স্বাধীনতার স্বাদ, পরাধীনতার শেকল ছিঁড়ে আজই আজাহারদের বিরুদ্ধে মাঠে নামে প্রোটিয়ারা

১৯৯১ সালের ১০ নভেম্বর ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) ক্রিকেট (Cricket ) ইতিহাসের এক স্মরণীয় দিন। এই দিনেই দক্ষিণ আফ্রিকা ২১ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে…

South Africa Cricket Team Returned To International Cricket

short-samachar

১৯৯১ সালের ১০ নভেম্বর ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) ক্রিকেট (Cricket ) ইতিহাসের এক স্মরণীয় দিন। এই দিনেই দক্ষিণ আফ্রিকা ২১ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছিল (Returned To International Cricket), যা ছিল তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। ১৯৭০ সালে জাতিগত বৈষম্যের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তখন দক্ষিণ আফ্রিকায় কোনো নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর ক্রিকেটার জাতীয় দলের অংশ ছিলেন না, যা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মান ও আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ছিল।

   

ঘরের মাঠে পাকিস্তানের কাছে ওয়ানডে সিরিজে পরাজয় অস্ট্রেলিয়ার

দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা ১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে কিছুটা শিথিল হতে শুরু করে, যখন দেশটি জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করেছিল। ১৯৯১ সালে, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ড আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের বর্তমানে আইসিসি (ICC) কাছ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে অনুমতি পায়। একই বছরের প্রথম দিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa) তাদের পুনরায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে (International Cricket) পদার্পণের সূচনা করে একটি সফর আয়োজন করে ভারতে (India), যেখানে তারা তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে (IND vs SA)। এই সফরের প্রথম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় কলকাতার ঐতিহাসিক ইডেন গার্ডেন্সে, ১০ নভেম্বর ১৯৯১ তারিখে।

টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানায় ভারত অধিনায়ক আজাহার উদ্দিন। নিষেধাজ্ঞার পর প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ম্যাচে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের দলে ১০ জন নতুন খেলোয়াড় নিয়ে মাঠে নামে। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ক্লাইভ রাইস ছিলেন একেবারে অনভিজ্ঞ দলের নেতা। দক্ষিণ আফ্রিকা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ১৭৭ রান সংগ্রহ করে। এর মধ্যে কেপলার ওয়েসেলস ৫০ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করেন, এবং অ্যাড্রিয়ান কুইপার ৪৭ রান করে তার কাছাকাছি ছিলেন। ভারতের পক্ষে কপিল দেব ও মনোজ প্রভাকর দুটি করে উইকেট নেন।

ভারত ১৭৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কিছুটা বিপদে পড়ে। রবি শাস্ত্রী, নবজোত সিং সিধু ও সঞ্জয় মঞ্জরেকার এক অল্প রানেই আউট হয়ে যান। তবে, এরপর ভারতের দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান, সাচিন তেন্ডুলকর (৬২ রান) ও প্রভিন অমরে (৫৫ রান) এক টানা দৃঢ় ব্যাটিং করে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন। তারা ৪০.৪ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান সংগ্রহ করে ম্যাচটি জয়লাভ করে।

এই ম্যাচে ভারতের ৩ উইকেটে জয় লাভ করলেও, দক্ষিণ আফ্রিকা দলের প্রত্যাবর্তন ছিল তাদের জন্য অনেক বড় সাফল্য। এর মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের নতুন সূচনা ঘোষণা করে। পরবর্তী ম্যাচে ভারত দ্বিতীয় ওডিআইতেও জয়ী হয়, কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ ম্যাচে ৮ উইকেটের জয় নিয়ে সিরিজ শেষ করে, যা তাদের জন্য অনেকটা আত্মবিশ্বাসের সূচনা হয়।

KKR : মেগা নিলামে কেকেআরের লক্ষ্যে ৫ ক্রিকেটারের তালিকায় দুটি বড় নাম কারা?

এই সফরের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বিশ্বে তাদের পুনরায় প্রবেশ ঘোষণা করল। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসে এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে, যা তাদের জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে ইতিহাসের পাতায় চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।