আসন্ন বিশ্বকাপেই ইতি! জানালেন ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা

একসময় লিওনেল মেসি (Lionel Messi), নেইমার (Neymar) এবং লুইস সুয়ারেজ (Luis Suarez) তিনজনেই বার্সেলোনার হয়ে খেলে ফুটবল জগতকে নিজেদের দখলে রেখেছিলেন। ২০১৩-১৪ মরসুমে নেইমার বার্সেলোনায়…

Neymar in 2026 World Cup

একসময় লিওনেল মেসি (Lionel Messi), নেইমার (Neymar) এবং লুইস সুয়ারেজ (Luis Suarez) তিনজনেই বার্সেলোনার হয়ে খেলে ফুটবল জগতকে নিজেদের দখলে রেখেছিলেন। ২০১৩-১৪ মরসুমে নেইমার বার্সেলোনায় (Barcelona) যোগ দেন। তারপর ২০১৪-১৫ মরসুমে সুয়ারেজও সেই দলে যোগ দেন। এই ত্রয়ীর সমন্বয়ে বার্সেলোনায় সৃষ্টি হয় এক নতুন যুগ, যা ইউরোপীয় ফুটবলকে তোলপাড় করে দেয়। এই তিনজনের মধ্যে এমন সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা শুধুমাত্র মাঠে নয়, মাঠের বাইরে থেকেও সবাইকে চমকে দিয়েছিল। ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ (2026 World Cup) তার শেষ বিশ্বকাপ হতে চলেছে বলে ঘোষণা করে দিয়েছেন ব্রাজিলের সর্বোচ্চ গোলদাতা।

ডার্বির আগেই কলকাতায় লাল-হলুদের বিদেশি ফুটবলার, নেমে পড়লেন অনুশীলনে

   

যদিও এই ত্রয়ীর একসঙ্গে খেলার দিনগুলি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কিছু বছরের মধ্যেই একে একে তাদের পথ আলাদা হয়ে যায়। নেইমার চলে যান ফ্ৰান্সের প্যারিস সঁ জাৰ্মাইনেতে, মেসি চলে আসেন প্যারিসে, আর সুয়ারেজের পথও ভিন্ন দিকে চলে যায়। তবে তাদের সম্পর্ক বা বন্ধুত্বের মধ্যে কোনো টানাপড়েন আসেনি। বরং তারা এখনও একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান। এই সম্পর্কের গভীরতা ফুটবল মাঠের বাইরে তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ককেও শক্তিশালী করে রেখেছে।

কিছুদিন আগেই, নেইমার আবার একটি সংবাদে জানিয়েছেন যে, তিনি মেসি এবং সুয়ারেজের সঙ্গে একত্রে খেলার জন্য প্রস্তুত আছেন। বিশেষ করে, তিনি জানিয়েছেন যে, ‘এমএসএন’ ত্রয়ী পুনরায় একত্রিত হতে পারলে সেটা তার জন্য খুবই আনন্দের বিষয় হবে। নেইমার বলেন, “মেসি এবং সুয়ারেজ আমার ভালো বন্ধু, আমরা এখনও একে অপরের সঙ্গে কথা বলি। আমাদের ত্রয়ীকে আবার একসঙ্গে খেলানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। যদিও আমি এখন আল হিলালে ভালো আছি, তবুও ফুটবল তো চমক দেখায়, ভবিষ্যতে কী হবে বলা যায় না।”

সন্তোষ জয়ের পর ফের নয়া মুকুট বাংলার ফুটবলে, টক্কর ইস্টবেঙ্গলকে

নেইমারের এই মন্তব্যে আবার ফুটবল দুনিয়ায় নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে। এটি যেন পুনরায় সেই যুগের গৌরবময় দিনগুলির এক সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। যদিও নেইমার এখন সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালে খেলছেন, তবে তিনি একেবারে আর্জি জানাচ্ছেন যে, একদিন আবার মেসি ও সুয়ারেজের সঙ্গে এক দলে খেলতে চাই। তার মতে, এই ত্রয়ী একত্রিত হলে সেটা শুধু তাদের জন্য নয়, বরং ফুটবল বিশ্বও সেই মুহূর্তের সাক্ষী হতে পারবে।

ইস্টবেঙ্গলের ছোঁয়াচে রোগ? ডার্বির ৭২ ঘন্টা আগে ধাক্কা বাগান শিবিরে

তবে, এই মন্তব্যের সাথে সাথে নেইমার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও জানিয়েছেন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৬ বিশ্বকাপ তার শেষ বিশ্বকাপ হতে চলেছে। তার বয়স বর্তমানে ৩২ বছর এবং চোট-আঘাতের কারণে দীর্ঘদিন জাতীয় দলে খেলতে পারেননি। তবুও, তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, ২০২৬ বিশ্বকাপেই তার শেষ সুযোগ থাকবে ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতার। নেইমার বলেন, “২০২৬-এ আমি শেষ বিশ্বকাপ খেলব। সেটাই আমার শেষ সুযোগ। সেখানে খেলতে পারার জন্য আমি সব কিছু করতে প্রস্তুত।”

বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে ব্রাজিল বর্তমানে ষষ্ঠ স্থানে আছে। তাদের সামনে এখনও ছয়টি ম্যাচ বাকি, তাই সরাসরি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা এখনও উজ্জ্বল। তবে, নেইমার এই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে, কারণ চোটের কারণে তিনি ব্রাজিলের হয়ে খেলেননি বেশ কিছুদিন। তবুও, নেইমার জানিয়েছেন যে, জাতীয় দলে ফেরার জন্য তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন, যাতে ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ নিশ্চিত করতে পারেন।

নতুন পরিকল্পনা ম্যানেজমেন্টের, আরসিবির দায়িত্বে ফিরছেন কিং কোহলি?

এদিকে, পিএসজি থেকে আল হিলালে যোগ দেওয়ার পর নেইমারের জন্য একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়। তবে, এই ক্লাব পরিবর্তনের পরও তিনি বিশেষ কিছু ম্যাচেই মাঠে নামতে পেরেছেন। ২০২৩ সালে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালে যোগ দেওয়ার পর তিনি মোট সাতটি ম্যাচ খেলেছেন। অস্ত্রোপচারও তার সময়কে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং এ বছরের জুন পর্যন্ত তার আল হিলালের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে।

কিন্তু নেইমার এখনও মেসি এবং সুয়ারেজের সঙ্গে একসাথে খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, বিশেষ করে ইন্টার মিয়ামির কথা উল্লেখ করে। তিনি বলেছেন, “মেসি এবং সুয়ারেসের সঙ্গে একত্রে খেলা আবার দারুণ হবে। আমাদের তিনজনের সম্পর্ক এখনও অটুট। আমি আল হিলালে এবং সৌদি আরবে ভালো আছি, তবে ফুটবলে সব কিছুই হতে পারে। কে জানে, ভবিষ্যতে কী হয়?”

এই কথাগুলির মধ্যে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য একটি স্বপ্নের পুনঃজাগরণ রয়েছে। ‘এমএসএন’ ত্রয়ী যদি আবার একত্রিত হয়, তাহলে এটি শুধু তাদের জন্য নয়, ফুটবল বিশ্বও এক দারুণ স্মৃতির অংশ হতে পারবে। তবে, চোট-আঘাতের কারণে বর্তমানে সেই সম্ভাবনা কিছুটা অনিশ্চিত। তবুও, ফুটবল জগতের চমকপ্রিয়তা কখনোই জানানো যায় না, আর সেই আশাতেই রয়েছে নেইমারের কথাগুলি।