মঙ্গলবার থেকে উত্তরাখণ্ডে শুরু হয়েছে জাতীয় গেমস (National Games)। এরই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) মুখে উঠে এল ২০৩৬ অলিম্পিক (2036 Olympics) আয়োজনের কথা। তিনি স্পষ্টত জানিয়ে দেন, ভারত ২০৩৬ অলিম্পিক আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই ভারতের অলিম্পিক সংস্থা আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে, যাতে দেশের পক্ষে আয়োজক দেশের দাবি জানানো হয়েছে।
পাকিস্তান নয় ভেন্যু বদল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির! পদত্যাগ শাহের দলে
দেশের মাঠিতে অলিম্পিক আয়োজন কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, যদি ভারতের মাটিতে ২০৩৬ অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হয়। তবে তা দেশের খেলাধুলাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে। এর মাধ্যমে কেবলমাত্র অ্যাথলিটদের জন্য উন্নত পরিকাঠামো তৈরি করা সম্ভব হবে না, বরং পুরো দেশের ক্রীড়া পরিবেশে একটি বিপ্লব আসবে।
খেলাধুলার উন্নতির পথে ভারতের আকাঙ্ক্ষা
মোদি তার বক্তব্যে আরও বলেন, “আমরা ২০৩৬ অলিম্পিক আয়োজনের চেষ্টা করছি, কারণ এটা ভারতীয় খেলাধুলার জন্য এক বিরাট সুযোগ হতে পারে। অলিম্পিক আয়োজনের মাধ্যমে সারা পৃথিবী ভারতকে একটি খেলাধুলার পরাশক্তি হিসেবে দেখতে পারবে।”
অলিম্পিক আয়োজনের মাধ্যমে দেশের ক্রীড়া পরিকাঠামোর উন্নতি হবে। যার মাধ্যমে অ্যাথলিটদের জন্য সেরা প্রশিক্ষণের সুযোগ তৈরি হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভারতীয় খেলোয়াড়রা নিজেদের প্রমাণ করতে পারবেন। এর ফলে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন প্রাণসঞ্চার ঘটবে, যা একদিকে যেমন খেলোয়াড়দের উন্নতি ঘটাবে। তেমনি দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে খেলার প্রতি আগ্রহও বাড়াবে।
চিন্তায় অস্কার, মুম্বই ম্যাচে ছিটকে গেল এক ফুটবলার
অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক একসাথে আয়োজনের পরিকল্পনা
ভারত শুধু ২০৩৬ অলিম্পিক আয়োজনের জন্য পরিকল্পনা করছে না, বরং প্যারালিম্পিক আয়োজনেরও কথা ভাবছে। ভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনে এক নতুন চ্যালেঞ্জ হতে পারে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদির মতে, এটি দেশের জন্য এক অনন্য সুযোগ। প্যারালিম্পিক আয়োজনের মাধ্যমে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়দের জন্য এক বড় মঞ্চ তৈরি হবে, যা তাদের দক্ষতা প্রদর্শন করার একটি সুযোগ দেবে এবং সমাজে তাদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল মনোভাব সৃষ্টি হবে।
মোদি তার বক্তব্যে বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, খেলাধুলা একটি দেশের উন্নতির অন্যতম সহায়ক। দেশের জনগণের মধ্যে ঐক্য গড়ার একটি মাধ্যমও এটি।” ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর স্লোগানটির সাথে এই বক্তব্যের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এর ফলে ভারত বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং ঐক্যের প্রতিনিধিত্ব করবে।
অলিম্পিক আয়োজনের সম্ভাব্য সুবিধা
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কুলদীপের রেকর্ড ভাঙলেন বরুন
২০৩৬ অলিম্পিক আয়োজনের ফলে শুধু খেলাধুলা নয়, দেশের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নতিও সম্ভব। অলিম্পিক আয়োজনের জন্য যে বিশাল পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে, তা দেশের নির্মাণ শিল্পকে নতুন জীবন দেবে। অলিম্পিকের প্রস্তুতি এবং আয়োজনের জন্য হাজার হাজার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, যা দেশের অর্থনীতি ও যুবক-যুবতীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। এছাড়া, ভারতীয় পর্যটন শিল্পও লাভবান হবে। দেশের প্রতিটি কোণে আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়া অবকাঠামো তৈরি হলে, বিশ্ববাসী ভারতকে নতুনভাবে চিনবে এবং দেশের অন্যান্য শিল্পগুলিতেও বিনিয়োগ বাড়বে।
রেকর্ড গড়ে শিল্ড জয়ের সম্ভাবনা বাড়াল বাগান
এছাড়া, অলিম্পিক আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বমানের ক্রীড়া কেন্দ্র তৈরি হবে। ভবিষ্যতে ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য এক বিশেষ সুবিধা প্রদান করবে। আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ শিবির, ফিজিক্যাল থেরাপি এবং উন্নত ক্রীড়া বিজ্ঞান ব্যবস্থাপনা ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য নতুন উচ্চতা অর্জন করতে সাহায্য করবে। সেক্ষেত্রে ২০৩৬ অলিম্পিক ভারতের জন্য এক স্বপ্নের মতো হতে পারে, যা শুধুমাত্র ক্রীড়াক্ষেত্রেই নয়, দেশের সামগ্রিক উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।