ভুবনেশ্বরের (Bhubaneswar) কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে (Kalinga Stadium) এক অনবদ্য পারফরম্যান্সে জামশেদপুর এফসিকে (Jamshedpur FC) ৩-০ গোলে হারিয়ে সুপার কাপ ২০২৫ (Super Cup 2025) জয় করেছে এফসি গোয়া (FC Goa)। এই জয় শুধু একটি ট্রফিই নয়, বরং কোচ মানোলো মার্কুয়েজের (Manolo Marquez) সঙ্গে এক যুগের শেষকেও চিহ্নিত করল। বিদায়ী ম্যাচে ট্রফি জিতে নিজের শেষটা স্মরণীয় করলেন স্প্যানিশ কোচ। একইসঙ্গে নিশ্চিত করেছেন ২০২৫-২৬ মরসুমে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ টু-তে গোয়ার অংশগ্রহণ।
ইংল্যান্ড সফরে নেতৃত্ব বদলের সিদ্ধান্ত! নতুন ভূমিকায় এই তরুণ ক্রিকেটার
এই ম্যাচে বোরহা হেরেরা জোড়া গোল করে মূল নায়ক হন এবং দেন ড্রাজিচ তৃতীয় গোলটি করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ গোয়ার হাতে তুলে দেন। ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে কোচ মার্কুয়েজ জানান, “এই দলটা পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে দুর্দান্ত খেলেছে। তারা সত্যিকার অর্থেই শিরোপার যোগ্য দাবিদার।”
২০২৩ সালে হায়দরাবাদ এফসি ছেড়ে এফসি গোয়ায় যোগ দিয়েছিলেন এই স্প্যানিশ কোচ। তাঁর অধীনে দল পরপর দুইবার আইএসএল কাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল, যদিও ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যায়। তবে এই সুপার কাপ জয় সেই অপূর্ণতাকে অনেকটাই মিটিয়ে দেয়।
ঘরের মাঠে ইতিহাস গড়ার লক্ষ্যে সুনীল ছেত্রীদের উত্তরসূরিরা
তিনি আরও বলেন, “এটা শুধুই ট্রফির প্রশ্ন নয়। এই দলের ড্রেসিংরুমে যে বন্ধুত্ব এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা রয়েছে, সেটাই দলের সবচেয়ে বড় শক্তি। একসঙ্গে খেলতে খেলতে তারা শুধু সতীর্থ নয়, বন্ধু হয়ে উঠেছে। এমন পরিবেশ খুব কম ক্লাবে দেখা যায়।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আজকের দিনে খেলোয়াড়রা খুব সহজেই ক্লাব পরিবর্তন করে। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলছে, যদি একটি দলকে একসঙ্গে রাখা যায়, তাহলে পরের সিজনে ফলাফল আরও ভালো হয়। আমি মনে করি এই দলটা ভেঙে ফেলাটা হবে বড় ভুল।”
ছাঁটাইয়ের পথে দলের ধনী ক্রিকেটার! মরণ-বাঁচন লড়াই শেষে বার্তা মালিকের
মার্কুয়েজ স্পষ্ট করে দেন যে, এফসি গোয়ার সামনে এখন একটি সুযোগ রয়েছে ভারতের শীর্ষ ক্লাব হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার। “শিরোপার দিক থেকে হয়ত এই ক্লাবটা সেরা নয়। কিন্তু সংগঠনের দিক থেকে আমি বলব, এফসি গোয়াই সেরা। এখানে সবকিছু পেশাদার, খেলোয়াড়দের প্রতি সম্মান এবং সহযোগিতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে।”
স্প্যানিশ কোচের অধীনে এফসি গোয়া যেমন মাঠে উন্নতি করেছে, তেমনি ক্লাবের সংস্কৃতিতেও এক ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তার বিদায়ের খবর নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই সমর্থকদের মধ্যে একধরনের বিষণ্ণতা দেখা দিয়েছে। তবে তারা আশাবাদী যে ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার উপদেশ অনুযায়ী দলটির মূল কাঠামো ধরে রাখবে।
এখন সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ টুতে যোগ্যতা অর্জন করা। চার বছর পর আবারও মহাদেশীয় মঞ্চে ফিরছে এফসি গোয়া। দলটি যদি বর্তমান খেলোয়াড়দের ধরে রাখতে পারে, তাহলে সেই মঞ্চেও ভালো কিছু করা অসম্ভব নয়।
বাগানের ওপর ফিফার ‘নিষেধাজ্ঞা’ কোপ! কেন্দ্রবিন্দুতে অজি ফুটবলার
মানোলো মার্কুয়েজে নিজের বিদায়ী ভাষণে বলেন, “আমি এখন থেকে পুরোপুরি ভারতীয় জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করব। তবে গোয়া এবং এই খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাটানো সময় আমি সারাজীবন মনে রাখব।”
একজন সফল কোচের বিদায় সবসময়ই আবেগময় হয়। তবে তাঁর রেখে যাওয়া বার্তা—”এই দলটাকে ভাঙবেন না”—নিঃসন্দেহে ক্লাব কর্তৃপক্ষ ও সমর্থকদের জন্য এক বড় শিক্ষা ও দায়িত্বের কথা।