আইএসএল শিল্ড (ISL shield) জয়ের থেকে ঠিক এক পা পিছিয়ে রয়েছে মোহনবাগান (Mohun Bagan SG)। রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি তারা ওডিশা এফসি (Odisha FC) র বিরুদ্ধে মাঠে নামবে সল্টলেক স্টেডিয়াম, কলকাতায়। শুধু তিনটি পয়েন্ট পেলেই শিল্ড নিশ্চিত হয়ে যাবে বাগানের। নিজেদের সমর্থকদের সামনে এই চূড়ান্ত কাজটি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মোলিনা ( Jose Molina) শিবির।
মোহনবাগানের প্রধান কোচ হোসে মোলিনা তাদের উপর কোনো চাপ না থাকার কথা জানিয়েছেন এবং বলেছেন, “এটি আমাদের জন্য সেরা মুহূর্ত, কারণ আমরা এখন আগের সময়ের চেয়ে আরও কাছে। এখন আমাদের জন্য আত্মবিশ্বাসী বা বিশ্রাম নেওয়ার সময় নয়। শিল্ড আমাদের হাতের নাগালে, আমাদের যেতে হবে এবং সেটি অর্জন করতে হবে। আমরা ৯০ মিনিট ধরে খেলতে হবে, যেন জয় পেতে পারি।”
তিনি আরো বলেন, “এখন বিশ্রামের সময় নয়, বিশ্রাম তখনই হবে যখন আমাদের হাতে শিল্ড থাকবে। তখন হয়তো বিশ্রাম নেওয়া যাবে, তবে এখন নয়। আমি আমার দলের ওপর সবসময়ই বিশ্বাসী, তারা যে ভাবে খেলছে তাতে আমি আত্মবিশ্বাসী, কিন্তু এটি আত্মবিশ্বাসী হয়ে বসে থাকার সময় নয়। এই মনোভাব নেওয়ার সময় নয়।”
মোলিনার কাছে মোহনবাগানের এই মরসুমে এত শক্তিশালী পারফরম্যান্সের রহস্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছিলেন, “এখানে কোনো রহস্য নেই। এটি কঠোর পরিশ্রমের ফল। আমরা শুরু থেকেই কঠোর পরিশ্রম করেছি, প্রতিটি খেলোয়াড় শুরু থেকেই কাজ করছে। ক্লাবের সবাই, স্টাফ, ম্যানেজমেন্ট এবং মালিকরা আমাদের শুরু থেকেই সাহায্য করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “তাদের সব ধরনের সহায়তা আমাদের কাজে এসেছে, এবং তারপরই খেলোয়াড়দের মান গুরুত্বপূর্ণ। তবে, শুধুমাত্র মান থাকলেই চলবে না, যদি না কঠোর পরিশ্রম করা হয়। মানের পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রমও দরকার, আর সেটাই আমরা শুরু থেকেই করছি।”
কোচের মতে দলের সব খেলোয়াড়দের পরিচালনা করা কঠিন, তবে তিনি বলেন, “আমি সবসময় বলি, এখানে ম্যাচ জেতা খুবই কঠিন, কারণ প্রতিটি দলই শক্তিশালী। কিন্তু আমার কাজ হল আমার খেলোয়াড়দের সহায়তা করা, যাতে তারা নিজেদের সেরাটা দিতে পারে। আমি দলের অংশ হতে চাই, এটি আমার কাজের পদ্ধতি, আমি জানি না এটি সঠিক নাকি ভুল, তবে এটি আমার পথ।”
মোলিনা আরো বলেন, তাদের দলের ক্লিন শিট (১৩টি এখন পর্যন্ত) নিয়ে কোনো বিশেষ গর্ব নেই, বরং সেটি তাদের সাফল্যের একটি উপাদান হিসেবেই দেখেন তিনি। “অবশ্যই, ক্লিন শিট আমাদের ম্যাচ জেতার জন্য সহায়ক হয়েছে, তবে এটা একমাত্র কারণ নয়। আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কঠোর পরিশ্রম। আমাদের জন্য ডিফেন্স, আক্রমণ, ক্লিন শিট এবং গোল করা সবকিছুই গুরুত্বপূর্ণ। সবকিছুর মধ্যে সঠিক ভারসাম্য থাকতে হবে। শুরুতে আমরা সেই ভারসাম্য খুঁজে পেতে পারিনি, কিন্তু এখন সেটি পেয়েছি।”
মোহনবাগানের এই সফলতা শুধু ডিফেন্স-এর ফল নয় বরং পুরো দলের সমন্বয় ও কঠোর পরিশ্রমের ফল বলে জানিয়েছেন মোলিনা। তিনি বলেন, “আমরা এখন আনন্দিত, তবে পুরোপুরি আনন্দিত নই, কারণ এখনও আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। সেটাই আমরা চাই, আশা করি আগামীকাল কিছু ভিন্ন হবে।”
এখন সব দৃষ্টি মোহনবাগানের দিকে, যারা শিল্ড জয়ের জন্য প্রস্তুত এবং কেবল একটি জয়ের অপেক্ষায়। যদি তারা এই ম্যাচে সফল হয়, তবে এই ম্যাচটি হতে পারে কলকাতার ফুটবল ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।