ফের জয় ছিনিয়ে নিল ইমামি ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। হতাশাজনক পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ শুরু করলেও সময়ের সাথে সাথে বদলে গিয়েছে গোটা পরিস্থিতি। নব নিযুক্ত কোচ অস্কার ব্রুজনের হাতে ধরে একেবারেই বদলে গিয়েছে কলকাতা ময়দানের এই প্রধান। তাঁর তত্ত্বাবধানেই গত ম্যাচে নিজেদের ঘরের মাঠে শক্তিশালী নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে পরাজিত করেছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। যা নিঃসন্দেহে বাড়তি অক্সিজেন যুক্ত করেছিল দলের ফুটবলারদের মধ্যে। শনিবার সেই জয়ের ধারা বজায় রাখাই অন্যতম চ্যালেঞ্জ ছিল সকলের কাছে।
সেইমতো ইন্দোর স্টেডিয়ামে শক্তিশালী চেন্নাইয়িন এফসির বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। নিজেদের ঘরের মাঠে চেন্নাইয়িন এফসি যে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে সেটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে পাল্টা লড়াই করতে ছাড়েনি বাংলার এই ফুটবল ক্লাব। সম্পূর্ণ সময়ের শেষে ২-০ গোলের ব্যবধানে সেই ম্যাচ জিতে নিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। এদিন দলের হয়ে গোল করলেন যথাক্রমে পিভি বিষ্ণু এবং জিকসন সিং। এই জয়ের সুবাদে ৯ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের ১১ নম্বরে উঠে আসলো ইস্টবেঙ্গল।
বলাবাহুল্য, এদিন ম্যাচের শুরুটা খুব একটা ভালো ছিল না লাল-হলুদের কাছে। মিস পাসের পাশাপাশি যথেষ্ট নিষ্ক্রিয় দেখাচ্ছিল দলের উইঙ্গার নাওরেম মহেশ সিংদের। সেই সুযোগ নিয়েই ব্যাপক চাপ বাড়াতে শুরু করেছিল কোনড় শিল্ড থেকে শুরু করে ড্যানিয়েল চিমা চুকুরা। কিন্তু আনোয়ার আলি এবং হিজাজি মাহেরের মতো দক্ষ ডিফেন্ডারদের উপস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে গোটা পরিস্থিতি। তারপরেও একবার গোলের সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন চিমা চুকু। সেবার গোলরক্ষক প্রভসুখান সিং গিলের দক্ষতায় অক্ষত থাকে লাল-হলুদের গোলপোস্ট। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই বদলে যাওয়া ইস্টবেঙ্গলের সাক্ষী থাকে গোটা স্টেডিয়াম।
দ্বিতীয়ারদের প্রথম কোয়ার্টারেই প্রথম গোল তুলে নেয় মশাল ব্রিগেড। ম্যাচের ৫৫ মিনিটের মাথায় বল নিয়ে উইং ধরে সোজা প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে ঢুকে পড়েন স্প্যানিশ তারকা সাউল ক্রেসপো। তাঁর বাড়ানো বল এগিয়ে এসে সোজা গোলে ঠেলে দেন দলের তরুণ ফুটবলার পিভি বিষ্ণু। তারপর থেকেই সময় যত এগিয়েছে ততই আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে, ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের। আক্রমণভাগকে শক্তিশালী করতে প্রতিপক্ষ কোচ জর্ডান উইলমার গিল এবং কিয়ান নাসিরিকে মাঠে আনলেও কাজে আসেনি সেই পরিকল্পনা।
অপরদিকে চোটের কারণে ইতিমধ্যেই মাঠ ছাড়তে হয় স্প্যানিশ তারকা সাউল ক্রেসপোকে। বদলি হিসেবে মাঠে আসেন ভারতীয় মিডফিল্ডার জিকসন সিং। ম্যাচের শেষ কোয়ার্টারে তাঁর দুরপাল্লার শট আটকাতে ব্যর্থ থাকেন চেন্নাইয়িন গোলরক্ষক মহম্মদ নাওয়াজ। যারফলে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় ইস্টবেঙ্গল। নব্বই মিনিটের পর অতিরিক্ত ছয় মিনিট চেন্নাইয়িন দল লড়াই করলেও গোলের মুখ খোলা সম্ভব হয়নি তাঁদের পক্ষে।
অন্যদিকে, অস্কার ব্রুজনের দায়িত্ব গ্ৰহণের পর থেকেই যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে লাল-হলুদের বহু তরুণ প্রতিভা। যার মধ্যে অন্যতম পিভি বিষ্ণু। সুযোগ পেলে তিনি যে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন তাঁর ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন স্প্যানিশ কোচ। সময়ের সাথে সাথেই তাঁর প্রমাণ মিলছে হাতেনাতে।