টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের মঞ্চে (Historic T20 Upset) যেন রূপকথার মতো এক রাত। একটি মাত্র ম্যাচ। কোনও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। অনেকেই ভেবেছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার জয় সময়ের অপেক্ষা। অথচ সব হিসেব-নিকেশ পাল্টে দিয়ে অঘটন ঘটাল নামিবিয়া। উইন্ডহোেকের ঘরের মাঠে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে নয়া ইতিহাস লিখল তারা।
শেষ বলে চার মেরে দলকে জয় এনে দিলেন জেন গ্রিন। ইতিহাসে প্রথমবার, কোনও সহযোগী দেশের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হারল দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচের শেষে মাঠজুড়ে ছিল শুধুই নামিবিয়ার উল্লাস।
এই ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন কুইন্টন ডি’কক। কিন্তু প্রত্যাবর্তনটা মোটেই মনে রাখার মতো হয়নি। মাত্র চার বল খেলে ১ রানে ফিরলেন সাজঘরে। দক্ষিণ আফ্রিকা নামিয়েছিল দ্বিতীয় সারির দল। কিন্তু সেটিও কাগজে-কলমে যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল নামিবিয়ার তুলনায়।
নামিবিয়ার বোলারদের সামনে কার্যত অসহায় হয়ে পড়ে প্রোটিয়ারা। লুয়ান-দ্রে প্রিটোরিয়াস (২২), রিজ়া হেনড্রিক্স (১) কেউই ব্যাটে রান পাননি। একমাত্র জেসন স্মিথ কিছুটা লড়াই করে ৩১ রান করেন। ২০ ওভারে মাত্র ১৩৪ রানে আটকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
লক্ষ্য ছোট হলেও নামিবিয়ার শুরুটাও ভালো ছিল না। নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে তারা। কিন্তু রান রেট কখনওই নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেয়নি। ক্রমাগত স্ট্রাইক ঘুরিয়ে, ফাঁক পাওয়া বলগুলিতে বাউন্ডারি মেরে ম্যাচে চাপ বজায় রেখেছিল তারা।
জেরার্ড ইরাসমাস (২১), মালান ক্রুগার (১৮) ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস দলের ভিত গড়ে দেয়। ম্যাচের আসল নায়ক হয়ে উঠলেন জেন গ্রিন। ধীরগতিতে শুরু করলেও, ম্যাচের শেষভাগে তার ব্যাট থেকে বেরতে থাকে ঝড়। উইকেটে থেকে ধৈর্য্য ধরে রান করেন এবং সঠিক সময়ে ঝড় তোলেন।
শেষ ওভারে দরকার ছিল ১১ রান। প্রথম বলেই সিমেলানেকে ছক্কা মেরে চাপ কমিয়ে দেন গ্রিন। এরপর এক রান। তারপর ট্রাম্পেলম্যান ২ রান। চতুর্থ বলে এক রানেই স্কোর সমান। পঞ্চম বলে রান না হলেও শেষ বলে চার মেরে ম্যাচ শেষ করেন জেন গ্রিন। গোটা মাঠ তখন উল্লাসে ফেটে পড়ে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বড় ধাক্কা আসে জেরাল্ড কোয়েৎজি চোট পেয়ে উঠে গেলে। তিনি মাত্র ১.৩ ওভার বল করতে পেরেছেন। নামিবিয়ার বিপক্ষে অভিজ্ঞ নান্দ্রে বার্গার এবং লিজাড উইলিয়ামসরাও ব্যর্থ।
এই জয় শুধু ম্যাচ জেতা নয়, এটি বিশ্ব ক্রিকেটে এক বার্তা। ছোট দলগুলিও বড় অঘটন ঘটাতে সক্ষম। আর নামিবিয়া প্রমাণ করল, তারা বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের জায়গা নিতে এসেছে, সম্মান কুড়োতে নয়।