১৩৪তম ডুরান্ড কাপের ফাইনাল (Durand Cup Final) যেন ভারতীয় ফুটবলের রূপকথার এক অধ্যায়। একদিকে অভিজ্ঞ আইএসএল দল এবং গতবারের চ্যাম্পিয়ন নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি। অন্যদিকে ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন নিয়ে প্রথমবার ফাইনালে পা রাখা নবাগত ডায়মন্ড হারবার এফসি। শনিবার সল্টলেক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হাইভোল্টেজ ফাইনাল ম্যাচের প্রথমার্ধে এগিয়ে রইল জন আব্রাহামের মালিকাধীন দল। গোল করলেন আসীর আখতার এবং পার্থিব গগৈই।
ম্যাচের শুরু থেকেই উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। গ্যালারি ভরিয়ে উপস্থিত ছিলেন কয়েক হাজার ফুটবলপ্রেমী। এদিন মূলত আলাদিন আজারাই বনাম লুকা মাজসেন, দুই তারকা স্ট্রাইকারের দ্বৈরথ ছিল নজরকাড়া। তবে শুরুতেই ম্যাচের রাশ নিজেদের দখলে নেয় নর্থইস্ট। ৪ মিনিটেই আলাদিন আজারাইয়ের শক্তিশালী শট রক্ষা করেন ডায়মন্ডের গোলরক্ষক মিরশাদ। ফিরতি বলে পার্থিব গগৈয়ের শটও দক্ষতার সঙ্গে ফেরান তিনি।
খেলার গতি যত এগোতে থাকে, ততই জমে ওঠে লড়াই। মাঝমাঠে সংঘর্ষ, সাইডলাইনে গতি এবং উইং দিয়ে আক্রমণ। সব দিক থেকেই দুই দল নিজেদের মেলে ধরার চেষ্টা করে। ১৭ মিনিটে গিরিক খোসলাকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন নর্থইস্টের রিদিম তলাং। এরপর থেকেই একটু একটু করে গতি বাড়ায় ডায়মন্ড। ২৩ মিনিটে গিরিকের সেন্টারে জবি জাস্টিন হেড করলেও গোল করতে ব্যর্থ হন।
তবে ৩০ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় নর্থইস্ট। কর্নার থেকে বল পেয়ে আলাদিন আজারাই বক্সে ডান দিকে পাস বাড়ান। সেই বল ধরে শট নেন, যা রক্ষা করলেও ধরে রাখতে পারেননি মিরশাদ। বল পেয়ে গোললাইনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আসীর আখতার সহজেই শট নিয়ে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ১-০ ব্যবধানে।
যদিও ৪৩ মিনিটে অঘটন ঘটানোর সুযোগ এসেছিল ডায়মন্ডের সামনে। রবিলাল মান্ডীর ফ্রিক কিক, সেই বল ধরে সেন্টার নেন স্যামুয়েল। বাঁদিকে বক্সের ভিতরে হেড নেন মিকেল কোর্তাজা। কিন্তু বল যায় বাইরে।
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে পার্থিব গগৈয়ের দুর্দান্ত গোল ব্যবধান দ্বিগুণ করে দেয়। মাঝমাঠ থেকে আলাদিনের বাড়ানো বল নিয়ে বাঁ দিক দিয়ে ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে দুর্দান্ত ফিনিশে গোল করেন পার্থিব। ২-০ তে প্রথমার্ধ শেষ করে আত্মবিশ্বাসী নর্থইস্ট ইউনাইটেড।
শক্তির দিক থেকে পিছিয়ে থেকে খেলতে নেমেছিল কিবু বিকুনার দল। কিন্তু অভিজ্ঞতার বিচারে এগিয়ে থেকে বাজিমাত করল নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড।দ্বিতীয়ার্ধে এবার কেমন পারফরম্যান্স করে বাংলার দল, সেটাই আপাতত দেখার।
একেবারে শেষবেলায় লিড বাড়ানোর বেশ কয়েকটা সুযোগ পেয়েছিল ডায়মন্ড। কিন্তু, শক্তি এবং অভিজ্ঞতার বিচারে পিছিয়ে থাকার কারণে শেষপর্যন্ত সেই সুযোগ তারা কাজে লাগাতে পারেনি। তবুও সেমিফাইনালের মতোই ডায়মন্ড হারবারের ফুটবলার এই ম্যাচের প্রথমার্ধে আলাদা করে নজর কাড়লেন। বেশ কয়েকটাসহজ সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারলেন না কিবুর ছাত্ররা।