ডুরান্ড কাপে (Durand Cup 2025) এবারের কলকাতা ডার্বি (Kolkata Derby) কোয়ার্টার ফাইনালেই। আর সেই হাইভোল্টেজ ম্যাচকে ঘিরে উত্তেজনার পারদ ছুঁয়েছে চরমে। একদিকে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট (Mohun Bagan SG), অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। রবিবাসরীয় লড়াইয়ে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মুখোমুখি হতে চলেছে যুবভারতীতে। কোয়ার্টার ফাইনালে দুই প্রধানের এই মহারণ দেখতে ইতিমধ্যেই হাহাকার পড়ে গিয়েছে টিকিটের জন্য। সমর্থকদের উন্মাদনা, ক্লাব চত্বরে রাত জাগা, আর প্রস্তুতি। কার্যত সব মিলিয়ে ডার্বির আবহ সম্পূর্ণ।
গতবার ডুরান্ড কাপে দুই প্রধানের মুখোমুখি লড়াই হয়নি। এবারে সেই আক্ষেপ ঘোচাতে চলেছে ভারতীয় ফুটবলের প্রাচীনতম প্রতিযোগিতায়। তবে এই ম্যাচ শুধুমাত্র গৌরবের নয়, বরং ঘরের মাঠে মরসুমের প্রথম ট্রফির দিকে এগোনোর বড় সুযোগও। আর সেই কারণেই কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না দুই শিবিরের কেউই।
মোহনবাগান কোচ হোসে মোলিনা (Jose Molina) ডার্বির আগে সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, “আমরা জানি সমর্থকদের প্রত্যাশা কতটা। আমরা আমাদের সেরাটা দেব, সেটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে আমাদের প্রস্তুতি সময় খুবই কম ছিল। মাত্র ১৫-১৬ দিনের ট্রেনিং। তাও ছেলেরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছে নিজেদের তৈরি করতে।”
চোট সমস্যাও ভাবাচ্ছে সবুজ-মেরুন কোচিং স্টাফকে। হোসে মোলিনা বলেন, “মনবীর সিং, কিয়ান নাসিরি ও শুভাশীষ বোস এখন সম্পূর্ণ ফিট নন। তাঁরা খেলবেন না কোয়ার্টার ফাইনালে। তবে আশার খবর, সুহেল এবং টম অলড্রেড পুরোপুরি ফিট হয়ে গিয়েছেন এবং ম্যাচের জন্য প্রস্তুত।” পাশাপাশি দিমিত্রি প্রসঙ্গে কোচ বলেন, “অন্তত কয়েক মিনিটের জন্য ওকে খেলানো যাবে।”
পিতৃবিয়োগের কারণে দেশে ফিরে গিয়েছেন লাল-হলুদের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার রশিদ। এই প্রসঙ্গে বাগান কোচ বলেন, “আমরা প্রি-সিজনে রয়েছি। আমাদের সেরা ফর্মে এখনও পৌঁছানো হয়নি। তবু, আমরা লড়ব, জয়ের জন্যই মাঠে নামব। ইস্টবেঙ্গল শক্তিশালী দল, ওদের পাঁচ বিদেশি ফুটবলার রয়েছে। রাশিদ না খেললেও অন্য ভালো খেলোয়াড় রয়েছে ওদের। কোনও দলকেই হালকাভাবে নেওয়া যাচ্ছে না।”
মোলিনা স্বীকার করেছেন, “ইস্টবেঙ্গল গতবারের তুলনায় এই মরসুমে অনেক ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে। ওদের কোচ ভাল, দলে প্রতিভাবান ফুটবলার রয়েছে। তবে, গতবারও একই রকম ছিল, শুধু ফলটা ওদের পক্ষে যায়নি।” এই সিজনে ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্বে রয়েছেন স্প্যানিস কোচ অস্কার ব্রুজো। তিনিও আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, “আমরা জানি মোহনবাগানের দুর্বলতা কোথায়।” এই মন্তব্যে অবশ্য হাসিমুখেই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মোলিনা। তিনি বলেন, “ভাল কোচরা প্রতিপক্ষকে বিশ্লেষণ করে। ও ঠিকই বলেছে, আমাদের দুর্বলতা রয়েছে। কিন্তু শক্তি তার চেয়েও বেশি। আমরা লিগ ও কাপ জিতেছি কারণ আমাদের দলে সামর্থ্য রয়েছে।”
ডার্বি ম্যাচকে শুধু ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল বললে ভুল হবে। কারণ সেপ্টেম্বরেই এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মোহনবাগানের ম্যাচ। তার আগে যত বেশি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলা যাবে, ততই বাগান শিবিরের প্রস্তুতি উন্নত হবে। কোচ মোলিনার কথায়, “এই ম্যাচ আমাদের তিনভাবে সাহায্য করবে। এটা ডার্বি, এটা ট্রফির পথে এক ধাপ এগনোর সুযোগ এবং একইসঙ্গে এএফসির আগে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর বড় মঞ্চ।”