২৩ ফেব্রুয়ারি ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ২০২৪-২৫ মরসুমে (ISL 2024-25 Session) শিল্ড (ISL Shiled) জয়ে মোহনবাগান (Mohun Bagan SG) নিজেদের ইতিহাসে আরও এক নতুন অধ্যায় যোগ করেছে। প্রায় ৫৬ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে, কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে সবুজ-মেরুন শিবির সাফল্যের সাথে আইএসএল শিল্ড জয় করল। ভারতের প্রথম ক্লাব হিসেবে টানা দু’বার এই খেতাব জয়ের কীর্তি, যা ক্লাবের ফুটবল ইতিহাসে এক বিশেষ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে। তবুও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব ইস্টবেঙ্গলকে (East Bengal FC) খোঁচা দিতে পিছু হটল না বাগান সমর্থকরা (Mohun Bagan SG Supporters)।
মোহনবাগান ক্লাবটি গত দুই-তিন মরসুমে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী দল গড়েছে। আক্রমণ থেকে রক্ষণ পর্যন্ত প্রতিটি বিভাগে তাদের শক্তি এবং সমন্বয় অসামান্য। এটি সম্ভব হয়েছে উপযুক্ত খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে, যার ফলে মোহনবাগান আজ আইএসএলের শীর্ষে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে।
এদের মধ্যে অন্যতম কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কার অবদান অবিস্মরণীয়। ক্লাবের এই সাফল্যের পেছনে তার অবদান এবং নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সমর্থকরা তাই নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে ভোলেনি। গ্যালারিতে বিশাল এক টিফোতে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার ছবি সহ লেখা ছিল “সঞ্জীব’নী টোটকা। হিংসা নয়, চেষ্টা করো”, যা ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে একপ্রকার খোঁচা দিতে ব্যবহার করা হয়েছিল। এই টিফোতে আরও ছিল এক বিশেষ বার্তা, যেখানে লেখা ছিল, “ভিনি, ভিডি, ভিসি”, অর্থাৎ, “এসো, দেখো, জয় করো”।
এছাড়া, আরেকটি টিফোয় মোহনবাগান সমর্থকরা নিজেদের হাস্যরসাত্মক আক্রমণ চালিয়েছিলেন। সেখানে লেখা ছিল, “রসগোল্লার মতো শিল্ডটাও আমাদের।” এটি ছিল আদতে ওডিশা এবং তাদের শিল্ড জয় নিয়ে একটি খোঁচা। মোহনবাগান ক্লাবের ইতিহাসে এটি একটি বিশেষ দিন ছিল, যেখানে নিজেদের শিরোপা জয়ের আনন্দে সমর্থকরা প্রতিবেশী ক্লাবগুলোকেও ব্যঙ্গাত্মক ভাষায় কটাক্ষ করেছেন।
মোহনবাগান সমর্থকদের ঐতিহ্যগতভাবে টিফো এবং সমর্থন প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের উচ্ছ্বাস এবং আবেগের প্রকাশ ঘটানো হয়। এবারও, প্রতিপক্ষকে খোঁচা দেওয়ার সাথে সাথে, গ্যালারিতে চমৎকার আর্টওয়ার্ক ও বার্তা দিয়ে সমর্থকরা দেখিয়েছে তাদের অটুট ভক্তি এবং দলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। এমনকি, জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে এক ম্যাচে ১২ হাজার ৬০০ স্কোয়ার ফুটের বিশাল টিফো তুলে তারা এশিয়ার সবচেয়ে বড় টিফোর রেকর্ড গড়েছিল। এই ধরনের উদ্ভাবনী টিফো ব্যবহার ক্লাবটির ফুটবল সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু এই সাফল্য শুধু ফুটবল মাঠের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, ক্লাবটির সমর্থকদের মাঝে একটি ঐতিহাসিক ভাবাবেগের জন্ম দিয়েছে। মোহনবাগান সমর্থকরা সেই ঐতিহ্য বজায় রেখে নিজেদের জয়ের উৎসবে সৃষ্টিশীল এবং হাস্যকর টিফো ব্যবহারের মাধ্যমে আরও একবার প্রমাণ করেছে যে, তারা শুধুমাত্র ফুটবল খেলার পরিসরে নয়, বরং সমর্থক সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও এক বিপ্লব ঘটিয়েছে।