চিংলেনসানার হ্যান্ডবল! আইনের বলে পেনাল্টি মোহনবাগানকে

ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (আইএসএল) ফাইনালে মোহনবাগান (Mohun Bagan) সুপার জায়ান্ট এবং বেঙ্গালুরু এফসি’র মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে একটি পেনাল্টি সিদ্ধান্ত বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। মোহনবাগানের জন্য পরিস্থিতি…

Mohun Bagan vs Bengaluru FC ISL Final Penalty Controversy Referee Backed by Law 12 Decision

ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (আইএসএল) ফাইনালে মোহনবাগান (Mohun Bagan) সুপার জায়ান্ট এবং বেঙ্গালুরু এফসি’র মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে একটি পেনাল্টি সিদ্ধান্ত বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। মোহনবাগানের জন্য পরিস্থিতি যখন প্রতিকূল দেখাচ্ছিল, তখন রেফারি সেন্থিল নাথন এস তাদের একটি জীবনরেখা এনে দেন। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বেঙ্গালুরু এফসি’র খেলোয়াড়রা তীব্র প্রতিবাদ জানালেও, রেফারি তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এফএ-এর ল’ ১২-এর আলোকে রেফারির এই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।

ম্যাচের ৭২তম মিনিটে ঘটনাটি ঘটে। জেসন কামিন্সের ক্রস থেকে জেমি ম্যাকলারেনের শট বেঙ্গালুরু এফসি’র ডিফেন্ডার চিংলেনসানা সিং-এর হাতে লাগে। চিংলেনসানা মাটিতে পড়ার সময় তার ডান হাত প্রসারিত ছিল। রেফারি এটিকে ‘অপ্রাকৃতিক অবস্থান’ হিসেবে বিবেচনা করেন। বেঙ্গালুরু এফসি’র খেলোয়াড়রা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানায়, কিন্তু রেফারি তার রায় পরিবর্তন করেননি। প্রথম দর্শনে সিদ্ধান্তটি কঠোর মনে হলেও, এফএ-এর নিয়মকানুনের দৃষ্টিকোণ থেকে রেফারি সঠিক পথে ছিলেন।

এফএ-এর ল’ ১২-এ স্পষ্টভাবে বলা আছে:

“একজন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে যদি:
তিনি তাদের হাত/বাহু দিয়ে বল স্পর্শ করেন যখন এটি তাদের শরীরকে অপ্রাকৃতিকভাবে বড় করে। একজন খেলোয়াড় তখনই তাদের শরীরকে অপ্রাকৃতিকভাবে বড় করেছেন বলে বিবেচিত হবে যখন তাদের হাত/বাহুর অবস্থান সেই নির্দিষ্ট পরিস্থিতির জন্য তাদের শরীরের গতিবিধির ফলাফল বা ন্যায্যতা প্রমাণ করে না। এই ধরনের অবস্থানে হাত/বাহু রাখার মাধ্যমে খেলোয়াড় তাদের হাত/বাহুতে বল লাগার ঝুঁকি নেন এবং শাস্তির সম্মুখীন হন।”

এই পেনাল্টি থেকে জেসন কামিন্স গোল করে মোহনবাগানের হয়ে সমতা ফেরান। এর আগে, একটি আলবার্তো রদ্রিগেজের আত্মঘাতী গোলে বেঙ্গালুরু এফসি এগিয়ে গিয়েছিল। এই পেনাল্টি মোহনবাগানকে ম্যাচে ফিরে আসার সুযোগ করে দেয় এবং খেলার গতিপথে বড় প্রভাব ফেলে।

এই ঘটনা ফুটবল ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে মনে করছেন যে চিংলেনসানার হাতের অবস্থান ইচ্ছাকৃত ছিল না, কারণ তিনি মাটিতে পড়ার সময় ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা করছিলেন। তবে, ল’ ১২-এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, হাতের অপ্রাকৃতিক অবস্থানই পেনাল্টির জন্য যথেষ্ট। এই নিয়মটি ফুটবলে বিতর্কের জন্ম দেয়, কারণ এটি রেফারির ব্যাখ্যার উপর অনেকটাই নির্ভর করে।

মোহনবাগানের সমর্থকরা এই সিদ্ধান্তকে তাদের দলের পক্ষে একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে দেখছেন। তবে, ফুটবলের নিয়ম অনুযায়ী রেফারির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। এই ঘটনা আইএসএল-এ রেফারিংয়ের মান এবং ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত করেছে।

এই পেনাল্টি বিতর্ক সত্ত্বেও, ম্যাচটি ছিল উভয় দলের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভরপুর। মোহনবাগান এবং বেঙ্গালুরু এফসি উভয়েই তাদের সেরাটা দিয়ে খেলেছে, যা আইএসএল ফাইনালের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ধরনের ম্যাচ ভারতীয় ফুটবলের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা এবং প্রতিযোগিতার মানের প্রমাণ বহন করে।