বঙ্গ ক্রিকেটে শামির ম্যাজিক! কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা পাকা

সোমবার বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সাইয়েদ মুস্তাক আলি ট্রফির (Syed Mushtaq Ali Trophy) ম্যাচে বাংলার হয়ে ব্যাট ও বল হাতে অসাধারণ পারফরম্যান্স করলেন মোহাম্মদ…

Mohammed Shami Bengal cricket

short-samachar

সোমবার বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সাইয়েদ মুস্তাক আলি ট্রফির (Syed Mushtaq Ali Trophy) ম্যাচে বাংলার হয়ে ব্যাট ও বল হাতে অসাধারণ পারফরম্যান্স করলেন মোহাম্মদ শামি। তাঁর অলরাউন্ড নৈপুণ্যের সুবাদে চণ্ডীগড়ের বিপক্ষে ৩ রানের সংকীর্ণ ব্যবধানে জয়লাভ করে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল বাংলা। শামির সঙ্গে দুর্দান্ত ভূমিকা পালন করেন পেসার সায়ন ঘোষ, যিনি ৪ উইকেট শিকার করে চণ্ডীগড়ের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে দেন।

   

ব্যাট হাতে শামির দাপট
ব্যাটিংয়ে শুরুতে বড় স্কোরের ইঙ্গিত দিলেও মধ্যপর্বে উইকেট হারানোর ধাক্কায় চাপে পড়ে যায় বাংলা। ১৫৯/৯ স্কোরে পৌঁছানোর পেছনে বড় ভূমিকা পালন করেন মোহাম্মদ শামি। দশ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৭ বলের ঝোড়ো ইনিংসে ৩টি চার এবং ২টি ছক্কা মেরে অপরাজিত ৩২ রানের ইনিংস খেলেন শামি। এটি তাঁর টি-টোয়েন্টি কেরিয়ারের সর্বোচ্চ স্কোর।

বাংলার ইনিংসে করণ লালের ৩৩, ঋত্তিক চ্যাটার্জির ৩৮ এবং প্রদীপ্ত প্রামাণিকের মূল্যবান ৪০ রানের ইনিংস দলের স্কোরে বড় অবদান রাখে। কিন্তু শেষের দিকে শামির ক্যামিও ইনিংসই বাংলাকে লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেয়।

চণ্ডীগড়ের ইনিংসে শামির আগুনে বোলিং
পাল্টা ব্যাট করতে নেমে চণ্ডীগড়ের ইনিংসের শুরুতেই জোড়া ধাক্কা দেন মোহাম্মদ শামি। প্রথম ওভারেই আর্সলান খানকে গোল্ডেন ডাকের ফাঁদে ফেলে বাংলার পক্ষে ম্যাচের টোন সেট করেন তিনি। এরপর চণ্ডীগড়ের পক্ষে রাজ বাওয়ার ৩২ রানের ইনিংস কিছুটা লড়াই দিলেও দলের বাকিরা উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স দেখাতে ব্যর্থ হন।

শেষ দুই ওভারে যখন চণ্ডীগড়ের জয়ের জন্য ২০ রান প্রয়োজন ছিল, তখন শামি আবারও বল হাতে মাঠে নামেন। ডেথ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে নিজের স্পেল শেষ করেন তিনি। তাঁর বোলিং ফিগার ছিল ৩-০-১৩-১, যা দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

সায়ন ঘোষের জয়সূচক মুহূর্ত
শেষ ওভারে চণ্ডীগড়ের প্রয়োজন ছিল ৮ রান, হাতে ছিল ৩টি উইকেট। এই চরম মুহূর্তে বাংলার পেসার সায়ন ঘোষ নিখুঁত বোলিং করে দুই উইকেট শিকার করেন এবং দুটি ডট বল দেন। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৪ রান ডিফেন্ড করে দলকে ৩ রানের রোমাঞ্চকর জয় এনে দেন। ঘোষের বোলিং ফিগার ছিল ৪-০-২৮-৪।

বাংলার ভবিষ্যৎ আশা
জয়ের এই ধারাবাহিকতায় বাংলার কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের জন্য আত্মবিশ্বাস আরও বাড়লো। বিশেষ করে শামির মতো অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার এবং ঘোষের মতো উদীয়মান পেসারের পারফরম্যান্স বাংলার কোচ ও সমর্থকদের জন্য আশার আলো জ্বালিয়েছে।

জাতীয় দলে শামির প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা
শামির এই দুর্দান্ত ফর্ম জাতীয় দলেও তাঁর প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে। বর্তমানে বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে ভারতীয় দল। প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে পরাজয়ের পর অধিনায়ক রোহিত শর্মা পোস্ট-ম্যাচ প্রেস কনফারেন্সে জানান, শামির জন্য জাতীয় দলের দরজা এখনও খোলা।

মাঠের পারফরম্যান্স এবং অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে শামি যে দলের সম্পদ হতে পারেন, তা আরও একবার প্রমাণ করলেন এই ম্যাচে। বঙ্গ ক্রিকেটপ্রেমীরা এখন অপেক্ষায়, শামি আবারও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠ কাঁপাবেন।

বাংলার এই জয় দলকে শুধু কোয়ার্টার ফাইনালে তুলেছে তা নয়, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর করে তুলেছে। ব্যাট ও বল হাতে মোহাম্মদ শামির পারফরম্যান্স এবং সায়ন ঘোষের ম্যাচ উইনিং স্পেল নিশ্চয়ই পরবর্তী ম্যাচগুলোতেও বড় ভূমিকা পালন করবে। এবার বাংলার সামনে চ্যালেঞ্জ হলো এই ছন্দ ধরে রেখে ট্রফির দিকে এগিয়ে যাওয়া।