সায়ন সেনগুপ্ত, কলকাতা: বর্তমানে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের (Mohun Bagan Super Giant) ভূমিকা নিয়ে সরগরম ভারতীয় ক্লাব ফুটবল। বিগত কয়েক বছর ধরেই সর্বভারতীয় স্তরে যথেষ্ট ভালো ছন্দে রয়েছে এই ফুটবল ক্লাব। যারমধ্যে গত বছর সৃষ্টি হয়েছে নয়া রেকর্ড। লিগ শিল্ডের পাশাপাশি লিগ কাপ ও এসেছিল তাঁদের ঘরে। সেই সুবাদে এবার ও এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ টায়ার টুয়ে খেলার ছাড়পত্র পায় কলকাতা ময়দানের এই প্রধান। গত মাসের মাঝামাঝি সময় টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ আহাল এফকের বিপক্ষে খেললে ও পরবর্তীতে অ্যাওয়ে ম্যাচে ছিল বাগানের। যেখানে তাঁদের লড়াই করতে হত ইরানের শক্তিশালী ফুটবল ক্লাব সেপাহন এফসির সঙ্গে।কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। গতবারের মতো এবারও ইরান যায়নি মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan Super Giant)।
প্রথম ম্যাচের তুলনায় এই ম্যাচে যে যথেষ্ট কঠিন হবে সেটা ভালো মতোই জানতেন সকলে। সেইমত বহুদিন আগে থেকেই ফুটবলারদের নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন বাগান কোচ হোসে মোলিনা। তবে দেখা দিয়েছিল অন্য সমস্যা। বাগানের দলের অন্যতম চার বিদেশি ফুটবলার মূলত অস্ট্রেলিয়া ও আমেরিকার ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন জেসন কামিন্স থেকে শুরু করে জেমি ম্যাকলারেন, দিমিত্রি পেত্রাতোস এবং টম অলড্রেডের মতো ফুটবলাররা। তবে এই দুই দেশের ফুটবলাররা ইরানে যাওয়ার ভিসা আবেদন করতেই পারবেন না। সেই কথা জানা গিয়েছিল আগেই। স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের যাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছিল ধোঁয়াশা।
কিন্তু মাঝে মনে করা হচ্ছিল যে দলের চার বিদেশি ফুটবলারকে ভারতে রেখেই ইরান সফর করতে পারে মোহনবাগান। তবে পরবর্তীতে সেটাও সম্ভব হয়নি। সেই নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসতে শুরু করেছিল মোহনবাগান (Mohun Bagan Super Giant) সমর্থকদের একটা বিরাট অংশ। সেই সমস্ত কিছু নিয়েই এবার মুখ খুললেন বাগানের বর্তমান সচিব সৃঞ্জয় বসু এবং সভাপতি দেবাশিস দত্ত। মোহনবাগানের (Mohun Bagan Super Giant) কার্যকরী সমিতির তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়, ” আমরা তো গত বছরেও একই কারণে খেলতে যাইনি। ইরানে যে একটা সমস্যা হচ্ছে, সেটা সবাই জানেন। সেখানে ফুটবলাররা যদি নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন, ম্যানেজমেন্ট সেখানে কিছুই করতে পারে না। খেলার আগেও গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের জীবন। আর এক্ষেত্রে আমরা ইরানে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা ফুটবলারদের উপরেই ছেড়ে দিয়েছিলাম। এএফসিতে খেলতে না পারার জন্য আপনাদের মতো আমরাও মর্মাহত।”
সেইসাথে দলের কর্নধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কার প্রসঙ্গে সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ” সঞ্জীব গোয়েঙ্কা প্রতিবছর ৭০-৮০ কোটি টাকার দল গঠন করেন। সর্বোচ্চস্তরে ভাল ফল করার জন্য। নিশ্চয়ই দ্বিতীয় সারির প্রতিযোগিতায় জেতার জন্য নয়। তাহলে এত খরচ করে দল গঠন করার পর কোনও সমস্যা না থাকলে ইরানে কেন খেলতে যাওয়া হবে না?” পাশাপাশি সমর্থকদের সমস্ত সমালোচনা প্রসঙ্গে বলা হয়, ” এই মরসুমের ভারতীয় ফুটবলের পরিস্থিতিও ভাবুন। এখনও আমরা জানি না, আইএসএল হবে কি না? হলে কবে হবে? কীভাবে কী হবে, কিছুই জানি না। আর সঞ্জীব গোয়েঙ্কা এসব কিছু না জেনেই বিশাল খরচ করে দল গঠন করে বসে আছেন। মোহনবাগান (Mohun Bagan Super Giant) কোথাও না খেললে অবশ্যই মর্মাহত হবেন। প্রতিবাদ করবেন। কিন্তু শুধুই আবেগের বশে সমালোচনা না করে একটু যুক্তি দিয়েও ভাবুন। যিনি প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে দল গড়ে আমাদের লক্ষ লক্ষ সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন, তাঁকে এক লহমায় সমালোচনার কাঁটায় বিদ্ধ করতে আপনাদের হৃদয় কাঁপছে না? আবার বলছি, আমরা সবাই চাই, মোহনবাগান (Mohun Bagan Super Giant) ভারতীয় ফুটবল ছাড়িয়ে এশিয়াতেও নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করুক। আর তার জন্যই এই বিশাল দল গঠন।”