সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: পুরো আফ্রিকা কাঁপছে, পুরো কাতার এখন মরক্কানদের দখলে। দোহার রাজপথে জনপ্লাবন। মরক্কো (Morocco) দেশটি যেহেতু আরব দুনিয়ার অন্তর্ভুক্ত তাই আরও উন্মাদনা। কাতার জুড়ে একটাই গান-‘This Time For Africa’ বাজছে। এ দৃশ্য সত্যিই অনন্য।
মরক্কোর সামনে ‘চাঁদের পাহাড়ে’ ওঠার সব থেকে কঠিন চড়াই পার হওয়ার লড়াই। একটু এদিক ওদিক হলেই আবার শেষ থেকে শুরু। অধরা থাকবে সেই ক্যামেরুণের দেখানো আধখানা সোনালি চাঁদ না ধরার আক্ষেপ।
বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের প্রবল শক্তির সামনে একেবারে নাম কা ওয়াস্তে বিশ্বকাপ খেলতে আসা দলের তকমাধারী ছিল মরক্কো। কিন্তু ফুটবল বিশ্বযুদ্ধের রণক্ষেত্রে এই ছবিটা সম্পূর্ন বদলে গেছে। মারাত্মক রক্ষণ ও আক্রমণ শক্তিধারী মরক্কো নজির গড়ে প্রথম আফ্রিকার দেশ ও প্রথম আরব দুনিয়ার দেশ হিসেবে কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। এটা একটা নজির। তবে মরক্কো দলটির তরফে দাবি আরও নজির গড়তে হবে।
নজির গড়বে মরক্কো? পুরো বিশ্ব অপেক্ষা করছে। কোন জাদুতে মরক্কো এমন চমক দিল তাও বিশেষ চর্চিত। আফ্রিকা মহাদেশের সাথে ভূমধ্যসাগরের অতি বিপদসঙ্কুল জলপথ জিব্রাল্টার প্রণালী দিয়ে ইউরোপ সংযুক্ত। সেই অর্থে আধাআধি বিশ্ব মুখোমুখি।
মরক্কোর ওপারে স্পেন ও ফ্রান্স। আর আরবি ভাষার সুবাদে মরক্কো আরব বিশ্বের অন্তর্গত। এসব ভৌগোলিক ও ভাষিক কূটনৈতিক সমীকরণগুলো অবলীলায় হাজির হয়ে গেছে।
সকালে যখন মেসি নিজের অবসরের দিন ঘোষণা করলেন তখন কাতারের রাজপথে ছিল আর্জেন্টিনার নীল সাদা ও সোনালি সূর্যের পতাকা নিয়ে জনতার উদাসী-আবেগী ঢল। রাত নামতেই লাল পতাকার মাঝে সবুজ তারা নিয়ে জনপ্লাবন। মাঝে মাঝে ফরাসি তিনরঙা পতাকার ঝিলিকও দেখছি।
ফ্রান্সের সামনেও নিজের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার লড়াই। মাঠ ও গ্যালারিতে একসাথে মরক্কানদের বিরুদ্ধেও লড়াই। পুরো গ্যালারিটাই মরক্কো সমর্থকদের দখলে চলে গেছে। এটা বাড়তি চাপ ফরাসিদের কাছে। কিছুই হারানোর নেই এমন মন নিয়ে খেলতে আসা মরক্কো এখন মারকাটারি লড়াই করতে মরিয়া।
কলম্বিয়ান পপ তারকা তাঁর সেই দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের বিখ্যাত গান-‘This Time For Africa’ টুইট করেছেন। সাথে দিয়েছেন মরক্কোর পতাকা। শাকিরার গানটি জনতার মুখে মুখে। পারস্য উপসাগরের তীরে আশ্চর্শ নগরী দোহা জুড়ে আফ্রিকা বন্দনা শুরু হয়েছে।