শেষ ভরসা মুখ্যমন্ত্রী! মরসুমের শুরুতেই পুরনো সমস্যায় জেরবার মহামেডান

কলকাতা ময়দানের ঐতিহ্যবাহী মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব (Mohammedan SC) আবারও গভীর আর্থিক সঙ্কটে (Money Problem) পড়েছে? সদ্য সমাপ্ত আইএসএল (ISL) ও সুপার কাপের (Super Cup) পরেও…

Mohammedan SC Club Supporters in ISL

কলকাতা ময়দানের ঐতিহ্যবাহী মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব (Mohammedan SC) আবারও গভীর আর্থিক সঙ্কটে (Money Problem) পড়েছে? সদ্য সমাপ্ত আইএসএল (ISL) ও সুপার কাপের (Super Cup) পরেও ক্লাবের ইনভেস্টর সমস্যা (Investor Problem) কাটেনি, বরং পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। ক্লাবের দুই ইনভেস্টর শ্রাচি ও বাঙ্কারহিলের মধ্যে চলা টানাপোড়েনের জেরে নতুন করে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। সেই সঙ্গে ফুটবলার ও কোচদের বকেয়া বেতন নিয়ে ক্লাবের প্রতি আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থা ফিফার নজর পড়েছে, যা সাদা-কালো জার্সির সম্মানহানির সমান।

মহামেডান কার্যকরী সভাপতি আমিরুদ্দিন ববি জানান, “আমরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। তাঁকে পুরো বিষয়টা জানাতে চাই, যাতে কোনওভাবে এই সঙ্কট থেকে ক্লাবকে উদ্ধার করা যায়।” তবে মুখ্যমন্ত্রীর সময় না পাওয়ায় এখনও কোনও বৈঠক সম্ভব হয়নি। আশা করা হচ্ছে, আগামী মাসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হবে।

   

ইংল্যান্ড সফরেই ইতি আইপিএল ২০২৫? আশার আলো দেখছে ক্রিকেটপ্রেমীরা

কিন্তু সমস্যার মূল কোথায়? মহামেডানের বর্তমান এই সংকটের কেন্দ্রে রয়েছে শেয়ার সংক্রান্ত জটিলতা। শ্রাচি সংস্থা প্রায় ১৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও ক্লাবের মালিকানার কোনও শেয়ার পায়নি বলে অভিযোগ করেছে। সেই কারণেই তারা অর্থসাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে। শ্রাচির এক কর্তা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমরা বিনিয়োগ করেছি কিন্তু মালিকানায় কোনও অংশ পাইনি। সুতরাং আমরা ফান্ডিং বন্ধ করেছি এবং প্রয়োজনে লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত চাইব।”

অন্যদিকে, ক্লাব কর্তারা দাবি করছেন, এই শেয়ার হস্তান্তরের দায়িত্ব ছিল আরেক ইনভেস্টর বাঙ্কারহিলের ওপর। কার্যকরী সভাপতি জানান, “আমরা ১ শতাংশ শেয়ার তুলে দিয়েছিলাম বাঙ্কারহিলকে। সেই শেয়ার থেকেই শ্রাচিকে ভাগ দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীপক সিংয়ের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।”

এই দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে ক্লাবের ভবিষ্যত ঝুঁকির মুখে। পুরনো খেলোয়াড়দের সাত মাসের বেতন বাকি। অনেক ফুটবলার ফিফার কাছে নালিশ করেছেন। তবে এত প্রতিকূলতার মধ্যেও ক্লাব কর্তারা কিছুটা হলেও নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে সুপার কাপের আগে কিছু অর্থ তুলে খেলোয়াড়দের পাঠিয়েছিলেন ভুবনেশ্বরে। সেসময় কিছু বকেয়া বেতন মিটিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—ফুটবলারদের পুরো বকেয়া টাকা কে দেবে?

নতুন ইনভেস্টরের খোঁজ চলছে। আমিরুদ্দিন ববি বলেন, “আমরা নতুন ইনভেস্টরের সঙ্গে কথা বলছি। কেউ যদি রাজি হয়, তবে তাকে বাঙ্কারহিলের সঙ্গে বসিয়ে বিষয়টি মিটমাট করানোর চেষ্টা করব।” কিন্তু এখনও কোনও নিশ্চিত চুক্তি হয়নি।

টেস্টে রোহিত অধ্যায় অতীত, ইংল্যান্ড সফরের নতুন নেতা খুঁজে পেল BCCI!

এই মুহূর্তে রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া সমাধানের রাস্তাও যেন বন্ধ হয়ে গেছে। ক্লাবের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট—মহামেডান স্পোর্টিং একটি আবেগ, একটি ইতিহাস। সেই ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে জরুরি ভিত্তিতে এই আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে হবে। একটি ক্লাবের অস্তিত্ব শুধু মাঠের পারফরম্যান্সে নয়, তার প্রশাসনিক ও আর্থিক কাঠামোর উপরও নির্ভর করে। মহামেডান স্পোর্টিং যদি এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে না পারে, তাহলে শুধু ক্লাব নয়, গোটা বাংলা ফুটবলই হারাবে এক গৌরবময় অধ্যায়।

Advertisements