আইপিএল ২০২৫ (IPL 2025 ) গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচে নিজের চোটগ্রস্ত আঙুলকে উপেক্ষা করে দুর্দান্ত নেতৃত্ব ও ব্যাটিং দক্ষতা দেখালেন পঞ্জাব কিংস (Punjab Kings) অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer)। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে ইনজুরির কারণে তার খেলা নিয়ে সংশয় থাকলেও শেষ পর্যন্ত চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করলেন তিনি। শুধু মাঠে নামলেনই না, বরং দলের চরম বিপদের মুহূর্তে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন এবং স্পর্শ করলেন একটি বড় ব্যক্তিগত মাইলস্টোন। আইপিএলে ৩০০টি বাউন্ডারির ক্লাবে নিজের নাম লেখালেন তিনি।
অনুশীলনে চোট, টসেও আঙুলে ব্যান্ডেজ
শনিবার অনুশীলনের সময় আঙুলে গুরুতর চোট পান শ্রেয়স আইয়ার। দলের চিকিৎসকরা বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিলেও, অধিনায়ক হিসেবে তিনি দলকে একা ফেলে রাখতে রাজি হননি। রবিবার ম্যাচের সময় দেখা গেল, আঙুলে মোটা ব্যান্ডেজ বেঁধে টস করতে নামছেন তিনি। তাঁর এই লড়াইয়ের মানসিকতাই আগাম ইঙ্গিত দিচ্ছিল যে, তিনি সহজে হাল ছাড়ার মানুষ নন।
আইপিএল শেষে অবসর ভেঙে ফের সাদা জার্সিতে বিরাট কোহলি!
ধাক্কা খেয়ে দিশেহারা পঞ্জাব, দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেন শ্রেয়স
পঞ্জাব কিংস টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু শুরুতেই ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে পড়ে। ৩.১ ওভারের মধ্যেই ৩৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় দল। সাজঘরে ফিরে যান প্রিয়াংশ আর্য, মিচ ওয়েন এবং প্রভসিমরন সিং। এমন চাপের পরিস্থিতিতে, ইনজুরি সত্ত্বেও পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন শ্রেয়স।
নেতৃত্ব, দর্শন ও ভবিষ্যতের ভিত্তিতে নজর কাড়ছেন এই ভারতীয় কোচ
শান্ত মাথায় তিনি ম্যাচের রাশ নিজের হাতে তুলে নেন। মিড-উইকেটের পাশ দিয়ে একটি ফ্লিক শটে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিজের ইনিংস শুরু করেন। শুরুতে কিছুটা সময় নেন, তারপর নিজের ছন্দে ফিরে আসেন। তার ব্যাটিংয়ে ছিল আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য এবং পরিণত মানসিকতা—যা একজন নেতৃত্বের যোগ্য ব্যাটসম্যানেরই লক্ষণ।
Milestone Unlocked 🔓
3⃣0⃣0⃣ fours and counting for Shreyas Iyer in #TATAIPL 👏
Predict his final score tonight 👇#RRvPBKS | @ShreyasIyer15 pic.twitter.com/6LbyflD8Hh
— IndianPremierLeague (@IPL) May 18, 2025
২৫ বলে ৩০ রান, ৬৭ রানের পার্টনারশিপ
শ্রেয়স আইয়ার ২৫ বলে ৩০ রানের একটি কার্যকর ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসে ছিল ৫টি দৃষ্টিনন্দন বাউন্ডারি। বিশেষ করে তুষার দেশপাণ্ডের বলে খেলা একটি ড্রাইভ ছিল নজরকাড়া। চতুর্থ উইকেটে নেহাল ওয়াধেরার সঙ্গে ৬৭ রানের মূল্যবান পার্টনারশিপ গড়ে দলের ভিত মজবুত করেন। এই পার্টনারশিপই পঞ্জাব কিংসকে প্রাথমিক বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলাতে সাহায্য করে এবং তারা শেষ পর্যন্ত ২০০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যায়।
আইপিএল ফাইনাল প্রসঙ্গে ‘মহারাজের’ মন্তব্যে আশার আলো
স্পর্শ করলেন ৩০০ বাউন্ডারির মাইলস্টোন
ব্যক্তিগত দিক থেকে এদিন আরও একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকল শ্রেয়স আইয়ারের জন্য। তার ইনিংসে হাঁকানো পাঁচটি বাউন্ডারির মধ্যে দিয়ে তিনি আইপিএলে ৩০০টি বাউন্ডারি হাঁকানোর বিরল কৃতিত্ব অর্জন করলেন। বর্তমানে আইপিএলের বাউন্ডারি মারার তালিকায় তিনি আরও একধাপ উপরে উঠে এলেন এবং প্রমাণ করলেন কেন তিনি আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান।
সুনীল ছেত্রীর আগমনে বেঙ্গালুরুতে জ্বলে উঠল ব্লু টাইগ্রেসদের ক্যাম্প
নেতৃত্ব, সংযম ও সাহসের উদাহরণ
আঙুলে চোট, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং দলের বিপর্যস্ত পরিস্থিতি—এই তিনটি চাপের মধ্যেও শ্রেয়স যেভাবে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য। এমন নেতৃত্বই একজন অধিনায়কের আসল পরিচয় দেয়। মাঠে তাঁর উপস্থিতি ও পারফরম্যান্স দলকে মনোবল জুগিয়েছে এবং সেইসঙ্গে দর্শকদেরও।
এই ম্যাচ আবারও প্রমাণ করল, আইপিএল শুধু ব্যাট-বলের খেলা নয়, এটি মানসিক শক্তিরও পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষায় এদিন পূর্ণ নম্বর পেয়েছেন শ্রেয়স আইয়ার।