পাক বয়কট বিসিসিআই এর, দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে ত্রিদেশীয় সিরিজ পিসিবি র

এশিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৫ নিয়ে তীব্র অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত (BCCI) উত্তেজনার কারণে এই টুর্নামেন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি,…

BCCI boycott pakistan from Asia cup

এশিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৫ নিয়ে তীব্র অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত (BCCI) উত্তেজনার কারণে এই টুর্নামেন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি, ইংল্যান্ড ও ভারতের মধ্যে লিডসে চলটেড থাকা প্রথম টেস্টের লাইভ সম্প্রচারের সময় এশিয়া কাপের একটি প্রোমো সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এই প্রোমোতে ভারতের (BCCI) টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব, শ্রীলঙ্কার চারিথ আসালাঙ্কা এবং বাংলাদেশের নাজমুল হোসেন শান্তকে দেখানো হয়েছে। এশিয়া কাপের আয়োজন সেপ্টেম্বরে ভারতের মাটিতে হওয়ার কথা থাকলেও, ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই) এই টুর্নামেন্ট বয়কট করতে পারে বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। তবে, বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া এই গুঞ্জনকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

   

এশিয়া কাপ নিয়ে বিতর্ক (BCCI)

এশিয়া কাপের (BCCI) আয়োজন নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার কারণে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) বর্তমানে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) প্রধান মোহসিন নকভির নেতৃত্বে পরিচালিত হচ্ছে, যিনি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও।

মে মাসে, ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর ছড়িয়েছিল যে বিসিসিআই এসিসি আয়োজিত সব টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়াতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে মহিলা উদীয়মান দলের এশিয়া কাপ এবং পুরুষদের এশিয়া কাপ। এই সিদ্ধান্তের পেছনে মোহসিন নকভির এসিসি নেতৃত্ব এবং জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতি জড়িয়ে আছে।

তবে, বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া ১৯ মে এক বিবৃতিতে বলেন, “এশিয়া কাপ বা অন্য কোনো এসিসি ইভেন্ট নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এই ধরনের খবর সম্পূর্ণ কাল্পনিক এবং ভিত্তিহীন।” তিনি জানান, বিসিসিআই বর্তমানে ইংল্যান্ড সফরে মনোযোগী।

এই প্রোমোতে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের অধিনায়কদের দেখানো হলেও পাকিস্তানের কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না, যা টুর্নামেন্টের আয়োজন নিয়ে আরও জল্পনা বাড়িয়েছে। সমর্থকরা মনে করছেন, ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ছাড়া এশিয়া কাপের আর্থিক ও বাণিজ্যিক গুরুত্ব কমে যাবে।

পিসিবি’র ত্রিদেশীয় সিরিজ পরিকল্পনা

এশিয়া কাপের (BCCI) অনিশ্চয়তার মধ্যে পিসিবি বিকল্প পরিকল্পনা হিসেবে আফগানিস্তান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) সঙ্গে একটি ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ আয়োজনের কথা ভাবছে। পিসিবি’র একটি সূত্র জানিয়েছে, “ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনার কারণে সেপ্টেম্বরে ভারতে এশিয়া কাপ আয়োজন সম্ভব নাও হতে পারে। তাই আমরা একটি ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছি।”

সূত্রটি আরও জানায়, এশিয়া কাপ বাতিল বা স্থগিত হলে পাকিস্তান আগস্টে আফগানিস্তান ও ইউএই’র সঙ্গে এই সিরিজ আয়োজন করতে চায়। প্রাথমিকভাবে পাকিস্তানে এই সিরিজ আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও, ইউএই’তে এটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পিসিবি ইতিমধ্যে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ও ইউএই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।

Advertisements

মোহসিন নকভি, যিনি এসিসি’র প্রেসিডেন্ট, শীঘ্রই এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে একটি বৈঠক ডাকবেন। সূত্র জানায়, “বিসিসিআই এখনো ভারতে এশিয়া কাপ আয়োজনের ব্যাপারে নিশ্চিত করেনি। এসিসি কাউন্সিলের বৈঠকে টুর্নামেন্টের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।”

আর্থিক প্রভাব

এশিয়া কাপের (BCCI) আয়োজন বাতিল হলে এসিসি এবং পিসিবি’র উপর বড় আর্থিক প্রভাব পড়বে। ভারত এশিয়া কাপের প্রধান বাণিজ্যিক আকর্ষণ, কারণ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বিশ্বব্যাপী দর্শক ও স্পনসরদের আকর্ষণ করে। ২০২৪ সালে সনি পিকচার্স নেটওয়ার্কস ইন্ডিয়া (এসপিএনআই) আট বছরের জন্য ১৭০ মিলিয়ন ডলারে এশিয়া কাপের মিডিয়া রাইটস কিনেছিল। ভারতের অনুপস্থিতিতে এই চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করতে হতে পারে।

পিসিবি’র জন্য আর্থিক ক্ষতি আরও গুরুতর। একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, এশিয়া কাপ ও আইসিসি ইভেন্টে ভারতের অংশগ্রহণ থেকে পিসিবি প্রতি চক্রে ১৬৫-২২০ কোটি টাকা আয় করে। ভারত বয়কট করলে এই আয় কমে যাবে, যা পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য বড় ধাক্কা।

ITR Filing Deadline: ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দিলে সুদ মুকুব হবে? জানুন নিয়ম

ইউএই’তে এশিয়া কাপ?

এক্স-এ পোস্ট অনুযায়ী, এশিয়া কাপ ভারতের পরিবর্তে ইউএই’তে আয়োজিত হতে পারে। একটি পোস্টে বলা হয়েছে, “এশিয়া কাপ সেপ্টেম্বরে ভারতের পরিবর্তে ইউএই’তে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” আরেকটি পোস্টে জানানো হয়েছে, এসিসি ইউএই’তে টুর্নামেন্ট স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তবে, এই খবর এখনো নিশ্চিত হয়নি। ভারত অংশ না নিলে টুর্নামেন্টের আকর্ষণ ও আর্থিক সম্ভাবনা কমে যাবে। ২০২৩ সালে এশিয়া কাপে ভারত পাকিস্তানে যায়নি, ফলে হাইব্রিড মডেলে টুর্নামেন্ট শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

এশিয়া কাপ ২০২৫ নিয়ে অনিশ্চয়তা অব্যাহত রয়েছে।(BCCI) ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনা এবং মোহসিন নকভির এসিসি নেতৃত্ব এই টুর্নামেন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিসিসিআই’র অংশগ্রহণ ছাড়া এশিয়া কাপ আয়োজন সম্ভব নাও হতে পারে। পিসিবি’র ত্রিদেশীয় সিরিজ পরিকল্পনা এবং ইউএই’তে টুর্নামেন্ট স্থানান্তরের সম্ভাবনা এই জটিলতার বিকল্প সমাধান হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভারতীয় সমর্থকদের মধ্যে এশিয়া কাপের প্রোমো নিয়ে কৌতূহল থাকলেও, টুর্নামেন্টের ভবিষ্যৎ এসিসি’র আসন্ন বৈঠকের উপর নির্ভর করছে।