ভারতীয় ক্রিকেটে (Indian Cricket) ‘তারকা সংস্কৃতি’ নিয়ে তীব্র মন্তব্য করলেন সদ্য অবসর নেওয়া ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন (Ravichandran Ashwin)। তিনি বলেন এই সংস্কৃতির তীব্র সমালোচনা করে দ্রুত বন্ধ করার প্রয়োজন। তাঁর মতে, দলের মধ্যে কখনও এই তারকা সংস্কৃতি প্রচলিত হওয়া উচিত নয় এবং ক্রিকেটে উন্নতি করতে গেলে এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
অশ্বিন তাঁর নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের ক্রিকেটে এই তারকা সংস্কৃতিকে দ্রুত স্বাভাবিক করতে হবে। কোনোভাবেই দলের মধ্যে তারকা সংস্কৃতিকে প্রতিষ্ঠা করতে দেওয়া উচিত নয়। ক্রীড়াবিদ হিসেবে আমাদের কাজ এবং অর্জন সাধারণ মানুষের কাছে সহজে তুলনীয় হতে হবে যাতে তারা আমাদের সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারে।”
ভারতীয় দলের কোচ গৌতম গম্ভীরও একই মত প্রকাশ করেছেন যে, ভারতীয় ক্রিকেটে এই তারকা সংস্কৃতি বন্ধ হওয়া উচিত। অশ্বিনের মতে কেউ কোনো অভিনেতা বা মহাতারকা নই বরং কেবল ক্রীড়াবিদ।
তাঁর কথায়, “এটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে যে, আমরা ক্রীড়াবিদ। আমাদের দৃষ্টি থাকা উচিত দলের উন্নতির দিকে, ব্যক্তিগত অর্জনগুলির দিকে নয়। কোনো ক্রিকেটারের সেঞ্চুরি করার পর, সেটা আর ‘তার সাফল্য’ হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত নয়। বরং এটি তাঁর দৈনন্দিন কাজের অংশ হওয়া উচিত।”
অশ্বিন আরও বলেন, “বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মার মতো ক্রিকেটারের জন্য আরও একটি সেঞ্চুরি করা মানে কোনও নতুন সাফল্য নয় বরং এটি তাঁদের পেশাগত দায়িত্বের মতো। এটা একটা নিয়মিত কাজ হয়ে ওঠা উচিত, আর আমাদের লক্ষ্য থাকা উচিত নিজেদের অর্জনকে ছাপিয়ে বড় সাফল্য পাওয়া।”
ভারতীয় দলের অন্যতম সেরা স্পিনার হিসেবে অশ্বিন প্রায় দেড় দশক জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন এবং একাধিক টেস্ট সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। যদিও তিনি বিরাট কোহলি বা রোহিত শর্মার মতো মহাতারকার সম্মান পাননি তবুও তিনি কখনও তারকা সংস্কৃতির জন্য অভিযোগ করেননি।
অশ্বিন স্পষ্টভাবে বলেন, “ক্রিকেটে কোনো সময়েই তারকা সংস্কৃতিকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। এই সংস্কৃতির কারণে দল এবং খেলার পরিবেশ প্রভাবিত হতে পারে। এখন সময় এসেছে ক্রিকেটাররা নিজেদের অবদান হিসেবে দলের সাফল্য এবং উন্নতি ভাবতে শিখবে এবং ব্যক্তিগত অর্জনকে ছাপিয়ে একসঙ্গে বড় কিছু করতে হবে।”
অশ্বিনের এই মন্তব্য ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং এটি ক্রিকেটে তারকা সংস্কৃতি এবং দলীয় মূল্যবোধের উপর এক নতুন দৃষ্টিকোণ নিয়ে এসেছে।