আইপিএল ২০২৫-এর নিলামের আগে রাজস্থান রয়্যালস তাদের রিটেনশন তালিকা প্রকাশ করেছে। দলে ধরে রাখা হয়েছে অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন, ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল, অলরাউন্ডার রিয়ান পরাগ, উইকেটকিপার ধ্রুব জুরেল, বিধ্বংসী ব্যাটার শিমরন হেটমায়ার এবং অভিজ্ঞ পেসার সন্দীপ শর্মাকে। তবে রয়্যালসের দলের বাইরে চলে যেতে হয়েছে ইংল্যান্ডের তারকা ব্যাটসম্যান জস বাটলারকে।
সঞ্জু স্যামসনের নেতৃত্ব ও অবদান
সঞ্জু স্যামসন, যে রয়্যালসের অধিনায়ক হিসেবে শেষ চারটি মরশুমে দায়িত্ব পালন করেছেন, এবারও তিনি দলের নেতৃত্বে থাকছেন। দলে সঞ্জুকে ধরে রাখা হয়েছে ১৮ কোটি টাকার বিনিময়ে। অধিনায়কত্বের সাথে সাথে ব্যাট হাতেও তিনি নিয়মিতভাবে পারফর্ম করেছেন এবং দলের প্লে-অফে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আইপিএল ২০২২-এ রানার্স আপ হওয়ার পর থেকে সঞ্জু রয়্যালসের শীর্ষ তিন রান সংগ্রাহকদের তালিকায় প্রতি বছর নিজের স্থান ধরে রেখেছেন। শেষ চার মরশুমে সঞ্জুর সংগ্রহ ৬০ ইনিংসে ১৮৩৫ রান, যা প্রমাণ করে তার সামগ্রিক যোগ্যতা ও ধারাবাহিকতা।
যশস্বী জয়সওয়াল ও তাঁর অগ্রগতি
দলের অন্যতম তরুণ প্রতিভা যশস্বী জয়সওয়ালকে ১৮ কোটি টাকায় ধরে রাখা হয়েছে। তার বামহাতি ওপেনিং ব্যাটিংয়ে রানের ধারাবাহিকতা ও স্ট্রাইক রেটের গতি আইপিএলের পরিসরে নজর কেড়েছে। আইপিএল ২০২৩-এ তিনি ৬২৫ রান সংগ্রহ করে নিজের এবং দলের একটি বিশেষ রেকর্ড তৈরি করেন।
রিয়ান পরাগ ও ধ্রুব জুরেল
রিয়ান পরাগ, যিনি অলরাউন্ডার হিসেবে রয়্যালসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাকেও ১৪ কোটি টাকায় ধরে রাখা হয়েছে। তরুণ এই ক্রিকেটার সম্প্রতি ভারতের হোয়াইট বল ক্রিকেট দলে সুযোগ পেয়েছেন এবং আইপিএল ২০২৪ মরশুমে তিনি চমৎকার পারফর্ম করেন। ধ্রুব জুরেল, তরুণ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবেও গত মরশুমে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। জুরেলকে ধরে রাখা হয়েছে ১৪ কোটি টাকায়, যার ফলে দলটির তরুণ ভারতীয় প্লেয়ারদের প্রতি বিশ্বাসের প্রতিফলন দেখা যায়।
শিমরন হেটমায়ার ও সন্দীপ শর্মার উপস্থিতি
দলে একমাত্র বিদেশী খেলোয়াড় হিসেবে ধরে রাখা হয়েছে শিমরন হেটমায়ারকে, যিনি ১১ কোটি টাকায় রয়্যালসে অবিচ্ছিন্ন রয়েছেন। তিন মৌসুমে তার শক্তিশালী স্ট্রাইক রেট দলের মিডল-অর্ডারে তাকে অপরিহার্য করে তুলেছে। অন্যদিকে, সন্দীপ শর্মা, যার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দলের বোলিং আক্রমণে ভারসাম্য এনেছে, তাকে ৪ কোটি টাকায় ধরে রাখা হয়েছে।
রাহুল দ্রাবিড়ের মন্তব্য
রয়্যালসের প্রধান কোচ রাহুল দ্রাবিড় এই রিটেনশন প্রসঙ্গে বলেন, “শেষ কয়েক বছর ধরে আমাদের দল ধারাবাহিকভাবে সাফল্য পেয়েছে এবং এই খেলোয়াড়রা বিভিন্ন সময়ে অবদান রেখেছেন। সঞ্জু তার নেতৃত্ব ও ধারাবাহিকতা দিয়ে দলকে স্থিরতা ও সাফল্যের পথে চালিত করেছেন। যশস্বী, রিয়ান ও ধ্রুবের মতো তরুণ খেলোয়াড়রা দলে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের এই খেলোয়াড়দের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখা শুধু তাদের দক্ষতার কারণে নয়, তাদের প্রতি আমাদের বিশ্বাসের প্রতিফলন। নিলামের আগে স্থায়িত্ব ও বিশ্বাসের জন্য এদের ধরে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে দল থেকে যারা বাইরে চলে গেছেন, তাদের অবদানের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আশা করি ভবিষ্যতে আবারও তাদের ফিরে পাবো।”
দলের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনও দলকে ধরে রাখার জন্য তার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বলেন, “আমি গর্বিত যে দল আমাকে নেতৃত্বের সুযোগ দিয়েছে এবং আগামীতে সেরা সাফল্যের লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাব।”