রবিবার ভোরের নিস্তব্ধতা ভেঙে বাইপাস সংলগ্ন সাই (SAI) মাঠে জমে উঠেছিল এক অনন্য উৎসবের আবহ। ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্টের অনুপ্রেরণায় এবং সাই ও লোহা ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হল ‘কলকাতা সাইক্লোথন ২০২৫’ (Kolkata Cyclothon 2025) প্রথম সংস্করণ। সকাল ৪টা ২০ মিনিটে সাই মূল গেট থেকে ফ্ল্যাগ-অফের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ৭০ কিলোমিটার বিভাগের মূল রেস। এরপর পর্যায়ক্রমে ৫০, ২৫, ১০ ও ৫ কিলোমিটার বিভাগের রাইড শুরু হয়। সব মিলিয়ে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি প্রতিযোগী অংশ নেন এই একদিনের ইভেন্টে।
‘রাইড ফর চেঞ্জ, রাইড ফর কলকাতা’ থিম নিয়েই অনুষ্ঠিত হয় প্রথম কলকাতা সাইক্লোথন। ইভেন্টের রুট নির্ধারিত হয়েছিল সাই মূল গেট থেকে শুরু করে করুণাময়ী, সেক্টর ভি, সিএনসিআই হাসপাতাল হয়ে আইটিসি হাতিশালা পর্যন্ত, পরে ফের সাই মাঠে ফেরা। মোট দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। ৭০ কিমি রেসে অংশগ্রহণকারীরা এই রুটের দুটি লুপ সম্পূর্ণ করেন।
এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাই কলকাতার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অমর জ্যোতি, ইভেন্টের অনারারি রেস ডিরেক্টর কৃষ্ণ প্রকাশ (IPS), বিধাননগর পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমার, কোল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান সনোজ কুমার ঝা, প্রাক্তন চেয়ারম্যান পি. এম. প্রসাদ এবংঅলিম্পিয়ান লিয়েন্ডার পেজ ও গায়িকা উষা উত্থুপ।
উদ্বোধনী মঞ্চে লিয়েন্ডার পেজ বলেন, “এত মানুষকে একসঙ্গে স্বাস্থ্য ও স্থায়িত্বের বার্তা নিয়ে রাস্তায় নামতে দেখা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। প্রতিটি প্যাডেল শহর ও দেশের জন্য এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার প্রতীক।”
গায়িকা উষা উত্থুপ যোগ করেন, “কলকাতার এই উদ্যম অবিশ্বাস্য। লিয়েন্ডারের সঙ্গে একই মঞ্চে থেকে এই আন্দোলনের অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত।” এই সাইক্লোথনে সমাজের সব স্তরের মানুষ অংশ নেন রেলওয়ে, এনডিআরএফ, কোল ইন্ডিয়া, স্থানীয় পুলিশ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হোমিওপ্যাথি সহ নানা সংস্থা থেকে প্রচুর অংশগ্রহণকারী ছিল।
রাইড শেষে বিজয়ীদের সংবর্ধনা ও সঙ্গীত পরিবেশনায় মেতে ওঠে সকলে। বলিউড গায়ক শাদাব ফারিদির পরিবেশনায় মুখর হয়ে ওঠে সাই প্রাঙ্গণ। সেই সঙ্গে কলকাতার পোস্টমাস্টার জেনারেল অশোক কুমার প্রকাশ করেন একটি বিশেষ স্মারক ডাক-সীল, সাইক্লোথনের প্রথম সংস্করণের স্মৃতি চিরস্থায়ী করতে।
সাই কলকাতার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অমর জ্যোতি বলেন, “কলকাতার ফিটনেস সচেতনতা এখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। এই ইভেন্ট ভবিষ্যতের জন্য আরও স্বাস্থ্যকর দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে।” লোহা ফাউন্ডেশনের ইভেন্ট ডিরেক্টর মেহের তিওয়ারি বলেন, “প্রথম সংস্করণেই আমরা এমন উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছি। এটাই ভবিষ্যতের নতুন মানদণ্ড।”


