ড্র গাব্বা টেস্টে, তবুও কেন দুঃসংবাদ ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের? দেখুন

ব্রিসবেন টেস্টের (Brisbane Test) পঞ্চম দিন, ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে (Indian Cricket History) একটি আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে দাঁড়াল। ম্যাচ চলাকালীন বিরাট কোহলির সঙ্গে একান্তে কিছু…

Ravichandran Ashwin record and ICC Rankings

short-samachar

ব্রিসবেন টেস্টের (Brisbane Test) পঞ্চম দিন, ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে (Indian Cricket History) একটি আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে দাঁড়াল। ম্যাচ চলাকালীন বিরাট কোহলির সঙ্গে একান্তে কিছু সময় কাটানোর পর, হঠাৎই এক চমকপ্রদ ঘোষণা করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন (Ravichandran Ashwin)। টেস্ট ক্রিকেটের অন্যতম সেরা স্পিনার, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট (International Cricket Career) থেকে অবসর গ্রহণের ঘোষণা করলেন। এই খবরে বিস্মিত হয়েছিলেন ক্রিকেট বিশ্ব, কারণ অশ্বিন এখনও ভারতের টেস্ট দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এবং তাঁর বিদায় মানে, ভারতীয় ক্রিকেটে এক যুগের সমাপ্তি।

   

অশ্বিনের এই অবসরের সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এল যখন তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ার শীর্ষে পৌঁছেছে। ১৪ বছর ধরে তিনি ভারতের অন্যতম সেরা অফস্পিনার হিসেবে কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ার প্রায় এক দশক ধরে ছিল রেকর্ডের বাহার। ১০৬টি টেস্টে ৫৩৭টি উইকেট, যা তাঁকে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার হিসেবে স্থান দিয়েছে, শুধুমাত্র অনিল কুম্বলের পরে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে প্রথম বোলার হিসেবে ১০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন অশ্বিন, যা ক্রিকেট ইতিহাসে একটি অনন্য অর্জন।

দলের পারফরম্যান্স নিয়ে যথেষ্ট খুশি অস্কার, মহেশ প্রসঙ্গে বিশেষ বার্তা

অশ্বিনের অবসর ঘোষণার আগ মুহূর্তে ড্রেসিংরুমে তাঁর সহযোদ্ধা বিরাট কোহলির সঙ্গে এক আবেগপূর্ণ আলোচনা হয়। পরবর্তীতে, সাংবাদিক সম্মেলনে রোহিত শর্মার পাশে বসে তিনি তাঁর অবসর ঘোষণা করেন। এসময় আবেগঘন অশ্বিন বলেন, “আজ থেকে জাতীয় দলের হয়ে আর খেলব না। ক্রিকেটের জন্য যা কিছু পেয়েছি, তা আমি পেয়েছি এই খেলাটির মাধ্যমে। তবে ক্লাব স্তরে খেলতে আমি প্রস্তুত আছি।” তাঁর এই ঘোষণা ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা, যেখানে মেধা, পরিশ্রম এবং সাফল্যের মাধ্যমে অশ্বিন তাঁর জায়গা তৈরি করেছেন।

অশ্বিন শুধু একজন ব্যতিক্রমী বোলার ছিলেন না, বরং তিনি একজন শক্তিশালী ব্যাটসম্যানও ছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটে ৩৪৭৪ রান এবং ৬টি শতকসহ তাঁর ব্যাটিং কেরিয়ারও অনবদ্য। তাঁর অফস্পিনের বিপরীতে ব্যাটসম্যানরা যে হারে সংগ্রাম করতেন, তাতে অশ্বিনের মনোবল সবসময়ই অটুট ছিল। ৩৭ বার এক ইনিংসে পাঁচ বা তারও বেশি উইকেট শিকার করার নজিরও রয়েছে তাঁর। এই পরিসংখ্যানগুলোই প্রমাণ করে, তিনি শুধু একটি টেস্ট দলের সম্পদই ছিলেন না, বরং পুরো ক্রিকেট বিশ্বে এক কিংবদন্তি হয়ে উঠেছেন।

ফিফা বেস্ট মেনস প্লেয়ার পুরস্কার জিতলেন ভিনিসিয়াস

অশ্বিনের অবসর ঘোষণার পেছনে যেসব কারণ উঠে এসেছে, তার মধ্যে একটির মধ্যে রয়েছে তাঁর সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। অস্ট্রেলিয়া সফরে, বিশেষ করে অ্যাডিলেড টেস্টের পর তাঁর খেলার ধারা একটু স্লথ হয়ে উঠেছিল। পরবর্তীতে তিনি দলে সুযোগ পাননি, এবং শোনা যাচ্ছিল, বর্ডার-গাভাসকর ট্রফির (Border Gavaskar Trophy) পর ভারতের সিনিয়র ক্রিকেটারদের ভবিষ্যৎ নিয়ে নির্বাচকদের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে অশ্বিন হয়তো অনুভব করেছিলেন, তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে।

অশ্বিনের এই অবসরের সিদ্ধান্তের পর প্রশ্ন উঠেছে, কেন তিনি এমন একটি সময়ে অবসর নিলেন, যখন ভারতীয় মাটিতে তিনি আরও কয়েক বছর খেলতে পারতেন। যদিও তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে, তাঁর কৃতিত্ব এবং অবদানকে চিরকাল স্মরণীয় করে রাখা হবে।

ভারতকে ৯ উইকেটে পরাজিত করে সিরিজ সমতায় ফিরল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

এখন, যখন অশ্বিনের অবসরের ঘোষণার পর ভারতীয় ক্রিকেট এক নতুন যুগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তখন তাঁর ব্যাটিং, বোলিং এবং মেধার যে মিশ্রণটি ছিল, তা নতুন প্রজন্মের জন্য এক অসীম প্রেরণা হয়ে থাকবে। ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে তাঁর নাম সর্বদা উজ্জ্বল থাকবে, এবং তাঁর অবদান চিরকাল স্মরণীয় থাকবে।