স্প্যানিশ কোচ হোসে মোলিনার (Jose Molina) পরিচালনায় ২১ জানুয়ারি চেন্নাইয়িন এফসির (Chennaiyin FC) বিরুদ্ধে এক গুরুত্বপূর্ণ অ্যাওয়ে ম্যাচে মাঠে নামবে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan SG)। যদিও গত শুক্রবার জামশেদপুরের (Jamshedpur FC) বিরুদ্ধে ড্র করে দুই পয়েন্ট হাতছাড়া করেছে কলকাতার এই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। আসন্ন ম্যাচের আগে দলের ফুটবলারদের ক্লান্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, কোচ ব্যাপারটি গুরুত্ব দিতে চাননি। বরং তিনি দলের পারফরম্যান্স নিয়ে আশাবাদী এবং বিশ্বাস করেন যে, পরবর্তী ম্যাচে তারা আবার জয়ের ধারায় ফিরবে।
শুক্রবারের জামশেদপুর ম্যাচটি মোহনবাগানের জন্য ছিল বেশ দুর্ভাগ্যজনক। ম্যাচের শুরু থেকে বেশ কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল তারা, কিন্তু সুযোগগুলো কাজে লাগাতে ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়ে যায়। এর ফলে, তারা ২ পয়েন্ট হারায় এবং জামশেদপুরের বিরুদ্ধে জয়ের সম্ভাবনা নষ্ট হয়। কিন্তু মোলিনা দাবি করেন, তাদের পারফরম্যান্স ছিল সন্তোষজনক এবং এটি মরসুমের অন্যতম সেরা ম্যাচ ছিল। তার মতে, গোল না হওয়া সত্ত্বেও দলের খেলা ছিল যথেষ্ট ভালো এবং সুতরাং তিনি খুবই গর্বিত।
মোলিনা আরও বলেন, “এটা পরেই বললাম, আমি ছেলেদের খেলায় গর্বিত। আমরা চেষ্টা করেছি এবং অনেক ভালো সুযোগ তৈরি করেছিলাম। গোল না আসলেও পারফরম্যান্সে কোন কমতি ছিল না। আমি নিশ্চিত পরবর্তী ম্যাচে আমরা সুযোগ পাবো এবং গোলও করবো।” জামশেদপুর ম্যাচে যেসব সুযোগ তারা নষ্ট করেছে, সেগুলো নিয়ে মোলিনা একেবারেই চিন্তিত নন। তার মতে, দলের কাছে যদি আরও সুযোগ আসে, তা হলে গোল আসবে এবং সবকিছু ঠিকঠাক হবে।
তবে, ক্লান্তি বিষয়টি নিয়ে অনেকেই আলোচনা করছেন। জামশেদপুরের ম্যাচের শেষে কিছু ফুটবলারকে ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। এ বিষয়ে মোলিনার দৃষ্টিকোণ অনেকটাই ভিন্ন। তিনি এক কথায় বলেন, “আমার দলের খেলোয়াড়েরা সবচেয়ে বেশি গোল করেছে। তাই ক্লান্তির কথা বলার কোনো মানে নেই। শুধু আমাদের দলের খেলোয়াড়রা ক্লান্ত হবে কেন? চেন্নাইয়ের গরমের মধ্যে দুটো দলকেই খেলতে হবে, শুধু আমরা ক্লান্ত হব না।” তিনি এও বলেন, কিছু খেলোয়াড় হয়তো ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে, কিন্তু পুরো দল একসাথে কখনও ক্লান্ত হবে না। মোলিনা অবশ্য নিজের দলের ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন এবং চিন্তা করছেন না।
চেন্নাইয়ের গরম আবহাওয়ায় ম্যাচ খেলা যে আরও কঠিন হতে পারে, এ বিষয়ে কিছুটা উদ্বেগ থাকলেও, মোলিনা নিশ্চিত যে তার দল সঠিক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামবে। তিনি উল্লেখ করেন, “এখানে প্রস্তুতি সময় খুব কম থাকে। তবে যে কাজটা করতে হবে, সেটা জানি। আমরা সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব এবং চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে আমাদের সেরা পারফরম্যান্স দেখানোর চেষ্টা করব।” এর মানে, তিনি একদিনের প্রস্তুতির ওপর নির্ভর না করে, তার দলের জন্য প্রয়োজনীয় পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নিয়ে খোলামেলা পরিকল্পনা করেছেন।
সাহাল সামাদ ও আশিক কুরুনিয়নের ফিটনেস নিয়ে কিছু অনিশ্চয়তা রয়েছে। সাহাল সামাদ চেন্নাইয়ের ম্যাচে খেলার মতো প্রস্তুত হবেন কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মোলিনা অবশ্য আশা করছেন, রবিবারের অনুশীলনের পর তারা দুজনই খেলার জন্য প্রস্তুত হতে পারবেন। তবে, যেহেতু খুব কম সময় হাতে রয়েছে, তাই মোলিনার জন্য এটি একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
এছাড়া, মোহনবাগান কোচ জানান যে, একদিনের প্রস্তুতি কখনওই যথেষ্ট নয়। কিন্তু এর পরেও, তিনি বিশ্বাস করেন যে তার দল চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে ভাল খেলতে সক্ষম হবে। “পাঁচ-ছ’দিন অনুশীলন করার সুযোগ থাকলে আরও ভাল হত, কিন্তু মাঝে মাঝে এমন পরিস্থিতি আসে। তবে তেমন সমস্যা হবে না, কারণ আমরা জানি কীভাবে খেলতে হবে,” মোলিনা বলেন। পরবর্তী ম্যাচে মোহনবাগানকে অবশ্যই পুরোপুরি মনোযোগী হতে হবে, কারণ চেন্নাইয়ের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবা অসম্ভব।