২৭ বছর পর ‘চোকার্স’ তকমা মুছল প্রোটিয়াদের

দীর্ঘ ২৭ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa) জিতল তাদের প্রথম আইসিসি শিরোপা। ২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে (WTC Final 2025) অস্ট্রেলিয়াকে…

South Africa win WTC Final 2025 after Beat Australia

দীর্ঘ ২৭ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa) জিতল তাদের প্রথম আইসিসি শিরোপা। ২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে (WTC Final 2025) অস্ট্রেলিয়াকে (Australia) পরাজিত করে এই কৃতিত্ব অর্জন করল। ২৮২ রানের কঠিন লক্ষ্য তাড়া করে চতুর্থ দিনে জয় নিশ্চিত করে প্রোটিয়ারা। এই জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন আইডেন মারক্রাম, যিনি ২০৭ বলে ১৩৬ রানের ইনিংস খেলেন। অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা চোট নিয়ে খেলেও লড়াকু অর্ধশতক করেন। কাগিসো রাবাদা বল হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করে পুরো ম্যাচে ৯টি উইকেট শিকার করেছেন।

   

২৭ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে অবশেষে আইসিসি শিরোপা জিতল দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০২৫ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল প্রোটিয়ারা। লর্ডসের ঐতিহাসিক মাটিতে চার দিনের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে, সব ‘চোকার্স’ তকমা পেছনে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা এবার প্রমাণ করল, তারা এখন আর অতীতের সেই দল নয় যারা বড় ম্যাচে ধসে পড়ে।

মার্করামের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও বাভুমার সাহসী ইনিংস

ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে ছিলেন আইডেন মার্করাম। তিনি ১৩৬ রান করেন মাত্র ২০৭ বলে, যার মধ্যে ছিল ১৪টি চারের মার। তার সাথে অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা খেলেন দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০২ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে, বাভুমা ইনজুরির মধ্যেও ৬৫ রানে অপরাজিত থেকে দলের নেতৃত্ব দেন সামনে থেকে। তৃতীয় দিনের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল ২১৩/২, তখনো দরকার ছিল ৬৯ রান। চতুর্থ দিন কোনো অঘটন না ঘটিয়ে প্রোটিয়ারা লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।

রাবাদার বিধ্বংসী বোলিং

কাগিসো রাবাদা ম্যাচ জুড়ে অসাধারণ বোলিং করেন। তিনি ম্যাচে ৯টি উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপকে ভেঙে দেন। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়ে তিনি প্রমাণ করেন, কেন তিনি বর্তমান বিশ্বের সেরা ফাস্ট বোলারদের একজন।

Advertisements

অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রাম ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রত্যুত্তর

প্রথম দুই দিনে ১৪টি উইকেট পড়েছিল, যা ম্যাচকে ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন করে তোলে। তৃতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজলউড ৫৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়ে তোলে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে ২৮২ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দাঁড় করায়। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা চমৎকার ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাসে তা তাড়া করে ফেলে।

টিম স্পিরিট ও আত্মবিশ্বাসের জয়

দলের খেলোয়াড় উইয়ান মুল্ডার ম্যাচের পরে বলেন, “এই ইনিংসের আগে আমাদের মধ্যে ব্যর্থতার ভয়টা অনেকটা কেটে গিয়েছিল। আমরা শুধু ঠিক করেছিলাম, তারা যত রান করুক না কেন, আমরা তা তাড়া করব। এটা ছিল সাহস ও পরিকল্পনার জয়।”

এই জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা শুধুমাত্র তাদের ইতিহাসের দ্বিতীয় আইসিসি ট্রফি জিতল না, বরং নিজেদের ওপর আস্থা ফিরে পেল। এই জয় বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে থাকবে – যেখানে দক্ষিণ আফ্রিকা আর ‘চোকার্স’ নয়, বরং সাহস, ধৈর্য ও প্রতিজ্ঞার প্রতিচ্ছবি। এখন পুরো ক্রিকেট বিশ্ব দক্ষিণ আফ্রিকার জয়গান গাইছে – শুধু লর্ডস বাদে।