বেঙ্গল প্রো টি২০ লিগের (Bengal Pro T20 League) দ্বিতীয় সংস্করণে মহিলা বিভাগের ম্যাচে ২৩ জুন সল্টলেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুর্শিদাবাদ কুইন্স (Murshidabad Kueens) তুলে নিল দাপুটে নয় উইকেটের জয়। বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত এই ম্যাচে ব্যাট ও বলে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে নজর কাড়লেন জাহানভি পাসওয়ান। ব্যাট হাতে অপরাজিত ১৬ রান ও বল হাতে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন তিনি।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে রাশ্মি মেদিনীপুর উইজার্ডস (Rashmi Medinipur Wizards) শুরু থেকেই মুর্শিদাবাদের মেয়েদের টাইট বোলিংয়ের সামনে চাপে পড়ে যায়। সুশমিতা গঙ্গোপাধ্যায় ৯ রান দিয়ে ১টি উইকেট নেন, নামরতা চন্দ্রা ১৪ রানে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। আর জাহ্নবি নিজের ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে তুলে নেন ২টি উইকেট। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারের আগেই, ১৯.২ ওভারে মেদিনীপুরের ইনিংস থামে মাত্র ৬৬ রানে। এরপরই নামে বৃষ্টি, খেলা কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে।
ডিএলএস (DLS) পদ্ধতিতে মুর্শিদাবাদ কুইন্সের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৩৪ রান ৮ ওভারে। ব্যাট করতে নেমে শুরুটা কিছুটা ধীরগতির হলেও, পরিস্থিতি সহজ ছিল। ওপেনাররা সাবধানে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যান। মাত্র ৫.২ ওভারে ৩৪ রান তুলে নিয়ে সহজ জয় নিশ্চিত করে মুর্শিদাবাদ। জাহানভি অপরাজিত থাকেন ১৬ রানে।
এই জয়ে লিগ তালিকায় নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করল মুর্শিদাবাদ কুইন্স। টানা ভালো পারফরম্যান্সে দলের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। ম্যাচের পরে অধিনায়ক জানিয়েছেন, “এই জয় দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। আমরা শুধু স্কিল নয়, মানসিক দিক থেকেও খুব ভালো অবস্থানে আছি। জাহ্নবি, নামরতা, সুশমিতা সবাই আজ অসাধারণ খেলেছে।”
জাহ্নবি পাসওয়ান বলেন, “দলের হয়ে অবদান রাখতে পেরে দারুণ ভালো লাগছে। কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্টের বিশ্বাস আমাকে উৎসাহ দেয় নিজের সেরাটা দিতে। বোলিংয়ের পরে ব্যাট হাতে জয় নিশ্চিত করাটা বিশেষ অনুভূতি।”
প্রতিপক্ষ মেদিনীপুর উইজার্ডস অবশ্য শুরু থেকেই চাপে ছিল। মুর্শিদাবাদের নিয়ন্ত্রিত লাইন ও লেংথে উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে তারা। বড় রান না উঠলেও শেষ পর্যন্ত অন্তত ২০ ওভারের কাছাকাছি যেতে পেরেছিল, যা কিছুটা সম্মানের। তবে এই হার তাদের প্লে-অফের স্বপ্নে বড় ধাক্কা দিল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মুর্শিদাবাদের হয়ে বোলিং বিভাগের প্রশংসা করতেই হয়। নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি বোলার নিজের ভূমিকা নিখুঁতভাবে পালন করেছেন। ফিল্ডিং-এও ছিল না কোনও শিথিলতা। ম্যাচে একটি চমৎকার রানআউটও দেখা যায়, যা তাদের টিম স্পিরিটের পরিচয় দেয়।
এখনো বেশ কয়েকটি ম্যাচ বাকি থাকলেও, এই পারফরম্যান্স দেখে বোঝা যাচ্ছে— মুর্শিদাবাদ কুইন্স এ বার চ্যাম্পিয়ন হবার লক্ষ্যে এক পা এগিয়ে গিয়েছে। দলগত পারফরম্যান্স, অধিনায়কত্ব, এবং ফর্মে থাকা ক্রিকেটারদের ধারাবাহিকতা এই দলের বড় শক্তি।
শেষ কথা, বৃষ্টিভেজা দিনে যেখানে খেলা ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল, সেখানে মুর্শিদাবাদ কুইন্সের একতরফা জয় দেখাল— আবহাওয়া নয়, জয় আসে পরিকল্পনা আর পারফরম্যান্সে ভর করেই।