সবুজ-মেরুন শিবিরে নির্বাচনী হাওয়া, সৃঞ্জয় বোসকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর বাগান!

মোহনবাগান ক্লাবের (Mohun Bagan) আসন্ন নির্বাচন (Election) ঘিরে উত্তাল সবুজ-মেরুন জগৎ। একদিকে আবেগ, অন্যদিকে ইতিহাস, সব মিলিয়ে নির্বাচনী প্রাঙ্গণ যেন উৎসবে পরিণত হয়েছে। আর এই…

Mohun Bagan Election campaign of Srinjoy Bose

মোহনবাগান ক্লাবের (Mohun Bagan) আসন্ন নির্বাচন (Election) ঘিরে উত্তাল সবুজ-মেরুন জগৎ। একদিকে আবেগ, অন্যদিকে ইতিহাস, সব মিলিয়ে নির্বাচনী প্রাঙ্গণ যেন উৎসবে পরিণত হয়েছে। আর এই উৎসবের কেন্দ্রবিন্দুতে এখন একটাই নাম—সৃঞ্জয় বোস (Srinjoy Bose)। উত্তর কলকাতা থেকে হাওড়া, সর্বত্র তার নির্বাচনী প্রচারে যেন গর্জে উঠছে ‘তোমাকে চাই’ স্লোগান।

রবিবার সকালে উত্তর কলকাতার পাইকপাড়ায় অবস্থিত মোহিত মঞ্চে সৃঞ্জয় বোসের নির্বাচনী সভা ছিল দেখার মতো। মঞ্চে পা রেখেই তাঁকে ঘিরে ধরেন কয়েকশো সবুজ-মেরুন সদস্য। একবাক্যে সকলেই ‘তোমাকে চাই’ স্লোগানে ফেটে পড়েন। অডিটোরিয়াম উপচে পড়া ভিড়ে ঠাসা। এমনকি বাইরে অনেককেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

   

এই সভায় সৃঞ্জয়ের পাশে ছিলেন মোহনবাগানের প্রাক্তন ফুটবল সচিব শম্ভু ঘোষ, শিশির ঘোষ, শিলটন পাল। শুধু খেলার জগতই নয়, উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনেরা—অভিনেতা জগন্নাথ বসু, ঊর্মিমালা বসু এবং সংগীতশিল্পী নচিকেতা। তাঁদের উপস্থিতি প্রমাণ করে দিয়েছে, মোহনবাগান আজ আর শুধুমাত্র একটি ক্লাব নয়, এটি একটি আবেগ, একটি পারিবারিক বন্ধন।

সভায় উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী সেনবাড়ির বংশধর সুব্রত সেন, সৃঞ্জয় বোসের হাতে মোহনবাগানের ইতিহাস নিয়ে লেখা একটি বই তুলে দেন। তিনি বলেন, “এই ক্লাব কেবল খেলা নয়, এটি উত্তর কলকাতার গর্ব, বাংলার সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক।”

সকালের পর বিকেলে হাওড়ার কদমতলা সুর ব্যাঙ্কোয়েটে আয়োজিত হয় আরেকটি নির্বাচনী সভা। হাওড়া তো আবার টুটু বোস ও সৃঞ্জয় বোসের আদি বাড়ি—তাই এই সভাতেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মঞ্চে ছিলেন হাওড়ার মন্ত্রী অরূপ রায়, প্রাক্তন ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, শিশির ঘোষ, বলাই দে, হাওড়া পুরসভার প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী এবং মোহনবাগান ক্লাবের সহ-সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে।

Advertisements

এই সভাতেই সৃঞ্জয় বোস বলেন, “মোহনবাগান একটা পরিবার। ভোট আসবে, যাবে। কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়—আমরা পারস্পরিক সৌহার্দ্য রক্ষা করেই নির্বাচন করব। তবে কেউ যদি ভাবে, ভদ্রতা দুর্বলতা, তাহলে সে ভুল ভাববে। বাবা শিখিয়েছেন—ইট ছুড়লে পাটকেল দিতে হয়।”

হাওড়ায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “আজকেই ইচ্ছে করছিল সৃঞ্জয়কে সচিব ঘোষণা করে দিই। কিন্তু ওর অনুরোধে তা করিনি। গোটা হাওড়া জুড়ে আমরা ওর সমর্থনে প্রচার চালাব। হাওড়ার মানুষ জানেন, টুটু বোসদের অবদান কী ছিল ক্লাবের জন্য।”

সভার সবচেয়ে আবেগঘন মুহূর্তটি আসে যখন অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাক্তন ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বোস পরিবার মোহনবাগানের আত্মা। আজ ক্লাবের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য সৃঞ্জয় বোস অপরিহার্য। ভোটে আমরা জিতবই।”

সব মিলিয়ে রবিবারের দুই সভা যেন বুঝিয়ে দিল, মোহনবাগানের ভবিষ্যৎ ঘিরে সাধারণ সদস্য ও সমর্থকদের মধ্যে কতটা আশা, কতটা আবেগ জমে রয়েছে। সৃঞ্জয় বোসের নেতৃত্বে ক্লাবের নতুন দিগন্তের স্বপ্ন দেখছেন সকলে। রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক-খেলাধুলার বহু স্তরের মানুষ যেভাবে একত্রিত হয়ে এই প্রচারে সামিল হয়েছেন, তাতে এটা স্পষ্ট—মোহনবাগান শুধু একটি ক্লাব নয়, এটি একটি ঐতিহ্য, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রক্তে বইছে।