ইস্ট বেঙ্গলের (East Bengal) কোচ অস্কার ব্রুজোর (Oscar Bruzon) জন্য চলতি মরশুম বেশ সমস্যাযুক্ত হয়ে উঠেছে। খেলোয়াড়দের চোটের কারণে প্রতিটি ম্যাচে নতুন কৌশল আঁকতে হচ্ছে। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই দলের কৌশল পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। কখনও কখনও অচেনা পজিশনে খেলোয়াড়দের নামাতে হচ্ছে। তবে চলতি মরশুমে চোটের সমস্যাটা আরও বড় হয়ে উঠেছে। বিশেষত দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি খেলোয়াড় হিজাজি মাহের এবং ক্লেটন সিলভা ইনজুরিতে পড়ায়।
হিজাজি মঙ্গলবার অনুশীলনের সময় তার হাঁটুতে চোট লাগে। এবং ক্লেটন সিলভা কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে গত ম্যাচে পেশিতে চোট পেয়েছেন। এই দুজনেই মুম্বাই সিটির বিরুদ্ধে শুক্রবারের ম্যাচে খেলতে পারবেন না। তবে চোটের কারণে তাদের মাঠের বাইরে থাকার সময় এখনো পরিষ্কার নয়।
এ বিষয়ে ব্রুজো জানান, “আমাকে প্রতিটি ম্যাচের জন্য কৌশল পুনরায় চিন্তা করতে হচ্ছে। আমি প্রতি সপ্তাহে দলের সামর্থ্য এবং প্রতিপক্ষের শক্তি ও দুর্বলতার উপর ভিত্তি করে পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। আমি সাধারণত সিজনে একটি বা দুটি সিস্টেমে খেলতে পছন্দ করি কিন্তু ইতিমধ্যে আমরা চারটি আলাদা কৌশল ব্যবহার করেছি।”
ব্রুজো আরও বলেন, “বর্তমানে আমরা খেলোয়াড়দের চোটের মূল্যায়ন করছি। আমরা চাইছি যাতে চোটের প্রকৃতি তীব্রতা এবং সেরে ওঠার সময়সূচি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।”
তবে তিনি আশাবাদী যে শীঘ্রই পুরো মূল্যায়ন শেষে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।
আইএসএল প্লে-অফে আশা ক্ষীণ
এই চোটের কারণে ইস্ট বেঙ্গলের আইএসএল প্লে-অফে যাওয়ার আশা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে শুধুমাত্র তিনজন বিদেশি খেলোয়াড়—রিচার্ড সেলিস, ডিমিত্রিওস ডায়ামান্টাকোস এবং হেক্টর ইউসতে —ম্যাচে অংশগ্রহণের জন্য উপলব্ধ। পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে ।
পরবর্তী চ্যালেঞ্জ এফসি কাপ
মার্চে আসন্ন এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ কোয়ার্টার-ফাইনালের জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে। ক্লাবকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি হিজাজি এবং ক্লেটন সিলভা ঠিক সময়ে সুস্থ না হন তাহলে তাদের বিকল্প হিসেবে নতুন খেলোয়াড় আনতে হবে।
ব্রুজো বলেন,“ক্লাব ম্যানেজমেন্ট পুরো পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে এবং সিদ্ধান্ত নিতে যা যা প্রয়োজন তা নেবে। আমাদের সামনে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ আছে তাই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হচ্ছে। ”
চোটের কারণ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ব্রুজো নিশ্চিত করেছেন যে এই চোটগুলো ফিটনেসজনিত সমস্যা নয় বরং দুর্ঘটনাজনিত বা পুরনো সমস্যার কারণে ঘটেছে।
তিনি বলেন,“এই চোটগুলো ফিটনেসের কারণে হয়নি। বেশিরভাগ চোটই ট্রমা বা ইন-গেম দুর্ঘটনা থেকে ঘটেছে। আমাদের দুঃখজনক মরশুম যাচ্ছে।”
তবে সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ব্রুজো আশাবাদী। তিনি বিশ্বাস করেন চোট বা সমস্যাগুলির প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ দিলে দল আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। পরিবর্তে তিনি চান খেলোয়াড়রা দৃঢ় মানসিকতা, সংকল্প এবং লড়াইয়ের মানসিকতা প্রদর্শন করুক। যা ইস্ট বেঙ্গলের অতীতের সাফল্যের মূল কারণ।
ব্রুজো বলেন,”যদি আমরা দৃঢ়তা এবং সংকল্প ধরে রাখতে পারি তবে আমরা সিজনটি সেরা উপায়ে শেষ করতে পারব। তিন দিনের অনুশীলন শেষে আমাদের দল প্রস্তুত এবং মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম।”
এখন ইস্ট বেঙ্গল ১৩ দলের লীগে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে ১১তম অবস্থানে রয়েছে। অন্যদিকে মুম্বাই সিটি ১৭ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ব্রুজোর দল কীভাবে পরবর্তী ম্যাচে নিজেদের ঘুরে দাঁড়াতে পারে তা সময়ই বলবে।