ভিসা জটে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে কপাল পুড়ল পাকিস্তানের

ভারত-পাকিস্তান (India vs Pakistan) সম্পর্কের প্রভাব সবসময়ই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্পষ্টভাবে দেখা যায়। বিশেষত যখন তা খেলার মাঠে প্রতিফলিত হয়। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি সহ নানা ধরনের…

Pakistan Kho Kho World Cup Team

ভারত-পাকিস্তান (India vs Pakistan) সম্পর্কের প্রভাব সবসময়ই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্পষ্টভাবে দেখা যায়। বিশেষত যখন তা খেলার মাঠে প্রতিফলিত হয়। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি সহ নানা ধরনের খেলার মাঠে দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের প্রভাব দৃশ্যমান। এমনকি আন্তর্জাতিক খেলাধুলায় (International Sports) অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও এই রাজনৈতিক সংকট প্রভাব ফেলতে থাকে। সম্প্রতি, খো খো বিশ্বকাপে (Kho Kho World Cup) পাকিস্তান (Pakistan) দলের অংশগ্রহণ না করার ঘটনা একে নতুনভাবে উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এই ঘটনাটি শুধুমাত্র খেলার উপরই নয়, ভারত (India) পাকিস্তান সম্পর্কের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটেও একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।

ভ্যেনু বদল, সরকারি শিলমোহর পড়ল ইস্ট-মোহন লড়াইয়ের

   

ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক কখনোই মসৃণ ছিল না। তবে, ২০২৩ সালে কিছুটা আলাদা চিত্র দেখা যায়, যখন পাকিস্তান তাদের হকি ও ক্রিকেট দল ভারতে পাঠায় এবং সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে অংশ নিতে পাকিস্তান দল ভারতে আসে। এই সময়ে ভারতও ব্রিজ এবং টেনিস দলকে পাকিস্তানে পাঠায়। এমনকি বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে রজার বিনি ও রাজীব শুক্লা পাকিস্তান সফর করেন। এই সময়ে সম্পর্কের কিছুটা উষ্ণতা দেখা গেলেও, খো খো বিশ্বকাপের মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে কূটনৈতিক জটিলতা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।

গোয়ার কাছে পরিজিত হয়ে চেন্নাই ম্যাচে এই লক্ষ্য সার্জিও লোবেরার

২০২৫ সালের জানুয়ারির ১৩ তারিখ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত নিউ দিল্লিতে আয়োজিত হতে চলেছে প্রথম খো খো বিশ্বকাপ। এদিকে, পাকিস্তান দল ভারতে এসে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। জানা গিয়েছে পাকিস্তান দল ভিসা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ভারতে আসতে পারছে না। খো খো ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট সুধাংশু মিত্তল জানিয়েছেন যে, পাকিস্তান দল এখনও তাদের ভিসা অনুমোদন পায়নি। এই সমস্যার কারণে পাকিস্তান দল প্রথম ম্যাচে ভারত-এ পাকিস্তান খেলতে পারবে না। তাদের অনুপস্থিতি এই প্রতিযোগিতায় ভারত-নেপাল ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে।

খো খো বিশ্বকাপের আয়োজন নিয়ে তীব্র আগ্রহ থাকলেও, পাকিস্তানের অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত খেলোয়াড়দের জন্য অত্যন্ত হতাশার। পাকিস্তান দলের সদস্যরা যে ভিসা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, তা কেবল খেলার জন্য নয়, বরং দুই দেশের সম্পর্কের একটা নিদর্শন হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রকের মধ্যকার সমঝোতা প্রয়োজন, তবে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের সম্ভাব্য দলে সুযোগ শামি সহ কয়েকজনের

বিশ্বকাপে পাকিস্তান দল না থাকলে, প্রতিযোগিতায় মোট অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ৪০ থেকে কমে দাঁড়াবে ৩৯। খো খো ফেডারেশনের কর্মকর্তা গীতা সুদান জানিয়েছেন, “যখন আমরা সূচি তৈরি করি, তখন আশা করা হয়েছিল যে সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী হবে। কিন্তু এটি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তান দলের ভিসা আবেদন অনুমোদন করেনি। ফলে, পাকিস্তান দলের খো খো বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা কার্যত আর সম্ভব নয়।”

এই ঘটনা কেবল একটি খেলার ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। দুই দেশের সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিফলন। যখন কূটনৈতিক সম্পর্কের সমস্যা জটিল হয়, তখন এর প্রভাব খেলাধুলার মতো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও পড়ে। ক্রিকেটের মতো জনপ্রিয় খেলা যেখানে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে, সেখানে অন্যান্য খেলার ক্ষেত্রেও সেই প্রভাব পড়ে। ভারতে পাকিস্তান দলের খো খো বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে না পারা নিঃসন্দেহে এই সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন।

ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজে পিচ রিপোর্ট নিয়ে তথ্য ফাঁস আইসিসির

খো খো বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলের অনুপস্থিতি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তবে, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের এই প্রভাব কেবল খো খোতেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এটি ভবিষ্যতে আরও অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাতেও স্পষ্ট হয়ে উঠতে পারে। ভারত এবং পাকিস্তান উভয় দেশেই জনগণের মধ্যে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সম্পর্ক উন্নয়নের আশা ছিল, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে তা ব্যাহত হওয়া স্বাভাবিক।