ইংল্যান্ড সফরেই টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক অর্শদীপের! বিসিসিআইকে পরামর্শ অজি কিংবদন্তির

২০২৫ সাল ভারতীয় ক্রিকেট দলের (Indian Cricket Team) সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। আইপিএল (IPL 2025) শেষ হতেই নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে টিম ইন্ডিয়া পাড়ি…

Rohit Sharma Personally Requested Gautam Gambhir To Reappoint T Dilip as Indian Cricket Team Fileding Coach ahead of England Tour

২০২৫ সাল ভারতীয় ক্রিকেট দলের (Indian Cricket Team) সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। আইপিএল (IPL 2025) শেষ হতেই নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে টিম ইন্ডিয়া পাড়ি দেবে ইংল্যান্ডে (England)। ২০ জুন থেকে শুরু হচ্ছে পাঁচ ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট সিরিজ। ২০২৭ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নিরিখে এই সিরিজ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তবে এই সফরের আগেই বড় রদবদল দেখা গিয়েছে ভারতীয় দলে। অবসর নিয়েছেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। তাঁদের জায়গায় দলের নেতৃত্বের ভার দেওয়া হয়েছে তরুণ ওপেনার শুভমন গিলকে। বোর্ডের এই সিদ্ধান্তে পরিষ্কার, এবার তরুণ প্রতিভাদের উপরেই ভরসা রাখছে টিম ম্যানেজমেন্ট।

এই নতুন যুগে এক নতুন নাম সবার নজরে অর্শদীপ সিং (Arshdeep Singh)। দীর্ঘদিন ধরে সাদা বলের ক্রিকেটে নজরকাড়া পারফরম্যান্সের পর অবশেষে টেস্ট দলে ডাক পেয়েছেন এই বাঁ-হাতি পেসার। প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনাও যথেষ্ট বেশি। তার ওপর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন খোদ রিকি পন্টিং (Ricky Ponting), যিনি অর্শদীপের আইপিএল দল পঞ্জাব কিংসের কোচ।

   

আইপিএলের ২০২৫ মরসুমে দুরন্ত ফর্মে ছিলেন অর্শদীপ। ১৪ ম্যাচে ১৮টি উইকেট নিয়ে তিনি ছিলেন দলের অন্যতম সেরা পারফর্মার। পন্টিং বলেন, “ভারতের টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণার পর আমি প্রথমেই পঞ্জাব কিংসের টিম মিটিংয়ে অর্শদীপকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, ও ইংল্যান্ডেও ভালো পারফর্ম করবে। যদি আমি নির্বাচক হতাম, তাহলে প্রথম টেস্ট থেকেই ওকে একাদশে রাখতাম।”

পন্টিংয়ের এই মন্তব্য শুধু আবেগ থেকে নয়, বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে। তিনি জানান, “ডিউক বলে অর্শদীপ বাড়তি সুবিধা পাবে। ওর উচ্চতা প্রায় ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি, তাই ভালো বাউন্স আদায় করতে পারবে। ইংল্যান্ডের পরিবেশ ওর পক্ষে যেতে পারে, বিশেষ করে যখন বল কিছুটা পুরনো হয়, তখন স্যুইং করার সুযোগ তৈরি হয়।”

অভিজ্ঞতার অভাব পূরণ করবে ট্যালেন্ট?

এই সিরিজে পুরোপুরি ফিট না হওয়ায় বাদ পড়েছেন অভিজ্ঞ পেসার মহম্মদ সামি। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের পেস আক্রমণ তুলনামূলকভাবে নতুনদের উপর নির্ভর করছে। মহম্মদ সিরাজ ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণের সঙ্গে অর্শদীপেরও প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।

Advertisements

বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্শদীপের শক্তি শুধু তার গতি বা উচ্চতায় নয়, বরং তার বলের নিয়ন্ত্রণ এবং রিভার্স স্যুইং করার দক্ষতায়। ৪০-৫০ ওভার পুরনো বলেও যেভাবে সে স্যুইং আদায় করতে পারে, তা উপমহাদেশের বাইরের কন্ডিশনে বিশেষ করে কার্যকর হতে পারে।

অর্শদীপের আরও একটি বড় সুবিধা হল, তিনি ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ডে কাউন্টি ক্রিকেট খেলেছেন। ফলে সেই দেশের আবহাওয়া, পিচ ও বলের ধরন তাঁর কাছে অজানা নয়। এই অভিজ্ঞতা তাকে মানসিকভাবে তৈরি করেছে টেস্ট ক্রিকেটের কঠিন চ্যালেঞ্জের জন্য।

সামনে চূড়ান্ত প্রমাণের সময়

অর্শদীপের টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্তি নিঃসন্দেহে তরুণদের জন্য এক বড় বার্তা। যাঁরা মনে করেন সাদা বলের ক্রিকেটে ভালো করলেই টেস্টে সুযোগ পাওয়া সম্ভব নয়, তাঁদের ভুল প্রমাণ করছেন এই পেসার। তবে এই সুযোগকেই পরিণত করতে হবে সাফল্যে। কারণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জায়গা পাওয়া যতটা কঠিন, তা ধরে রাখা আরও কঠিন।

ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ যে নতুনদের হাতে ধরা দিয়েছে, তা স্পষ্ট। এখন দেখার, ইংল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনে অর্শদীপ কতটা কার্যকর হতে পারেন। পন্টিংয়ের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার যেখানে তাঁর উপর আস্থা রাখছেন, সেখানে কোটি ভক্তও চেয়ে রয়েছেন এক নতুন নায়কের উত্থান দেখার জন্য।