মোহনবাগান (Mohun Bagan) ক্লাব নির্বাচন (Election) নিয়ে ক্রমেই উত্তেজনা বাড়ছে সদস্যদের মধ্যে। বহু প্রতীক্ষিত নির্বাচনের দিনক্ষণ ও মনোনয়নের সময়সূচি চূড়ান্ত হওয়ার কথা থাকলেও, আপাতত সেই অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হচ্ছে। নির্বাচন যাতে একেবারে ত্রুটিমুক্ত হয়, সেই লক্ষ্যেই সময় নিচ্ছে নির্বাচন বোর্ড। ধীরে চলো নীতিতে এগোচ্ছে তারা। নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায় শনিবার রাতে স্পষ্ট জানিয়েছেন, মনোনয়ন জমার দিনক্ষণ জানাতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।
এর আগে তিনি বলেছিলেন, শনিবার চূড়ান্ত দিন ঘোষণা করা হবে এবং সোমবার থেকেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে। এই ঘোষণার অপেক্ষায় ছিলেন ক্লাব সদস্যরা। কিন্তু শনিবার রাতে সেই প্রত্যাশা পূরণ হল না। বিচারপতি রায় জানিয়ে দেন, নির্বাচন সংক্রান্ত সমস্ত কাজকর্ম নির্ভুল ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতেই তারা একটু বেশি সময় নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, “আমরা চাই এমন একটি নির্বাচন হোক, যেখানে কোনও প্রশ্ন না ওঠে। মনোনয়ন পত্র, ব্যালট পেপার, নিরাপত্তা — সব কিছুতেই খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। কোনও ত্রুটি যেন না থাকে, সেটাই লক্ষ্য। এই কারণেই সিদ্ধান্ত নিতে একটু সময় লাগছে।”
নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচন বোর্ডের সদস্যরা চাইছেন ক্লাব প্রাঙ্গণের বাইরে বড় কোনো ভেন্যুতে ভোটগ্রহণ করা হোক, যাতে বেশি সংখ্যক সদস্যদের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকে এবং নিরাপত্তা নিয়েও আশ্বস্ত থাকা যায়। প্রবীণ সদস্যদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখার বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। সুতরাং, সবদিক বিবেচনা করে এবার একটু সময় নিয়েই এগোতে চাইছে বোর্ড।
এর আগে বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছিল, ২৭ মে থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়ে তা চলবে ২ জুন পর্যন্ত, এবং ৩ জুন মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। যদিও এ তথ্য ছিল সম্ভাব্য পরিকল্পনা, চূড়ান্ত নয়। এখন সেই সম্ভাব্য দিনও পিছিয়ে যেতে পারে। এর ফলে অনেকেই ধারণা করছেন যে পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সময়সীমাই হয়তো পুনর্গঠিত হবে।
এদিকে নির্বাচন ঘিরে যে উত্তেজনা, তার মধ্যেও মোহনবাগান ক্লাবের ক্রীড়া সাফল্য এক অন্যরকম ইতিবাচক আবহ তৈরি করছে। এদিন দুপুরে ক্লাব প্রাঙ্গণে পতাকা উত্তোলন করা হয় জেসি মুখার্জি ট্রফি সহ সিএবি অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৩ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উপলক্ষে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্লাব সচিব দেবাশিস দত্ত, সফল ক্রিকেটাররা এবং অন্যান্য কর্তারা।
সদস্যদের অনেকে যদিও হতাশ হয়েছেন শনিবার ঘোষণার অভাবে, তবে বোর্ডের বক্তব্য অনুযায়ী, এই বিলম্ব একটি নিখুঁত নির্বাচনের প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবেই দেখা উচিত। নির্বাচন বোর্ডের পরবর্তী বৈঠকে সমস্ত দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। আপাতত ক্লাব সদস্যরা সেই ঘোষণার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন।
সব মিলিয়ে মোহনবাগান নির্বাচন এখন সময়ের অপেক্ষা। তবে বোর্ডের সদিচ্ছা এবং নির্ভুল নির্বাচনের প্রচেষ্টা যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে মনোনয়ন থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত সমস্ত সূচি। তার পরই স্পষ্ট হবে, কোন পথ ধরে এগোচ্ছে মোহনবাগান ক্লাবের আগামী প্রশাসনিক ভবিষ্যৎ।