বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগের (Bengal Pro t20) দ্বিতীয় মরসুমের মহিলা বিভাগের একটি পুনঃম্যাচে মুর্শিদাবাদ কুইন্স শ্রাচী রাঢ় টাইগার্সের বিরুদ্ধে ৮ উইকেটের দাপুটে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে। রবিবার জাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস, সল্টলেকে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে মুর্শিদাবাদের প্রতিভা রানা তার বোলিংয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১৫ রান দিয়ে। এছাড়া, তনুশ্রী সরকার অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখিয়ে বোলিংয়ে ১ উইকেট এবং ব্যাটিংয়ে অপরাজিত ৪৬ রান করে দলের জয়ে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত বিবরণ (Bengal Pro t20)
বৃষ্টির কারণে ম্যাচটি ১৭ ওভারে সীমিত করা হয়। টসে জিতে মুর্শিদাবাদ কুইন্স প্রথমে শ্রাচী রাঢ় টাইগার্সকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায়। শ্রাচী রাঢ় টাইগার্স নির্ধারিত ১৭ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০১ রান তুলতে সক্ষম হয়। দলের হয়ে বৃষ্টি মাজি সর্বোচ্চ ২৩ রান করেন।
তবে, মুর্শিদাবাদের বোলারদের আক্রমণের সামনে তাদের ব্যাটিং লাইনআপ ধরাশায়ী হয়। প্রতিভা রানার বোলিং স্পেল ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট, যিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন। তনুশ্রী সরকারও ১৪ রানে ১ উইকেট নিয়ে তার অলরাউন্ড ক্ষমতার প্রমাণ দেন।
১০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মুর্শিদাবাদ কুইন্স মাত্র ১৫.১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে। তনুশ্রী সরকার ৩৩ বলে অপরাজিত ৪৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন, যেখানে তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দলকে সহজ জয়ের পথে নিয়ে যায়।
ত্রিশিতা সরকারও ৩৬ বলে ৩৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে তনুশ্রীকে সঙ্গ দেন। শ্রাচী রাঢ় টাইগার্সের হয়ে পিয়ালি ঘোষ এবং পায়েল ভাখরিয়া একটি করে উইকেট নেন, তবে তারা মুর্শিদাবাদের ব্যাটিং আক্রমণ ঠেকাতে পারেননি।
ম্যাচের তাৎপর্য
বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগের (Bengal Pro t20) দ্বিতীয় মরসুমে এই জয় মুর্শিদাবাদ কুইন্সের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই টুর্নামেন্টটি বাংলার ক্রিকেটে নতুন প্রতিভা আবিষ্কার এবং মহিলা ক্রিকেটের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রতিভা রানার বোলিং এবং তনুশ্রী সরকারের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দলের শক্তিশালী দিক তুলে ধরেছে। এই জয় দলের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং টুর্নামেন্টের পরবর্তী ম্যাচগুলোতে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করবে।
মহিলা ক্রিকেটে বাংলার অগ্রগতি
বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগ (Bengal Pro t20) মহিলা ক্রিকেটারদের জন্য একটি বড় প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে স্থানীয় প্রতিভারা তাদের দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ পাচ্ছেন। মুর্শিদাবাদ কুইন্সের এই জয়ে প্রতিভা এবং তনুশ্রীর মতো খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বাংলার মহিলা ক্রিকেটের সম্ভাবনাকে তুলে ধরেছে। ম্যাচটি সল্টলেকের জাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়, যা কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করেছে।
প্রতিভা রানার অবদান
প্রতিভা রানার বোলিং স্পেল এই ম্যাচের অন্যতম আকর্ষণ ছিল। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিং এবং গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শ্রাচী রাঢ় টাইগার্সের ব্যাটিং লাইনআপকে ধসিয়ে দেয়। তার ৪ উইকেটের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ব্যাটারদের আউট করা ছিল দলের জয়ের পথে বড় ভূমিকা। ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রতিভার এই পারফরম্যান্স তাকে টুর্নামেন্টের অন্যতম শীর্ষ বোলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
তনুশ্রী সরকারের অলরাউন্ড নৈপুণ্য
তনুশ্রী সরকার এই ম্যাচে তার অলরাউন্ড ক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছেন। বোলিংয়ে ১ উইকেট নেওয়ার পর তিনি ব্যাট হাতে অপরাজিত ৪৬ রানের ইনিংস খেলে দলকে সহজ জয় এনে দেন। তার ইনিংসে ছিল শক্তিশালী ড্রাইভ এবং নিয়ন্ত্রিত শট, যা শ্রাচী বোলারদের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। ত্রিশিতা সরকারের ৩৩ রানের ইনিংস তনুশ্রীর সঙ্গে মিলে একটি শক্তিশালী জুটি গড়ে, যা ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
শ্রাচী রাঢ় টাইগার্সের পারফরম্যান্স
শ্রাচী রাঢ় টাইগার্সের ব্যাটিং ইনিংসে বৃষ্টি মাজির ২৩ রান ছাড়া অন্য কোনো ব্যাটার উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেননি। তাদের বোলিং ইউনিটও মুর্শিদাবাদের ব্যাটারদের থামাতে ব্যর্থ হয়। পিয়ালি ঘোষ এবং পায়েল ভাখরিয়া একটি করে উইকেট নিলেও, তাদের বোলিংয়ে ধারাবাহিকতার অভাব ছিল। দলটির কোচ বলেন, “আমাদের ব্যাটিংয়ে আরও ধারাবাহিকতা প্রয়োজন। পরবর্তী ম্যাচে আমরা ফিরে আসব।”
লিগের গুরুত্ব
বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগ (Bengal Pro t20) বাংলার ক্রিকেটে নতুন প্রতিভা আবিষ্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। মহিলা বিভাগে এই টুর্নামেন্টটি স্থানীয় খেলোয়াড়দের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উঠে আসার সুযোগ করে দিচ্ছে। মুর্শিদাবাদ কুইন্সের এই জয় তাদের টুর্নামেন্টে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে এবং তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য উৎসাহের উৎস হয়ে উঠেছে।
মুর্শিদাবাদ কুইন্সের এই জয় বেঙ্গল প্রো টি-২০ লিগের দ্বিতীয় মরসুমে তাদের শক্তিশালী অবস্থান প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রতিভা রানার বোলিং এবং তনুশ্রী সরকারের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দলের জয়ের মূল চাবিকাঠি। এই ম্যাচটি বাংলার মহিলা ক্রিকেটের সম্ভাবনা এবং প্রতিভার প্রমাণ। টুর্নামেন্টের আগামী ম্যাচগুলোতে মুর্শিদাবাদ কুইন্সের এই গতি ধরে রাখার প্রত্যাশা করছেন সমর্থকরা।