শ্রীভূমির জয়ে আইডব্লিউল থেকে বিদায় নিল হপস

ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগ (IWL 2025) ২০২৪-২৫ মরশুমে হপস এফসি-র জন্য একটি হতাশাজনক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। শনিবার, আম্বেদকর স্টেডিয়ামে শ্রীভূমি এফসি-র (Sribhumi FC) কাছে ০-৩ গোলে…

Sribhumi FC Relegates HOPS from IWL 2025 with 3-0 Win

ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগ (IWL 2025) ২০২৪-২৫ মরশুমে হপস এফসি-র জন্য একটি হতাশাজনক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল। শনিবার, আম্বেদকর স্টেডিয়ামে শ্রীভূমি এফসি-র (Sribhumi FC) কাছে ০-৩ গোলে পরাজিত হয়ে হপস এফসি-র (HOPS FC) রেলিগেশন নিশ্চিত হয়েছে। শ্রীভূমি এফসি-র হয়ে গোল করেছেন অপূর্ণা নার্জারি (২৪’), সান্দ্রা আটিঙ্গা (৭৯’) এবং রিম্পা হালদার (৮৪’)৷ এই জয়ের মাধ্যমে শ্রীভূমি তাদের অপরাজিত রেকর্ড তিন ম্যাচে প্রসারিত করেছে।

ম্যাচের প্রথমার্ধে শ্রীভূমি ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল। এই ম্যাচে প্রবেশের আগে হপস এফসি ওড়িশা এফসি এবং নীতা এফএ-র সঙ্গে তীব্র রেলিগেশন লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়েছিল। তাদের টিকে থাকার জন্য শেষ দুটি ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না। কিন্তু শনিবারের এই পারফরম্যান্স তাদের আশার শেষ আলোটুকুও নিভিয়ে দিয়েছে।

১৩ ম্যাচে মাত্র ৮ পয়েন্ট নিয়ে হপস এফসি পয়েন্ট তালিকার তলানিতে রয়েছে। এমনকি তাদের শেষ ম্যাচে সেতু এফসি-র বিপক্ষে জয়লাভ করলেও রেলিগেশন জোন থেকে বেরিয়ে আসা এখন গাণিতিকভাবে অসম্ভব। ওড়িশা এফসি ১২ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তাদের ঠিক উপরে সপ্তম স্থানে রয়েছে।

অন্যদিকে, শ্রীভূমি এফসি দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে। ইস্ট বেঙ্গল ইতিমধ্যেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, আর শ্রীভূমি ১৩ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। ম্যাচের শুরু থেকেই শ্রীভূমি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ছিল। তারা বল দখলের পাশাপাশি মাঠের প্রস্থ কার্যকরভাবে ব্যবহার করেছে। তাদের দ্রুত পাসিং এবং সুশৃঙ্খল গতিবিধি হপস-এর জন্য ছন্দ খুঁজে পাওয়া কঠিন করে তুলেছিল।

ম্যাচের ২৪তম মিনিটে প্রথম গোলের দেখা পায় শ্রীভূমি। ঙ্গানম বালা দেবী বক্সের ভেতর থেকে একটি শক্তিশালী শট নিয়েছিলেন, যা হপস-এর গোলরক্ষক কাজল পুরোপুরি প্রতিহত করেছিলেন। কিন্তু বলটি ফিরে আসে অপূর্ণা নার্জারির কাছে, যিনি শান্তভাবে ফিনিশ করে শ্রীভূমিকে এগিয়ে দেন।
হপস-এর কাছে সমতা ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল যখন তাদের ঘানার ফরোয়ার্ড গ্ল্যাডিস আমফোবিয়া বক্সের ভেতর ফাউলের শিকার হন। ফলে পেনাল্টি পায় হপস। গ্ল্যাডিস নিজেই পেনাল্টি নিতে এগিয়ে আসেন, কিন্তু তার শটে শক্তি বা দিকনির্দেশনার অভাব ছিল। শ্রীভূমির গোলরক্ষক অদিতি চৌহান সঠিক দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সহজেই শটটি প্রতিহত করেন, এবং শ্রীভূমির লিড অক্ষুণ্ণ থাকে। প্রথমার্ধে শ্রীভূমি একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও গোলের মুখে তাদের নিশানা ঠিক ছিল না। ফলে তারা ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধেও খেলার চিত্র একই ছিল। শ্রীভূমি একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যায়, এবং তাদের চাপ অবশেষে ফল দেয় ৭৯তম মিনিটে। সান্দ্রা আটিঙ্গা একটি দুর্দান্ত ফ্রি-কিক থেকে বল জালে জড়ান, যা ছিল একটি কঠিন কোণ থেকে নেওয়া অসাধারণ শট। এই গোল শ্রীভূমির লিড দ্বিগুণ করে।
হপস এফসি এর মধ্যে পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। ৮৪তম মিনিটে শ্রীভূমি তাদের তৃতীয় গোলটি করে। বালা দেবীর একটি চতুর লে-অফ রিম্পা হালদারের কাছে পৌঁছায়, যিনি ধীরস্থিরভাবে বল জালে জড়িয়ে শ্রীভূমির জয় নিশ্চিত করেন।

Advertisements

এই পরাজয় হপস এফসি-র জন্য একটি কঠিন বাস্তবতা। তারা পুরো মরশুমে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে, এবং এই ম্যাচে তাদের দুর্বলতাগুলো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, শ্রীভূমি এফসি তাদের শক্তিশালী দলগত পারফরম্যান্স এবং কৌশলগত শৃঙ্খলার মাধ্যমে আরও একবার প্রমাণ করেছে কেন তারা লিগের শীর্ষ দলগুলোর মধ্যে গণ্য।

হপস এফসি এখন তাদের শেষ ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি নেবে, যেখানে তারা সেতু এফসি-র মুখোমুখি হবে। তবে এই ম্যাচের ফলাফল যাই হোক না কেন, তাদের রেলিগেশন এড়ানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। শ্রীভূমি এফসি, অন্যদিকে, তাদের দুর্দান্ত ফর্ম ধরে রাখতে চাইবে এবং মরশুম শেষ করতে চাইবে উঁচু নোটে।

ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগের এই মরশুমে শ্রীভূমি এফসি-র মতো দলগুলো নারী ফুটবলের ক্রমবর্ধমান মানের প্রমাণ। হপস এফসি-র জন্য এটি একটি পুনর্গঠনের সময়। আগামী মরশুমে তারা নতুন করে ফিরে আসার আশা করবে, আরও শক্তিশালী এবং প্রতিযোগিতামূলক হয়ে।