বয়কটের ডাক দিয়ে বিপাকে পাকিস্তান! UAE ম্যাচ নিয়ে সিদ্ধান্ত পিসিবির

চলতি এশিয়া কাপে (Asia Cup) পাকিস্তান (Pakistan) ক্রিকেট দলকে ঘিরে একের পর এক নাটকীয় পরিস্থিতি জন্ম নিচ্ছে। রবিবার ভারত-পাক (India vs Pakistan) ম্যাচের পর থেকে…

Pakistan Boycott threat Asia Cup 2025 against UAE but PCB make dramatic situation

চলতি এশিয়া কাপে (Asia Cup) পাকিস্তান (Pakistan) ক্রিকেট দলকে ঘিরে একের পর এক নাটকীয় পরিস্থিতি জন্ম নিচ্ছে। রবিবার ভারত-পাক (India vs Pakistan) ম্যাচের পর থেকে শুরু হওয়া বিতর্ক মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চরমে পৌঁছায়, যখন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (PCB) হঠাৎ করেই ম্যাচ বয়কটের হুমকি দেয়। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে, এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল এশিয়া কাপ থেকে পাকিস্তান দল নিজেদের সরিয়েই নেবে। কিন্তু শেষমেশ, আর্থিক ক্ষতির ভয় এবং গ্রুপ পর্বে টিকে থাকার তাগিদে মাঠে নামতে একপ্রকার বাধ্য শাহিন আফ্রিদিরা।

হ্যান্ডশেক বিতর্কের সূত্রপাত

সবকিছুর সূত্রপাত গত রবিবার ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পর। ভারতের খেলোয়াড়রা পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক না করেই মাঠ ছাড়েন। এই ঘটনা ঘিরে ক্ষোভ প্রকাশ করে পিসিবি। তারা দাবি করে, ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট ভারতীয় বোর্ডের চাপে কাজ করেছেন এবং দুই দলের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন।

   

পিসিবি অভিযোগ করে, পাইক্রফ্টের এই ভূমিকা “ক্রিকেট স্পিরিট” এবং “এমসিসির আইন” লঙ্ঘন করেছে। এর ফলে পিসিবি চিঠি দিয়ে আইসিসির কাছে দাবি জানায়, পাইক্রফ্টকে এশিয়া কাপ থেকে বরখাস্ত করতে হবে। আইসিসি এই দাবি একেবারে খারিজ করে দেয় এবং জানিয়ে দেয় যে পাইক্রফ্টকে সরানোর কোনো প্রশ্নই ওঠে না।

ম্যাচ বয়কটের হুমকি

আইসিসির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে পিসিবি মঙ্গলবার সকালে পুনরায় চিঠি পাঠায়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, পাকিস্তান দলের কিট ব্যাগ বাসে তোলা হলেও পিসিবি নির্দেশ দেয়, কেউ হোটেল ছাড়বে না। এমনকি যারা বাসে উঠেছিলেন, তাদেরও নেমে হোটেলে ফিরে আসতে বলা হয়।

এসময় পাকিস্তানের দুই প্রাক্তন বোর্ড সভাপতি নাজিম শেঠি ও রামিজ রাজাকে ডেকে উচ্চপর্যায়ে বৈঠক করেন পিসিবি প্রধান ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মোহসিন নকভি। আলোচনার পর বয়কটের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে।

Advertisements

বাস্তবতা পাল্টে দিল সিদ্ধান্ত

তবে পরিস্থিতি পাল্টে যায় যখন আরব আমিরশাহি ওমানকে হারিয়ে গ্রুপের চিত্র জটিল করে তোলে। সুপার ফোরে যেতে হলে পাকিস্তানের জয় প্রয়োজন ছিল। বয়কট মানে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়া এবং প্রায় ১.৬ কোটি মার্কিন ডলার অর্থাৎ ১৪০ কোটি টাকার ক্ষতি। বর্তমান আর্থিক সঙ্কটে এত বড় ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া পিসিবির পক্ষে সম্ভব নয়।

এই বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে শেষ পর্যন্ত পিসিবি সিদ্ধান্ত নেয়, পাকিস্তান (Pakistan vs UAE) দল মাঠে নামবে। যদিও তারা ম্যাচ এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করে। ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিট নাগাদ তারা হোটেল ছাড়ে এবং রাত ৯টায় ম্যাচ শুরু হবে।

বর্তমানে পাকিস্তান সুপার ফোরে ওঠার জন্য মরিয়া। তবে একাধিক বোর্ড কর্মকর্তার মতে, “এ ধরনের ঘটনা প্রতিযোগিতার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। পাকিস্তানের উচিত ছিল কূটনৈতিক আলোচনা বজায় রেখে খেলায় মনোযোগ দেওয়া।”