PM Modi Sikkim sports: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার গ্যাংটকে এক জনসভায় ঘোষণা করেন, “খেলাধুলার ক্ষেত্রে ভারত অচিরেই এক সুপার পাওয়ারে পরিণত হবে। এই স্বপ্নপূরণে সিকিম ও উত্তর-পূর্ব ভারতের যুবসমাজ একটি বড় ভূমিকা পালন করবে।” প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে সিকিম ও গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ক্রীড়া সম্ভাবনার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
মোদী বলেন, “সিকিম আমাদের উপহার দিয়েছে ফুটবল কিংবদন্তি ভাইচুং ভুটিয়া, অলিম্পিয়ান তরুন্দীপ রাই এবং জাতীয় গর্ব জয়কারী খেলোয়াড় যসলাল প্রধানের মতো তারকা। আমরা চাই সিকিমের প্রতিটি গ্রাম ও শহর থেকে উঠে আসুক একেকজন চ্যাম্পিয়ন। নতুন গ্যাংটক স্পোর্টস কমপ্লেক্স হবে আগামী দিনের তারকাদের জন্মস্থান।”
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, সিকিমকে ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের আওতায় বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে আধুনিক ক্রীড়া অবকাঠামো নির্মাণ, প্রশিক্ষক নিয়োগ, এবং ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণের জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মোদী বলেন, “খেলো ইন্ডিয়া মিশনের মাধ্যমে আমরা চাইছি প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও উদীয়মান প্রতিভা উঠে আসুক, এবং তারা আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের সম্মান বৃদ্ধি করুক।”
তিনি আরও বলেন, “সিকিমের যুবসমাজে যে উদ্দীপনা ও উৎসাহ রয়েছে, তার ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। এই যুব শক্তিই ভবিষ্যতে ভারতকে অলিম্পিকের মঞ্চে পৌঁছে দেবে। তাঁদের সংকল্প, পরিশ্রম এবং আত্মবিশ্বাসই হবে ভারতের ক্রীড়া বিপ্লবের চালিকাশক্তি।”
গ্যাংটকের নতুন স্পোর্টস কমপ্লেক্স প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই আধুনিক ক্রীড়াঙ্গন শুধু খেলার ময়দান নয়, এটি হবে নতুন সম্ভাবনার দ্বার। এখান থেকে উঠে আসবে আগামী দিনের বিশ্বমানের খেলোয়াড়। সরকার এই কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ, খাদ্য, আবাসন, চিকিৎসা এবং মানসিক সমর্থনের পূর্ণ ব্যবস্থা করেছে।”
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, “উত্তর-পূর্ব ভারতের যুবসমাজে রয়েছে অমিত সম্ভাবনা। তাঁদের গতি, চপলতা, অধ্যবসায় এবং খেলাধুলার প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে দিয়েছে যে সঠিক পরিকাঠামো ও সুযোগ পেলে এই অঞ্চলই ভারতের ক্রীড়া মানচিত্রে নেতৃত্ব দেবে।”
তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধুই পদক জয় নয়, বরং খেলাধুলাকে প্রতিটি ভারতীয়ের জীবনের অংশ করে তোলা। প্রতিটি শিশুর মধ্যে যেন থাকে একটি খেলার প্রতি আগ্রহ, প্রতিটি পরিবারে যেন উৎসাহ দেওয়া হয় খেলাধুলার প্রতি — সেটাই আমাদের ‘নতুন ভারত’-এর ক্রীড়া দর্শন।”
মোদী জানান, ভারত সরকার দেশের প্রতিটি রাজ্যে খেলাধুলা প্রসারে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। নতুন স্টেডিয়াম, অ্যাকাডেমি, এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। ক্রীড়াবিদদের আর্থিক সহায়তা ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে উৎসাহ দিচ্ছে সরকার।
তিনি তাঁর ভাষণের শেষে বলেন, “যদি সঠিক পরিকল্পনা ও ইচ্ছাশক্তি থাকে, তবে সিকিমের প্রতিটি শিশু হতে পারে আগামী দিনের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন। ভারত এখন শুধু দেখছে না, ভারত প্রস্তুত হচ্ছে — বিশ্ব ক্রীড়া মানচিত্রে শীর্ষে ওঠার জন্য। আর সেই যাত্রার প্রথম সারিতে থাকবে আমাদের সিকিম ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল।”
প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তা সিকিমবাসীর মধ্যে বিপুল উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। গ্যাংটকের নতুন ক্রীড়া কমপ্লেক্সকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন আশা, যার মধ্যে রয়েছে ভবিষ্যতের এক উজ্জ্বল ভারতীয় ক্রীড়াজগতের স্বপ্ন।