অনবদ্য লিস্টন কোলাসো। এবার ডার্বি জয়ের মধ্য দিয়েই ডুরান্ড কাপ শুরু করল মোহনবাগান (Mohun Bagan) সুপার জায়ান্ট। সূচি অনুসারে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিল মেরিনার্সরা। যেখানে তাঁদের প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিল পড়শী মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। সম্পূর্ণ সময় শেষে ৩-১ গোলের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিল বাস্তব রায়ের ছেলেরা। দলের হয়ে এদিন জোড়া গোল করেন লিস্টন কোলাসো। এবং একটি গোল করে যান সুহেল আহমেদ ভাট। অন্যদিকে, অ্যাশলে আলবান কোলির গোলে একটা সময় সমতায় ফিরলেও পরবর্তীতে ম্যাচের রাশ নিজেদের দিকে টেনে নেয় সবুজ-মেরুন।
যারফলে শেষ পর্যন্ত দশজনে খেলে ও জয় ছিনিয়ে নিতে খুব একটা অসুবিধে হয়নি মেরিনার্সদের। অন্যদিকে, এই ঐতিহ্যবাহী ফুটবল টুর্নামেন্টের তারা দুইটি ম্যাচে পরাজিত হয়ে পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়া কার্যত অনিশ্চিত হয়ে গেল ব্ল্যাক প্যান্থার্সদের। উল্লেখ্য, ম্যাচের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষ দলের ওপরে ক্রমশ চাপ বাড়াতে মরিয়া ছিল মোহনবাগান। বিশেষ করে ম্যাচের প্রথম কোয়ার্টারের প্রায় অর্ধেক সময় বাগান ফুটবলারদের আটকাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছিল মেহেরাজুদ্দিন ওয়াডুর ছেলেদের। তবে পরবর্তীতে গোলের সুযোগ চলে এসেছিল দুই প্রধানের ফুটবলারদের কাছেই। কিন্তু সেইসময় কাজে লাগাতে পারেননি কিয়ান কিংবা অ্যাশলেরা। তবে ম্যাচের বয়স বাড়ার সাথে সাথেই আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে সবুজ-মেরুন।

তারপর ম্যাচের দ্বিতীয় কোয়ার্টারের মাঝামাঝি সময় প্রতিপক্ষের গোল বক্সের বাইরে ফ্রি-কিক আদায় করে নেয় বাগান ফুটবলাররা। একেবারে নিখুঁত শটে বল জালে জড়িয়ে দেন জাতীয় দলের তারকা ফুটবলার লিস্টন কোলাসো। অনায়াসেই ১-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় মেরিনার্সরা। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষের দিকেই দেখা যায় বিপত্তি। প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় আপুইয়াকে। প্রথমার্ধের শেষে একটি গোলের ব্যবধানে মোহনবাগান এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয় গোল সংখ্যা বাড়াতে বদ্ধপরিকর ছিল কিয়ানরা। কিন্তু কাজটা খুব একটা সহজ ছিল না। চতুর্থ কোয়ার্টারে প্রতি আক্রমণে উঠে আসে বাগান গোলপোস্ট লক্ষ্য করে দুরপাল্লার শট নেন কিমা।
যদিও সেটি আটকে দিয়েছিলেন অধিনায়ক বিশাল কাইথ। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সুযোগ বুঝেই ফিরতি বল গোলে ঠেলে দিয়ে দলকে সমতায় আনেন অ্যাশলে। যারফলে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছিল সাদা-কালো ফুটবলাররা। সেই গোলের পর থেকেই ঘন ঘন আক্রমণে উঠে আসতে শুরু করেছিল মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। এমনকি ৫৭ মিনিটের মাথায় ফের গোলের সুযোগ এসে গিয়েছিল সজল বাগের কাছে। কিন্তু বিশালের দক্ষ হাতে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে পরিস্থিতি। তারপর প্রায় ৬৩ মিনিটের মাথায় সাদা-কালো রক্ষণভাগে হানা দিয়ে দলের হয়ে দ্বিতীয় গোল করে যান কাশ্মিরী ফুটবলার সুহেল ভাট। তবে সহজে হার মানতে রাজি ছিল না মহামেডান।
বলতে গেলে নির্ধারিত নব্বই মিনিটের মধ্যে শেষ ১০ মিনিটে বারংবার বাগান রক্ষণে হানা দিয়েছিলেন মহামেডানের ফুটবলাররা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং ম্যাচ রেফারি তরফে দেওয়া অতিরিক্ত পাঁচ মিনিটের শেষের দিকে লিস্টন কে ফাউল করে বসেন প্রতিপক্ষের এক ফুটবলার। সেখান থেকে পেনাল্টি আদায় করে বাগান ব্রিগেড। নিজের দ্বিতীয় গোল তুলে নিতে কোনও ভুল করেননি লিস্টন।