ভ্যেনু বদল, সরকারি শিলমোহর পড়ল ইস্ট-মোহন লড়াইয়ের

১১ জানুয়ারি গুয়াহাটিতে (Guwahati) হবে কলকাতা ডার্বি (Kolkata Derby)। বুধবার দুপুরে মোহনবাগান (Mohun Bagan) কর্তৃপক্ষ সরকারিভাবে ম্যাচের ভেন্যু ঘোষণা করেছে, কিন্তু ঠিক তিন দিন আগে।…

ISL Kolkata Derby Mohun Bagan SG vs East Bengal FC

short-samachar

১১ জানুয়ারি গুয়াহাটিতে (Guwahati) হবে কলকাতা ডার্বি (Kolkata Derby)। বুধবার দুপুরে মোহনবাগান (Mohun Bagan) কর্তৃপক্ষ সরকারিভাবে ম্যাচের ভেন্যু ঘোষণা করেছে, কিন্তু ঠিক তিন দিন আগে। এই ঘোষণার পর থেকেই গন্ধ পাচ্ছে ষড়যন্ত্রের, দাবি ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal)। গুয়াহাটির ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে (Guwahati Stadium) অনুষ্ঠিত হবে মরসুমের ফিরতি ডার্বি মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এবং ইস্টবেঙ্গল এফসির (Mohun Bagan vs East Bengal) মধ্যে। যা আইএসএলে অন্যতম আলোচিত ম্যাচ হিসেবে পরিচিত। তবে এই ম্যাচের ঘোষণার সঙ্গে সম্পর্কিত নানা ঘটনা ও বিতর্ক ক্রমশ পরিস্থিতি জটিল করে তুলছে।

   

 

 
 
 
 
 
View this post on Instagram
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

 

A post shared by Mohun Bagan Super Giant (@mohunbagansg)

গোয়ার কাছে পরিজিত হয়ে চেন্নাই ম্যাচে এই লক্ষ্য সার্জিও লোবেরার

গুয়াহাটির ম্যাচের ঘোষণা আইএসএলের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হিসেবে উপস্থাপিত হলেও, পুরো বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠছে। গত কয়েক মাসে, বিশেষ করে ডুরান্ড কাপে কলকাতা ডার্বির আয়োজন নিয়ে যে ধরণের অশান্তি ও নাটক হয়েছিল, তা এখনও ভোলেনি ফুটবল প্রেমীরা। ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখেই নিজেদের মাঠে নামাতে চেয়েছিল, কিন্তু বেশ কিছু কারণে কলকাতা ডার্বি বাতিল হয়ে যায়।

ডুরান্ড কাপে, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ এবং পুলিশের নিরাপত্তার অভাবের কারণে কলকাতা ডার্বি বাতিল হয়েছিল। সেই পরিস্থিতি ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান দুই পক্ষের জন্যই হতাশার ছিল। তাই সেই দিনগুলির অশান্তি এখনও ফুটবল মহলে ঝাপসা হয়ে রয়েছে।

এবার, আইএসএলে যখন দ্বিতীয় ডার্বির দিনক্ষণ ঘোষণা করা হল, তখনই নতুন বিতর্কের জন্ম নেয়। মোহনবাগান কর্তৃপক্ষ ম্যাচের ভেন্যু ঘোষণা করতে বিলম্ব করেছিল, যা অনেকের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়েছে। প্রায় ম্যাচের তারিখ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত, ইস্টবেঙ্গল কর্তৃপক্ষ বারবার অভিযোগ করে যে, মোহনবাগান সম্ভবত ইস্টবেঙ্গলের সুবিধার বিরুদ্ধে কাজ করছে।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের সম্ভাব্য দলে সুযোগ শামি সহ কয়েকজনের

এছাড়া, ম্যাচের স্থান নিয়ে সঙ্কটও সৃষ্টি হয়েছিল। কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে ডার্বি আয়োজনের কথা ছিল। তবে কলকাতায় গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে যে বিশাল নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল, তার কারণে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট জানিয়ে দিয়েছিল, তারা ডার্বিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিতে পারবে না। সেই কারণে মোহনবাগানকে জানানো হয়েছিল যে, তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ম্যাচ কলকাতায় আয়োজন করা সম্ভব নয়। এমনকি সল্টলেকের স্টেডিয়ামে না হলে কল্যাণীতে ম্যাচ আয়োজন করার কথা শোনা গিয়েছিল। তবে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও দীর্ঘস্থায়ী হয়।

এর পরেই মোহনবাগান সিদ্ধান্ত নেয় গুয়াহাটির ইন্ডোর স্টেডিয়ামকেই ম্যাচের ভেন্যু হিসেবে চূড়ান্ত করবে। অবশ্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, ইস্টবেঙ্গল প্রশাসন আবারও একাধিক অভিযোগ জানিয়ে মাঠে নামায় বিরোধ। তারা দাবি করেছে যে, মোহনবাগান যেন ম্যাচের ভেন্যু আগে থেকেই ঘোষণা করত এবং পুরো বিষয়টিতে গোপনীয়তার প্রতি নিজেদের মনোভাব প্রকাশ করত না। এই অভিযোগটি শোনা গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল কর্তৃপক্ষের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারের পক্ষ থেকে। তিনি ক্ষোভের সুরে বলেন, “মোহনবাগান ইচ্ছাকৃতভাবে ভেন্যু ঘোষণা না করে আমাদের সমস্যায় ফেলতে চাইছে।”

ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজে পিচ রিপোর্ট নিয়ে তথ্য ফাঁস আইসিসির

ফুটবল বিশ্বের এই জটিল পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। মোহনবাগান কর্তৃপক্ষ, যদিও ইস্টবেঙ্গলকে ছোট করতে চায়নি বলে দাবি করেছে, তবে তাদের পক্ষ থেকে বারবার এমন অভিযোগ ওঠা যে, তারা ভেন্যু ঘোষণা না করে যেন প্রতিপক্ষের জন্য সমস্যা তৈরি করেছে, তা পরিষ্কারতর হয়ে উঠছে। তবে গুয়াহাটির স্টেডিয়ামে ডার্বি আয়োজনের ঘোষণা হলে, সেখানকার ফুটবল ভক্তদের মধ্যে উচ্ছ্বাস এবং উৎসাহ বিরাজ করছে।

গুয়াহাটির ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে ডার্বি অনুষ্ঠিত হলে, এই নতুন আবহে এক অন্য রকম অনুভূতি তৈরি হবে। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা তুঙ্গে উঠবে এবং এটি প্রতিবারের মতোই ভারতের ফুটবল জগতের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হয়ে থাকবে। তবে ভবিষ্যতে যেন এরকম বিতর্ক এবং অব্যক্ত পরিকল্পনা না থাকে, সেদিকে নজর রাখা উচিত, যাতে ফুটবলপ্রেমীরা শুধুমাত্র খেলার আনন্দ নিতে পারে।