ইরানের তিনটি নিউক্লিয়ার সুবিধার উপর আমেরিকার আক্রমণের পর আসাদুদ্দিন ওয়াইসির (Asaduddin Owaisi) তীব্র প্রতিক্রিয়া। এই আক্রমণকে নিয়ে তিনি পাকিস্তানকে একটি প্রশ্নের মুখোমুখি করেছেন – কি এই হামলার জন্যই ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া উচিত? এই প্রশ্ন তুলে ধরেছেন এআইএমআইএম সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি, যিনি এই আক্রমণকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর গাজার জেনোসাইড আড়াল করার একটি চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
Read Hindi: हमले के बाद ट्रंप को नोबेल पुरस्कार? पाकिस्तान को सवाल असदुद्दीन का
ওয়াইসির মতে, “এই আক্রমণ আমেরিকার দ্বারা নেতানিয়াহুকে সাহায্য করেছে, যিনি প্যালেস্টাইনিয়ানদের হত্যাকারী। গাজায় যে জেনোসাইড চলছে, তা আড়াল করার জন্য এই আক্রমণ ব্যবহৃত হয়েছে। গাজায় ৫৫,০০০ প্যালেস্টাইনিয়ান মারা গেছেন, এবং আমেরিকা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়।” তিনি আরও বলেন, “আমরা পাকিস্তানীদের জিজ্ঞাসা করতে হবে, কি এই জন্যই তাঁরা ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন?”
পাকিস্তানের সাথে ইরানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিবেচনায় রাখলে এই প্রশ্নটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পাকিস্তান সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্পের “বাস্তববাদী কূটনীতি” এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংকট কমানোর জন্য তাঁর ভূমিকার জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তাঁকে নির্ধারণ করেছিল। তবে ইরানের উপর আমেরিকার আক্রমণের পর পাকিস্তান এই আক্রমণকে তীব্রভাবে নিন্দা করেছে এবং বলেছে যে এটি আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধাচরণ।
এই ঘটনার পটভূমিতে, আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তাঁর প্রশাসন ইরানের ফোর্ডো, নাতানজ এবং ইসফাহানের তিনটি নিউক্লিয়ার সুবিধার উপর আঘাত হানেছে। ট্রাম্পের দাবি, “আমরা তাঁদের হাত থেকে বোমা নিয়ে নিয়েছি।” তবে ইরানের বৈদেশিক মন্ত্রী এই আক্রমণকে “অন্যায়মূলক” এবং “আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
গাজার উদ্বেগ নিয়ে ওয়াইসির মন্তব্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ২০২৪ সালের প্রতিবেদনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যেখানে জানানো হয়েছে যে ইসরায়েল গাজার প্যালেস্টাইনিয়ানদের বিরুদ্ধে জেনোসাইড চালাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “ইসরায়েল গাজার প্যালেস্টাইনিয়ানদের বিরুদ্ধে জেনোসাইড চালাচ্ছে এবং এটি চলতেই থাকছে।” এই প্রসঙ্গে ওয়াইসির মন্তব্য একটি বৃহত্তর আন্তর্জাতিক উদ্বেগের প্রতিফলন।
পাকিস্তানের দ্বি-মুখী ভূমিকা নিয়ে ওয়াইসির প্রশ্ন তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতার প্রমাণ। পাকিস্তান ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখলেও, ট্রাম্পের প্রশংসা করা এবং পরে আক্রমণ নিন্দা করা তাঁর কূটনৈতিক অবস্থানকে জটিল করে তোলে। ওয়াইসির প্রশ্ন এই জটিলতার উপর জোর দেয় এবং পাকিস্তানের কূটনৈতিক স্থিরতার প্রশ্ন তোলে।
এই ঘটনার আরেকটি দিক হলো ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের মধ্যে আমেরিকার সক্রিয় ভূমিকা। ট্রাম্পের আক্রমণ ইসরায়েলের সাথে ইরানের বিরোধের মধ্যে আমেরিকার স্পষ্ট সংযোগ স্থাপন করে। এই সংঘাতের মধ্যে গাজার জেনোসাইডের উদ্বেগ ওয়াইসির মতে, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে।
সংক্ষেপে, আসাদুদ্দিন ওয়াইসির মন্তব্য এই আক্রমণকে গাজার জেনোসাইড আড়াল করার একটি চেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করে এবং পাকিস্তানের কূটনৈতিক ভূমিকার উপর প্রশ্ন তোলে। তাঁর প্রশ্ন এই জটিল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে।