গত ৪৮ ঘণ্টায় মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের (Mohun Bagan SG) চিন্তাভাবনায় এক বিশাল পরিবর্তন এসেছে। ২০২৪-২৫ মরসুমে অসাধারণ সাফল্যের পরেও ক্লাব থেমে থাকতে চায় না। বরং, এবার লক্ষ্য আরও বড়। দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য এবং এশিয়ান ফুটবলে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা। আর সেই লক্ষ্যেই জাতীয় দলের তিন গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারকে দলে টানার পরিকল্পনা করছে কলকাতার এই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব।
ক্লাবের কোচ হোসে মোলিনা ও মালিক সঞ্জীব গোয়েঙ্কার নির্দেশে এখন সবুজ-মেরুন শিবিরের সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট ও সিইও কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এই তিন ফুটবলারই ক্লাবের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আস্থা রাখছেন বলে জানা গিয়েছে। বেশ কিছু প্রতিবেদনে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘এই তিন জনকেই নিতে চায়। ওরা ভালো ফুটবলার, আর মোহনবাগানে এলে আরও উন্নতি করবে। আমাদের এখন লক্ষ্য এএফসিতে নিজেদের প্রমাণ করা। তাই ভারতীয় ফুটবলারদের উপরেই প্রথম জোর দেওয়া হচ্ছে, বিদেশিদের আগে।’
জানা যাচ্ছে, এই তিনজনের মধ্যে একজন হলেন মেহতাব সিং, যাঁর দলবদল নিয়ে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় জন একজন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার, যিনি ইতিপূর্বে একাধিকবার আইএসএল জিতেছেন এবং বর্তমানে তাঁর বয়স ৩৫ কাছাকাছি। তৃতীয় জন আবার এক উদীয়মান সেন্টার-ব্যাক, যিনি ভবিষ্যতের ভারতীয় রক্ষণভাগের মেরুদণ্ড হয়ে উঠতে পারেন।
এই পদক্ষেপগুলি থেকে স্পষ্ট, বাগান এবার আর শুধু আইএসএল শিল্ড চ্যাম্পিয়ন এবং শিরোপা জয়ে সন্তুষ্ট নয়। ক্লাব এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এএফসি প্রতিযোগিতায় ভালো ফল করার জন্য প্রয়োজন সঠিক খেলোয়াড় নির্বাচন, আর সেই জায়গাতেই জোর দিচ্ছেন মোলিনা এবং গোয়েঙ্কা।
একজন ক্লাব-ঘনিষ্ঠ সূত্র আরও জানান, “আমরা এই তিনজনকে নিয়েই দল গঠন করতে চাই। শুধু সাময়িক সফলতা নয়, বরং আগামী পাঁচ বছরেও ক্লাবের সাফল্য অব্যাহত রাখাই আমাদের লক্ষ্য। এজন্য ভারতীয় খেলোয়াড়দের উপরেই সবচেয়ে বেশি আস্থা রাখা হচ্ছে।”
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই তিন ফুটবলারকে দলে নেওয়ার জন্য কতটা প্রতিযোগিতা থাকবে। বিশেষ করে মেহতাব সিং-এর মতো একজন ডিফেন্ডারের জন্য আইএসএলের অন্য দলগুলিও আগ্রহী থাকবেই। তবে বাগানের পরিকল্পনা, ভবিষ্যৎ ভিশন এবং আর্থিক দিক থেকে যথেষ্ট শক্তিশালী হওয়ায় তারা অনেকটাই এগিয়ে।
সবমিলিয়ে, মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট যে এবার ঘরোয়া লিগের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে বড় কিছু করে দেখাতে চায়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, জাতীয় দলের ফুটবলারদের গুরুত্ব এবং ভারতীয় প্রতিভাদের উপর আস্থা—এই তিন দিকেই ক্লাবের বর্তমান রূপরেখা। আগামী দিনে এই পরিকল্পনা কতটা বাস্তবায়িত হয়, সেটাই এখন দেখার। তবে কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এটি নিঃসন্দেহে এক রোমাঞ্চকর অধ্যায়ের সূচনা।