Saudi Arabia: ইসলামে হারাম মদ বিক্রি করতে সৌদি আরব দিল ঢালাও অনুমতি

Saudi Arabia: চরম সুরা রসিক ছিলেন বিশ্বের অন্যতম কবি মির্জা গালিব। তিনি লিখেছিলেন ”মসজিদে বসিয়াই আমাকে শারাব পান করিতে দাও,অথবা আর একটা জায়গা আমাকে দেখাও…

Saudi Arabia: ইসলামে হারাম মদ বিক্রি করতে সৌদি আরব দিল ঢালাও অনুমতি

Saudi Arabia: চরম সুরা রসিক ছিলেন বিশ্বের অন্যতম কবি মির্জা গালিব। তিনি লিখেছিলেন ”মসজিদে বসিয়াই আমাকে শারাব পান করিতে দাও,অথবা আর একটা জায়গা আমাকে দেখাও যেইখানে আল্লাহ নাই” (“শরাব পিনে দে মসজিদ মে ব্যায়ঠ কার,ইয়া ও জাগা বাতা যাঁহা খুদা নেহি”)। গালিবের লেখনী তৎকালীন সময়েও প্রশংসা ও নিন্দার ঝড় একসঙ্গে তুলেছিল। তবে তিনি গালিব-তাকে রোখে কার সাধ্য। কড়া ধর্মীয় রীতি পানশালায় ডুবিয়ে দিয়েছিলেন গালিব। ইসলামে মদ্যপান হারাম এমনটা পরে বিভিন্ন ইসলামি শাসনতন্ত্রের দেশে আর তেমন প্রযোজ্য নয়। এবার সৌদি আরব সেই পথ নিল।

ইসলামি আইনের গর্ভগৃহ সৌদি আরবে মদ্যপানে ঢালাও অনুমতি। ২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ এবং ২০৩০ সালের এক্সপোসহ আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজনের প্রস্তুতির আগে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করার লক্ষ্যে সৌদি আরব সরকার ২০২৬ সালের মধ্যে ৬০০টি পর্যটন স্থানে দীর্ঘদিনের জন্য মদের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে।

   

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান জানাচ্ছে, ‘অতি-রক্ষণশীল’ দোশ সৌদি আরবের পাঁচ তারা হোটেল, বিলাসবহুল রিসোর্টে ওয়াইন, বিয়ার এবং সাইডার বিক্রির অনুমতি দেবে। তবে জনসাধারণ, বাড়ি, দোকান এবং ফ্যান জোনে মদ্যপান নিষিদ্ধ থাকবে। দেশটির ভবিষ্যৎ বাদশাহ বলে চিহ্নিত মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন ২০৩০’-এর লক্ষ্য আন্তর্জাতিক পর্যটন বৃদ্ধি করা, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা।

এই পরিকল্পনাটি ২০২৬ সালে কার্যকর হওয়ার কথা। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আট বছর আগে দেশের ভাবমূর্তি আধুনিকীকরণের ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত এসেছে। চলতি বছরের শুরুতে ব্রিটেনে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঘোষণা করেছিলেন, ২০৩৪ বিশ্বকাপে মদ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হবে। এরপর এটি ইংল্যান্ডের ফুটবল ভক্তদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়।

বিতর্ক ঢাকতে সৌদির উপ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন বন্দর আল সৌদ বলেছিলেন, প্রত্যেকেরই নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। আমরা আমাদের সংস্কৃতির সীমানার মধ্যে থাকা মানুষকে আপন করে নিতে পেরে খুশি, কিন্তু আমরা অন্য কারও জন্য আমাদের সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে চাই না। এটি কোনো সৌদি অনুষ্ঠান নয়, এটি একটি ‘বিশ্ব অনুষ্ঠান’ এবং অনেকাংশে যারা আসতে চান তাদের আমরা স্বাগত জানাব।

Advertisements

একটি সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মদ বিক্রয় কেবলমাত্র নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে হবে, লাইসেন্সপ্রাপ্ত পরিষেবাকর্মী এবং স্পষ্ট পরিচালনামূলক নিয়মাবলী নিশ্চিত করার জন্য, যাতে অ্যালকোহল দায়িত্বশীলতা এবং সম্মানের সাথে পরিচালনা করা হয়। আরও জানানো হয়, ২০ শতাংশর  বেশি ‘ABV’ স্পিরিট এবং হার্ড লিকার নিষিদ্ধ থাকবে। দোকান, টেকওয়ে বা হোম ব্রুয়িং থাকবে না। লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্থানে কঠোরভাবে ‘নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার’ অধীনে পরিচালিত হবে দেশের ইসলামী মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার জন্য কঠোর নিয়ম থাকবে।

ইসলামি রীতিতে মদ্যপান কেন হারাম ?
ইসলামে মদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে কারণ:
এটি বিবেক-বুদ্ধি নষ্ট করে।
সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
স্বাস্থ্য ও নৈতিকতার ক্ষতি সাধন করে।
মদ্যপান ইসলামে গুরুতর পাপ। একজন মুসলিমের উচিত তা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকা এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা, যদি পূর্বে এ পাপে লিপ্ত হয়ে থাকে।

আপাতত বিশ্বকাপ ফুটবল ঝড়ে সেই নিয়ম শিথিল হচ্ছে ইসলামি রীতির প্রধান দেশ সৌদি আরবে।