্ডুতে ফের ধরা দিলো এক অন্যরকম পরিবেশ। পাখির ডাকে নয়, এবার ফুটবলের বাঁশির আওয়াজে ঘুম ভাঙবে ক্রীড়াপ্রেমীদের। শুরু হল বহু প্রতীক্ষিত রাজ্য আন্ত জেলা স্কুল ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ সুপ্রীম কাপ ২০২৫ (Supreme Cup 2025)। সুপ্রীম নলেজ ফাউন্ডেশন এবং আইএফএ’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতা শুধু আর এক টুর্নামেন্ট নয়। এটি বাংলার ফুটবলের (Bengal Football) শিকড়ে ফেরার এক চেষ্টা এবং এক নতুন শুরু।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন হয় সুপ্রীম নলেজ ফাউন্ডেশন ক্যাম্পাসের স্বামী বিবেকানন্দ অডিটরিয়ামে। আয়োজনে ছিল রাজকীয় আভিজাত্য, তারকাময় উপস্থিতি এবং প্রাণবন্ত আবেগ। উন্মোচিত হয় টুর্নামেন্টের ট্রফি ও অফিসিয়াল টি-শার্ট, যার মধ্য দিয়েই ফুটবল প্রেমীদের চোখে যেন নতুন স্বপ্নের প্রদীপ জ্বলে ওঠে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চন্দননগর পুরসভার মেয়র রাম চক্রবর্তী, ডেপুটি মেয়র মুন্না আগরওয়াল, মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) শুভেন্দু মুখোপাধ্যায়, মেয়র পারিষদ (ক্রীড়া) অনিমেষ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন ফুটবল মহারথী জামশেদ নাসিরি ও আলভিটো ডি কুনহা। এছাড়াও ছিলেন সুপ্রীম নলেজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বিজয় গুহ মল্লিক, ভাইস চেয়ারম্যান ও ডিরেক্টর ড. সৌম্য গুহ মল্লিক, ভাইস প্রেসিডেন্ট দেবসী গুহ মল্লিক। আইএফএর সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, সচিব অনির্বাণ দত্ত, সহ-সচিব রাকেশ ঝাঁ এবং এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি সুফল রঞ্জন গিরি এই উদ্যোগে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন।
এবারের টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে সারা রাজ্যের ২৪টি জেলার ১৯২টি স্কুল। এই বিশাল অংশগ্রহণই প্রমাণ করে দেয়, বাংলার ঘরে ঘরে ফুটবলের আবেগ আজও অটুট। প্রতিটি স্কুলের ছোট ছোট খেলোয়াড়রা নিজের জেলার সম্মান রক্ষায় মাঠে নামবে। সেখান থেকেই উঠে আসবে আগামী দিনের মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল কিংবা ভারতের জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ তারকা।
এই উদ্যোগে ফের উঠে এসেছে ‘আন্ডার হাইট ফুটবল’র কথা। একসময় বাংলার অলিগলিতে চার ফুট দশ ইঞ্চির মাঠে ফুটবলের সেই খেলা ছিল ছোটদের কাছে এক জীবন। সেই খেলাই একদিন তৈরি করেছিল বহু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের খেলোয়াড়। বহুদিন পর আইএফএ সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে, যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, এই টুর্নামেন্ট এক সামাজিক বার্তাবাহকও বটে। খেলাধুলার মাধ্যমে শৃঙ্খলা, নেতৃত্ব, ও দলগত চেতনা গড়ে ওঠে ছোটদের মধ্যে। সুপ্রীম কাপ সেই বার্তাই পৌঁছে দিচ্ছে প্রতিটি জেলার প্রতিটি কোণে। ফুটবল কেবল খেলা নয়, এটি এক শিক্ষা, এক স্বপ্নপূরণের পথ।