IPL 2022: আরও একটি মায়াবী রাত কাটাল মায়ানগরী। সার্থক হল গ্যালারিতে বসে অভিনেতা রণবীর সিং গলা ফাটানো। পর্দার কপিলের প্রিয় দল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ব্যাক টু ব্যাক জয় ছিনিয়ে নিল। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে গুজরাট টাইটান্সকে ৫ রানে হারাল রোহিত শর্মা অ্যান্ড কোং।
গত ম্যাচেই রাজস্থান রয়্যালসে হারিয়ে চলতি আইপিএলে প্রথম জয়ের মুখ দেখেছিল মুম্বই। ‘মোমেন্টাম ফিরে পাওয়া’, ‘হারানো আত্মবিশ্বাস জোগাড় করা’ শব্দব্রহ্মগুলি তখন মুম্বইয়ের ক্ষেত্রে হটকেক হয়ে গিয়েছিল। তবে গুজরাটের দুই ওপেনারের দাপটে একটা সময় মনে হয়েছিল কোথায় কী! সেই কাগুজে বাঘ হয়েই থাকতে হবে রোহিত ব্রিগেডকে। শুক্রবার গুজরাটের বিরুদ্ধে বড় রান করেও বোলিং ব্যর্থতায় ডুবতে বসেছিল আইপিএলের সফলতম দলটি। তবে জয়টা মোটেও সহজ হয়নি তাদের। আরও একটি শেষ ওভারে জয়ের হাতছানি ছিল গুজরাটের সামনে। কিন্তু এবার আর পারেননি রাহুল তেওয়াটিয়া, রশিদ খান, ডেভিড মিলাররা।
এদিন প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেট খুইয়ে ১৭৭ রান স্কোরবোর্ডে তোলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। শুরুটা দারুণ করেছিলেন রোহিত শর্মা (২৮ বলে ৪৩) এবং ঈশান কিষাণ (২৯ বলে ৪৫)। কিন্তু মিডল অর্ডার সেভাবে দাঁড়াতে পারেনি। সুর্যকুমার যাদব (১৩), তিলক বর্মারা (২১) কার্যত ব্যর্থ। তবে চলতি মরসুমে মুম্বইয়ের ভরাডুবির পিছনে কায়রন পোলার্ডের অফফর্মও অন্যতম কারণ। সেভাবে বল করার সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। হাত ঘোরালেও কার্যকরী ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হচ্ছেন। আর ব্যাট হাতে এখনও পর্যন্ত বলার মতোই কিছুই করেননি এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। অনেকে তো আবার দলের ‘বোঝা’ বলেও মনে করছেন পোলার্ডকে। এদিন ১৪টি বল নষ্ট করে মাত্র ৪ রানে আউট হন তিনি। অবশ্য বল হাতে একটি উইকেট পেলেও, সেটি ‘পরে পাওয়া চোদ্দ আনা’ হিসাবেই দেখছেন অনেকে।
নেহাৎ টিম ডেভিড ছিলেন! ২১ বলে মারকাটারি ৪৪। তাও আবার অপরাজিত। শেষ লগ্নে ডেভিডের ঝড়েই বড়ো রানের মুখ দেখল মুম্বই। গুজারেটর সবথেকে সফল বোলার রশিদ খান। চার ওভারে ২৪ রানের বিনিময়ে দুটি উইকেট তুলে নেন আফগান স্পিনার।
রান তাড়া করতে নেমে ঋদ্ধিমান সাহা এবং শুভমন গিল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই শুরু করেন। প্রথমে গিল থিতু হতে কিছুটা সময় নেন। তখন ঝড় তোলেন ঋদ্ধি। পাওয়ার প্লের পর আবার উলটপূরাণ। দু’জনের জুটিতে বিনা উইকেট সেঞ্চুরি পার হয়ে যায় গুজরাটের। গিল ফেরার আগে জয়ের ভিতটাও গড়ে দিয়ে যান। ৩৮ বলে ৫৩ রান করে আউট হন গিল। তখন ঋদ্ধি ব্যাট করছিলেন ব্যক্তিগত ৫২ রানে। খেলেছিলেন ৩৭টি বল। দু’জনে সাজঘরে ফিরলেনও প্রায় একইসঙ্গে। মুরুগান অশ্বিনের একই ওভারে ফেরেন ঋদ্ধি। ৪০ বলে ৫৫ রান করে যান তিনি।
এরপর গুজরাটের বাকি ছিল শুধু জয়ের আনুষ্ঠিকতা। কিন্তু সেই কাজটি সারতে ব্যর্থ বাকিরা। হার্দিক পান্ডিয়া এবং সাই সুদর্শন ভালো ভাবেই এগোচ্ছিলেন। কিন্তু পোলার্ডের বলে পুল মারতে গিয়ে হিট উইকেট হয়ে ফিরে যান তরুণ বাঁহাতি সুদর্শন (১৪)। ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়া হয়নি হার্দিকেরও। ১৪ বলে ২৪ করে রান আউটের কবলে পড়েন গুজরাট অধিনায়ক। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৯ রান প্রয়োজন ছিল গুজরাটের। দলের ‘মুশকিল আসান’ রাহুল তেওয়াটিয়া এদিন আর জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি। ম্যাচ আরও রোমাঞ্চে পরিণত হয় যখন শেষ বলে ছয় রান প্রয়োজন ছিল গুজরাটের। মিলার পারেননি ছক্কা হাঁকাতে। ড্যানিয়েল স্যামসের বলটি মিস করেন তিনি। তার আগে অবশ্য রশিদ খানও সুযোগ পেয়েছিলেন ব্যাট হাতে দলকে জেতানোর। কিন্তু তিনি এদিন নায়ক হতে ব্যর্থ।